বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজার শহরে নষ্ট হয়ে যাওয়া ঈগলু ভ্যানিলা আইসক্রিম এবং মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রির অপরাধে ‘স্বাদ’ নামের ফাস্টফুড বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠান কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানকালে ‘স্বাদ’ নামের দোকানটির বেশকিছু মেয়াদোত্তীর্ণ খাবারও ধ্বংস করা হয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে একজন ক্রেতা শহরের লালদীঘির পাড়ের ‘স্বাদ’ নামের ফাষ্টফুডের দোকান থেকে ২০০ টাকা দামের ঈগলু ব্রান্ডের ভ্যানিলা নামের একটি আইসক্রিম নিয়ে যান। ক্রেতা বাসায় গিয়ে দেখেন এক লিটার ওজনের ‘ ভ্যানিলা আইসক্রিমটি’ নষ্ট হয়ে গেছে। মেসার্স আবদুল মোনেম এন্ড কোম্পানীর মত দেশের একটি নামিদামি বেভারেজ কম্পানীর প্রস্তুত করা ‘ঈগলু আইসক্রিমটি’র কৌটা খোলার পর পরই বিকট গন্ধ পাওয়া যায়।

অথচ কৌটায় মেয়াদের সময় রয়েছে আগামী অক্টোবর মাস পর্যন্ত। সন্দেহ করা হচ্ছে দোকানের ফ্রিজ থেকে নিয়ে কৌটার অর্ধেক আইসক্রিম খেয়ে পূণরায় কৌটা বন্ধ করে ফ্রিজে রাখা হয়। একারনেই আইসক্রিমের কৌটা খোলার পর গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তদুপরি এক লিটারের কৌটায় আইসক্রিম রয়েছে এক লিটারেরও মাত্র অর্ধেক পরিমাণ।

এরপর বৃহষ্পতিবার আইসক্রিম ক্রেতা ‘স্বাদ’ নামের মিষ্টির দোকানটিতে যান কৌটা সহ। পরে ওই ক্রেতা ভ্রাম্যমাণ আদালতের দ্বারস্থ হন। পরে সন্ধ্যা সাতটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে বেশকিছু নষ্ট হয়ে যাওয়া আইসক্রিমের বাক্স জব্দ করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, স্বাদের বেশির ভাগ আইসক্রিম নষ্ট ও মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ বেশকিছু ব্রেড ও দধি জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। তিনি আরও বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রির অপরাধে স্বাদের ম্যানেজার মোহাম্মদ সেলিমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ প্রসঙ্গে আইসক্রিমের স্থানীয় ডিলার সুইস কেকের আজিম উদ্দিন জানান-‘আসলে আমাদের সরবরাহ করা আইসক্রিম নষ্ট নয়। নষ্ট হচ্ছে মিষ্টির দোকানগুলোর ফ্রিজে অন্যান্য মালের সাথে আইসক্রিম রাখার কারনে। মিষ্টির দোকানগুলোতে ঈগলু কোম্পানীর দেয়া ফ্রিজে কেবল ঈগলু আইসক্রিম রাখার কথা কিন্তু বাস্তবে দৃশ্যপট ভিন্ন।’ এসব ফ্রিজে বাথডে কেক থেকে শুরু করে দই-দুধ সহ অন্যান্য মিষ্টান্ন রাখায় আইসক্রিম নষ্ট হচ্ছে। এম, এ মোনেম কোম্পানীর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক বিক্রয় ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান জানান, তাদের প্রডাক্ট নষ্ট হবার বিষয়টি তিনি দেখছেন।

প্রসঙ্গত এর সপ্তাহ খানেক আগে শহরের এন্ডারসন রোডের হোটেল গার্ডেনের সামনের দোকানের ঈগলু আইসক্রিমের ফ্রিজ থেকে অনুরুপ এক লিটার ওজনের আইসক্রিম বাসায় নিয়েও পাওয়া যায় কৌটায় মাত্র অর্ধেক পরিমাণের। ঈগলু ব্রান্ডের মত একটি নামি ব্র্যান্ডের আইসক্রিমের পরিণতি যদি এরকম হয় তাহলে দেশের নিরাপদ খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছুই নেই।