এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :

চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক ছৈয়দুল আমিনের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে আটক হয়েছে ডজন মামলার জেলফেরত আসামি নুর মোহাম্মদ ওরফে মনিক্যা (৪৪)। আটক মনিক্যা একই ইউনিয়নের সওদাগর ঘোনা গ্রামের মৃত মোহাম্মদ পেঠানের ছেলে। আটক ব্যক্তি ইতোপুর্বে জোড়া হত্যা, ডাকাতিসহ দুই ডজন মামলায় ১৫ বছরের বেশি সময় সাজা ও কারাভোগ শেষে বর্তমানে জামিনে রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ওই কৃষকের গোয়াল থেকে তাকে আটক করে এলাকাবাসি চকরিয়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। এদিকে আক্রান্ত গৃহকর্তা ছৈয়দুল আমিন এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

চিরিঙ্গা ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি লিডার ছৈয়দুল আমিন (৪২) জানান, চিরিঙ্গা ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের বুড়িপুকুর মাতামুহুরী নদীর পাড়ের বাসিন্দা তিনি। কৃষি উর্বর এলাকার বাসিন্দা হবার সুবাদে তিনি আনসার-ভিডিপি’র চাকুরীর পাশাপাশি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহে গরু পালন করেন। ছোট বড় ৯ টি গরু রয়েছে তার। বিগত দেড় বছর আগে একলাখ টাকা মুল্যের একটি গাভী চুরি হয়। তারপর থেকে তিনি গরুর গোয়ালের কাছাকাছি ঘুমান। যাতে রাতভর গরুর ভালমন্দ দেখভাল করতে পারেন।

গৃহকর্তা ছৈয়দুল আমিন জানান, প্রতিদিনের মত রাতে ঘুমিয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার সময় গোয়ালে গরুর নড়াচড়া শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেলে তাঁর স্ত্রী জওশন আরা (৩৫) তাড়াতাড়ি উঠে বাড়ীর দরজা খুলে দেখতেই এক অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী তার মুখে সজোরে ঘুষি মারেন। ওইসময় ঘুষিতে তাঁর বাম চোখের নীচে আঘাত পেয়ে চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার চিৎকারে স্বামী সহ পরিবারের সদস্যরা দ্রুত চেতন হয়ে বাড়ী সংলগ্ন গোয়ালে অজ্ঞাত নামা ২ জন লোক দেখতে পান।

কৃষক ছৈয়দুল আমিন দ্রুত গোয়ালের দিকে যেতেই অজ্ঞাত নামা একজন লাটি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যেতেই আহত কৃষক আমিন অপর একজনকে পেছন থেকে ঝাপটে ধরেন। অনেক ধস্তাধস্তির পর একজন পালালেও অপর একজনকে ধরে রাখতে সক্ষম হন তিনি। এরই মধ্যে পাড়ার লোকজন জড়ো হলে দেখতে পান ধৃত ব্যক্তি একই ইউনিয়নের সওদাগরঘোনা এলাকার জেল ফেরত আসামি মনিক্যা ডাকাত। আটকের পর গোয়াল থেকে গরু চুরির উদ্দেশ্যে সেখানে আসে বলে স্বীকার করে মনিক্যা।

ছৈয়দুল আমিনের দাবি, রাতে ঘোয়ালঘরে পুরনো দাগী ডাকাত দেখে ভয় পেয়ে যায় তিনি ও পরিবারের লোকজন। তাই বিষয়টি তাৎক্ষনিক স্থানীয় চিরিঙ্গা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জসিম উদ্দিন বিএ, স্থানীয় ইউপি সদস্য রেজাউল করিম, আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার কে অবহিত করে সাহায্য চান।

এরপর রাতে ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন পরিষদের চৌকিদার আব্দুল জলিল কে পাঠিয়ে ধৃত গরুচোর মনিক্যাকে তার নিয়ন্ত্রনে নিয়ে চকরিয়া থানায় খবর দেন। ভোররাত চারটার দিকে চকরিয়া থানার এসআই অপু বড়ুয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ চৌকিদার ও গৃহস্থের হাত থেকে ধৃত মনিক্যা ডাকাতকে থানায় নিয়ে আসেন।