আমরা যখন ছোট ছিলাম জীবনকে খুব সুন্দর মনে হতো। প্রতিটি কাজ খুব সহজ মনে হতো। কারণ তখন আমাদের প্রত্যাশা কম ছিল। জীবনের কঠিন রুপ কখনো দেখতে হয়নি । একটি জামা কিংবা খেলনা অথবা যেকোনো সামান্য উপহার পেলে আনন্দে সারা বাড়ি এক করে ফেলতাম। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে জীবনকে কঠিন থেকে কঠিনতর মনে হচ্ছে আমাদের কাছে। এর কারণ কী? এর কারণ হলো বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করছি, বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছি রোজ। পৃথিবীর কঠিন রুপ দেখতে হচ্ছে আমাদের। পৃথিবী থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পারছি প্রকৃত সুখী তখন হতে পারবো যখন আমরা প্রকৃত অর্থে সফল হবো। সফল হলে সবাই আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায় কিন্তু ব্যর্থ হলে দায়ভার একা বহন করতে হয়!
প্রশ্ন হলো, বড় হয়ে আমরা কেন ছোট বেলার মতো সুখী হতে পারি না? কারণ যখন ছোট ছিলাম তখন সমাজের অন্যান্যদের কথা চিন্তা না করে শুধু নিজের চাওয়া পাওয়ার কথা চিন্তা করতাম। নিজেকে কিভাবে ভালো রাখা যায়, সুখী করা যায় তা নিয়ে ভাবতাম। আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে সমাজের অন্যন্যদের কাছে নিজের সুখের চাবিটা ছেড়ে দিচ্ছি। তাহলে কিভাবে সুখী হবো! আপনি কি আপনার সুখের চাবি অন্যের কাছে সমর্পণ করেছেন? তাহলে আসুন জেনে নিই প্রকৃত সুখী হতে হলে যেসব জিনিস আজ থেকে বাদ দিতে হবে তা সম্পর্কে।
নিজের চাহিদা ও প্রয়োজনকে উপেক্ষা করা বন্ধ করুন
তাহলে আপনি কী করবেন?
ব্যক্তিভেদে প্রতিটি মানুষ ভিন্ন। মানুষের ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্ক্ষা ভিন্ন। প্রকৃত সুখী হতে হলে আপনি প্রথমে নিজের প্রত্যাশা, অভিরুচি ও কামনা- বাসনা সম্পর্কে নিশ্চিত হন। সময় নিয়ে ভাবুন আপনার অভিরুচি সম্পর্কে। মনের গভীরে বাজতে থাকা একান্ত ইচ্ছেগুলো, আবেগগুলোর কথা শুনুন। তারাই বলে দিবে সুখী হওয়ার জন্য কি করতে হবে।
নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা বন্ধ করুন
যেহেতু প্রতিটি ব্যক্তি আলাদা ও স্বতন্ত্র, সেহেতু নিজেকে কখনো অন্যের সাথে তুলনা করবেন না। অন্যের যেসব গুণাবলী ও দক্ষতা আছে আপনার সেটা নাও থাকতে পারে আবার আপনার যেসব দক্ষতা ও গুণাগুণ আছে তা অন্যদের নাও থাকতে পারে। তাই নিজের যতটুকু ক্ষমতা ও দক্ষতা আছে তা নিয়ে সুখী থাকুন। হতে পারে অন্যের তুলনায় আপনার একটু কম যোগ্যতা আছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে হতাশ না হয়ে জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য যুদ্ধে লেগে পড়ুন। আপনার অদম্য ইচ্ছা, প্রচেষ্টা একদিন আপনাকে সফল করে তুলবে।
তাহলে আপনার কি করা উচিত ভেবেছেন কি?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় না করে অর্থকরী কাজে সময় ব্যয় করুন। এমন কাজ করুন যে কাজগুলো করলে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, অর্থ রোজগার হবে। ভার্চুয়াল জীবনকে আমরা অনেক সুন্দর ভাবলেও আদতে তা সুন্দর হয় না। তাই ভার্চুয়াল জীবন থেকে বাস্তবিক জীবনে বেশী সময় ব্যয় করুন। অন্যের সমালোচনা না করে কিংবা নিজেকে নিয়ে হতাশ না হয়ে কাজে মনোনিবেশ করুন। নিজের ছোট ছোট সাফল্যকে উপভোগ করুন। অন্যরা কী ভাবছে তা নিয়ে অযথা চিন্তা করা বাদ দিন।
আপনার ভয়কে রোধ করুন
ভয়কে যেভাবে জয় করবেন
প্রথমে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন। তারপর মাথায় রাখুন আপনি পৃথিবীর সবার কাছে ভালো হতে পারবেন না। পৃথিবীর সবাই আপনাকে ভালবাসবে না। তাই কখনো কখনো না বলতে শিখুন। যা আপনি করতে চান না, আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে যেসব কাজ যায়না সেসব কাজ করবেন না। চক্ষুলজ্জা বা লোকলজ্জার ভয়ে কিছু করবেন না। বরং আপনার দৃষ্টিতে যা যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য মনে হবে তা করুন। তাহলে আপনি সুখী হতে পারবেন।
ভুল করলে অনুশোচনা করা থেকে বিরত থাকুন
তাহলে আপনার কী করা উচিত?
আপনার যখন ভুল হবে তখন মন খারাপ করে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকবেন না। ভুল হয়েছে তাতে কী? ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার চেষ্টা করুন। বার বার একই ভুল যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
নিজের সুখকে অন্যের হাতে বলি করবেন না
সুখী হওয়ার অন্যতম উপায় হল নিজেকে ভালবাসা। আপনি নিজে যদি নিজেকে ভালো না বাসেন তাহলে কে আপনাকে ভালবাসবে? সুখ ভেতর থেকে অনুভব করার বিষয়। আপনি যদি নিজেকে নিয়ে সুখী না থাকেন তাহলে কেউ আপনাকে সুখী করতে পারবেনা।
তাহলে এখন কী করবেন?
নিজের জন্য আলাদা সময় নিন। নিজেকে নিজে সময় দিন। নিজস্ব চিন্তা, দর্শনকে প্রাধান্য দিন। নিজের শরীরের যত্ন নিন। ঠিক যেমনভাবে চলতে ইচ্ছে করে, তেমনভাবে চলুন। যেমন পোশাক পরতে ইচ্ছে করে এবং তেমন পোশাক পরিধান করুন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।