চকরিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে স্কুলশিক্ষক শফিকুল ইসলামের দাবি

আলীকদম থানা পুলিশের নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত স্কুল শিক্ষক শফিকুল ইসলামের পিঠ

এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :

আলীকদম উপজেলার আর্দশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অবাধ্য স্ত্রী জয়নব আরা বেগমের পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়ার জেরে স্বামী স্কুলশিক্ষক শফিকুল ইসলাম একের পর এক সাজানো মামলায় হয়রাণি ও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি স্ত্রীর দায়েরকৃত নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় তিনি আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে বান্দরবান চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে জামিনে আসলেও আলীকদম থানা পুলিশ বাদিপক্ষের অনৈতিক প্ররোচনায় স্কুলশিক্ষক শফিকুলকে আটক করে ফের থানায় আটকে শাররীকভাবে নির্যাতন করেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে চকরিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ তুলে ধরেছেন পুলিশি নির্যাতন ও মামলায় হয়রাণির শিকার আলীকদম উপজেলার থোয়াইচং হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম।

চকরিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ও স্ত্রী জয়নব আরা বেগম দুজনই শিক্ষক দম্পতি। তাদের সংসারে রয়েছে ১৪ বছরের একটি মেয়ে সন্তান। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্ত বিপত্তি ঘটে স্ত্রী জয়নব পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়লে। ইজ্জত রক্ষায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে এখন চরম বিপাকে পড়েছে স্বামী শফিক। স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিকরা পুলিশের সহায়তায় বর্তমানে একের পর এক সাজানো মামলায় আসামী করার পাশাপাশি তাকে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে তিনি বর্তমানে এলাকা ছাড়া।

লিখিত বক্তব্যে শিক্ষক শফিকুল ইসলাম দাবী করেন, আমি ও আমার ডিভোর্সি স্ত্রীর বাড়ী চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নে। দীর্ঘদিন পূর্বে আমার বাবা বান্দবানের আলীকদমে বাড়ী করার সুবাদে আমরা সেখানে বসবাস শুরু করি। আমি আলীকদম থোয়াইচিং হেডম্যানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আমার সাবেক স্ত্রী জয়নব আলীকদম আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে চাকুরী করি। ২০০১সালে ১৩ এপ্রিল আমাদের বিয়ে হয়। সংসারে রয়েছে এক কন্যা সন্তান।

তিনি দাবী করেন, স্ত্রী জয়নব আরা বেগম আলীকদমে গোপনে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। একদিন একব্যক্তির সাথে আপত্তিকর অবস্থায় স্ত্রীকে দেখার পর তিনি গত ২৫ জানুয়ারী জয়নবকে তালাকনামা পাঠান। ওই তালাকনামা চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ১৮ জানুয়ারী আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছে ১৪ ফেব্রুয়ারী। এরপর আলিকদম কাজি অফিস ১৩ ফেব্রুয়ারী তালকনামা গ্রহণ করে।

লিখিত অভিযোগে দাবী করা হয়, তালকনামা পাওয়ার পর জয়নব তার পরকীয়া প্রেমিকদের মাধ্যমে আলীকদম থানা পুলিশের সহায়তায় আলীকদমস্থ বাড়ী থেকে মা-বোনসহ শফিককে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বের করে দেয়া হয়। এরপরও পুলিশের মাধ্যমে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় শফিকের উপর। স্ত্রীর দায়ের করা দুটি মামলায় জামিনে থাকা স্বত্বেও থানায় ধরে নিয়ে বেদম প্রহার করে।ওই সময় স্থানীয় শিক্ষকরা তাকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে জয়নবের পরকীয়র প্রেমিকরা ওসির সহায়তায় বেশ কয়েকটি মামলায় জড়িয়ে দেয় শফিককে। ফলে মান ইজ্জতের পাশাপাশি জীবন বাঁচাতে বিদ্যালয় থেকে মেডিকেল ছুটি নিয়ে চকরিয়ার দাদার বাড়িতে অবস্থান করছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক শফিকুল ইসলাম কান্নজড়িত কন্ঠে বলেন, আলীকদম থানার ওসি নিরপেক্ষ থাকলে আমাকে হামলা-মামলা ও হুমকিসহ হয়রানীর শিকার হতে হতোনা। ওসি নিজেই অতিউৎসাহী হয়ে আমাকে এলাকা ছাড়া করতে জামিনে থাকার পরও গত ৬ মার্চ সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে আলীকদম খাদ্য গুদামের পাশ থেকে থানায় নিয়ে আটকে রেখে মারধর করে এবং মিথ্যা মামলায় আসামী করেছে। তাই ওসির অনৈতিক ভূমিকা বন্ধসহ তার শাস্তি চেয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে আবেদন করেছি। ইতিমধ্যে ওই আবেদনের তদন্তও শুরু হয়েছে। ##