ডেস্ক নিউজ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমি তথাকথিত অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাব, মালয়েশিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখুন। কিভাবে দুর্নীতি করলে, জনগণের বাইরে গেলে, গণতন্ত্রের বাইরে চলে গেলে সকল শক্তি দিয়েও জনমতকে প্রতিহত করা যায় না। আজকে মালয়েশিয়া সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। শেষ চেষ্টাও করেছে শপথ না করানোর জন্য। ৫ ঘণ্টা মাহাতি দাঁড়িয়ে ছিলেন যে, এখান থেকে আমি শপথ নিয়েই যাব।’

শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়ার ছবি নিয়ে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্স সেন্টার।

রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়ার ৩৪ বছর উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফটো সাংবাদিক বাবুল তালুকদার।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রীর এই ৩৪ বছরের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর কাছে আহ্বান থাকবে আসুন আমরা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা এ ভয়াবহ দানব যে আমাদের লুট করে নিয়ে যাচ্ছে তাকে পরাজিত করি, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করি।’

বেগম খালেদা জিয়ার আত্মজীবনী লেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তার (খালেদা) ওপর বই লেখা হচ্ছে, তার আত্মজীবনী লেখা হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, সে আত্মজীবনীতে আমরা এমন কিছু জিনিস পাব, যা আমরা অনেকেই জানি না।’

তিনি বলেন, ‘আজকে কী নির্মমভাবে, নিষ্ঠুরভাবে আমাদের তথাকথিত সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী তিনি বারবার আমাদের নেত্রীকে খাটো করার চেষ্টা করেছেন। তিনি চেষ্টা করেছেন স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে ছোট করতে। তরুণ নেতা তারেক রহমানকে ছোট করার চেষ্টা করেছেন। তাদের এই ছোট করার মানসিকতা জনগণ মেনে নেবে না। তাদের নিজস্ব মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে বেরিয়ে আসবে।’

রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনকে কারাগারে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সম্ভবত তিনি (খালেদা জিয়া) একমাত্র ব্যক্তি যাকে হাইকোর্টে জামিন দেয়ার পরও তা স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্ট শুনানি করতে হচ্ছে। তাকে কারাগারে আটকে রেখে আবারও তারা (আওয়ামী লীগ) একদলীয় একটি নির্বাচন করার চক্রান্ত করছে।’

নির্বাচন কমিশনকে সরকার ধ্বংস করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খুলনায় প্রতিদিন বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি যারা নির্বাচনের এজেন্ট হবেন তাদেরকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। নেতাকর্মীরা নির্বাচনের প্রচারণার কাজ করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ পুলিশকে দিয়ে গোটা নির্বাচনী মাঠ দখল করে নিয়েছে। কালকেও (বৃহস্পতিবার) আমাদের প্রার্থী মঞ্জুর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন এত কিছুর পরও শেষ দিন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবেন এবং জয়লাভ করবেন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন মাঠে আছে পুলিশ। আজকে এ রাষ্ট্রকে শেখ হাসিনা পুরোপুরি অকার্যকর করে ফেলেছে। আইন-শৃঙ্খলা প্রশাসন শেষ হয়ে গেছে, মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, অনেক আছেন যাদের কথা বলতে ও লিখতে দেয়া হচ্ছে না। লিখছে বলা হচ্ছে চাকরি চলে যাবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপেদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা, ফরহাদ হোসেন আজাদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।