এম,ডি, ম্যাক্স :

তার পুরু নাম চ্যাড বেঞ্জামিন স্টযফুস, কাজ করেন একটি কন্স্রাকশন ফার্মে , এসেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা থেকে।

বর্তমানে তাকে নিয়ে বালুখালির ৮ নং ক্যাম্পের ইস্টজোনে হৈচৈ, কেননা এই অক্লান্ত পরিশ্রমী ২৩ বছরের মার্কিন যুবক অবিশ্বাস্য সব কাজ করছেন রোহিঙ্গাদের সেবায় এই ক্যাম্পে।

কক্সবাজারের অন্যতম বেসরকারি সংস্থা ‘পালস’ এর সাথে যৌথ ভাবে ‘ওয়াশ এর কাজ করছেন তার সংস্থা পি,সি,সি,আর ( plain compassion crisis response).

তিনি প্রায় একাই প্রতিদিন মেরামত করে ফেলছেন একেকটি নষ্ট হয়ে যাওয়া সব ডিপ টিউবওয়েল, অপাংক্তেয় হয়ে পরা সব নলকূপ তিনি নিজেই সব মেরামত করছেন তার দল নিয়ে।

একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে তার এই ফিল্ডে তেমন অভিজ্ঞাতা থাকার কথা নয়, কিন্তু প্রথম দিন আসার পর তিনি একটি নষ্ট হওয়া নলকূপ ফিক্স করতে বললেন তার কন্ট্রাক্টরকে, শুধুমাত্র এতটুকু এর পর থেকে আর থামার নাম নেই চ্যাডের, একেকটি নলকূপ পুনরায় অপারেশনাল করতে চ্যাডের লাগছে মাত্র ৩০ মিনিট, সাথে সাথে পাচ্ছেন পানি মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সব রোহিঙ্গারা।

শুধু তা নয়, পানি নিতে আসা রোহিঙ্গাদের লম্বা লাইনে দাড়ানো সবাইকে কলসি ছেপে দিচ্ছেন ঘন্টার পর ঘণ্টা।

একটি নলকূপ ঠিক করে দৌড় দিচ্ছেন আরেকটিতে।

প্রতিদিন গড়ে ৪ টি করে নলকূপ মেরামত করে তা পানি পাওয়ার উপযুক্ত কর তুলছেন চ্যাড সাথে তার দল, কিছু স্থানীয় ছেলে আর কিছু রোহিঙ্গা কন্সট্রাকশন ওয়ার্কার।

কিছু নলকূপ মিস্ত্রিদের গাফিলতি আর অসততার কারনে এই নলকূপগুলো কিছুদিন পর পরই নষ্ট হয়ে যায় ফলে প্রয়োজনের তুলনায় পানি পাচ্ছেননা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়, এতে অন্তত এই ৮ নং ক্যাম্পে নায়কের ভুমিকা পালন করছেন চ্যাড।

যে সমস্ত নলকূপের যন্ত্রপাতি খরচ পরে তা তার নিজের পকেট থেকেই দিচ্ছেন চ্যাড আর নিজেই বহন করে তা পাহাড়ের উপর তুলছেন তিনি, ক্লান্তির কোন শেষ নেই তার, তার দলের কাউকে বসা থাকতে দেখলেই মুছকি হেসে তার নিজের কথা মনে করিয়ে দেন চ্যাড।

বাসায় ফিরে এসেও ফুরসত নেই তার, কমপক্ষে ২০/২৫ টি ফোন আসে তার কাছে, কোন ব্লকে কোন নলকূপ কাজ করছেনা তার খবরাখবর, বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল চ্যাড, তাই দ্রুত কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরেন তিনি ঠিক ৫ টা আগে, এতে সময় তেমন পাওয়া যায়না বলেই আর যত দ্রুত সম্ভব ক্যাম্পে যেতে যাতায়াত সংক্ষিপ্ত করতে কক্সবাজার শহর ছেড়ে থাকছেন কোর্ট বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে।

স্থানীয় জনগণের রোহিঙ্গাদের প্রতি প্রথমদিককার সাহায্য করার কথা শুনে খুবি বিস্মিত হন চ্যাড, তিনি চান বাংলাদেশের জন্যে কিছু করতে । তাদের দলনেতা শন জিমারম্যান বলেন, আমরা খুবই ছোট একটি এন, জি,ও, কেননা আমাদের নেই কোন বিলাশবহুল গাড়ী বা বাড়ি, নেই কোন শীতাতপ নিয়ন্ত্রীত কক্ষ, নেই কোন উচ্চ বেতনধারী কেউ, এখানে সবাই নিজের টাকায় এসব মানবতার কাজ করছেন। তবে তিনি ও চান যাতে রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যেতে পারেন এবং তাদের অধিকার ফিরে পান।