বিশেষ প্রতিবেদক :

কক্সবাজার শহরের বাসটার্মিনাল সংলগ্ন পশ্চিম লারপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি করা না হলে মসজিদের নতুন ভবন নির্মান করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন খোদ ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল হোসেন। এমনকি মসজিদের নতুন ভবন নির্মাণের টাকাও তার ব্যাংক হিসাবে জমা দিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। আর মসজিদ নিয়ে ইউপি মেম্বারের এমন ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন মসজিদ পরিচালনা কমিটি, সমাজ কমিটি ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও সমাজ কমিটির নেতৃবৃন্ধ জানান, ১৯৬৩ সালে কক্সবাজার বাসটার্মিনাল সংলগ্ন পশ্চিম লারপাড়া জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠা। বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ও ব্যস্ততম এলাকা হওয়ায় মসজিদটির গুরুত্বও অনেক। কিন্তু অর্ধশত বছরেরও বেশি সময় মসজিদটির বয়স হলেও কার্যত তেমন উন্নয়ন হয়নি। অথচ প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরেই আশ-পাশের অনেক মসজিদে পাকা ভবন হয়েছে। মসজিদ কমিটি, সমাজ কমিটি ও স্থানীয় লোকজনের চেষ্টায় সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থা প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদটি পাকা ভবন করে দেয়ার সম্মতি দিয়েছে। আর এ কথা জানতে পেরে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল হোসেন তাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। তিনি এলাকায় ঘোষনা দিয়ে বলেন, তাকে মসজিদ কমিটির সভাপতি করতে হবে এবং মসজিদ নির্মাণের দায়িত্বও তাকে দিতে হবে। তার শর্তে রাজি না হলে কাউকে মসজিদের পাকা ভবন নির্মাণ করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষনা দেন। এক পর্যায়ে তিনি মসজিদ নির্মাণে এগিয়ে আসা বেসরকারি সংস্থার এক প্রতিনিধিকেও হুমকি দিয়েছেন। মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে খোদ স্থানীয় ইউপি মেম্বারের এমন কর্মকান্ডে হতবাক হয়ে পড়েন এলাকার মুরব্বী থেকে শুরু করে ধর্মপ্রান মুসল্লিরা। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। এলাকাবাসী ইউপি মেম্বার আবুল হোসেনের মসজিদের বিরুদ্ধে অবস্থানের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে যে কোন মূল্যে মসজিদ নির্মাণের ঘোষনা দিয়েছেন পশ্চিম লারপাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি মোক্তার আহমদ, সহ-সভাপতি লাল মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সেনায়েত আলী, সদস্য আবদুশ শুক্কুর, জালাল আহমদ, আবদুল গফুর, পশ্চিম লারপাড়া মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল বশর, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, অর্থ সম্পাদক মৌং আবুল বশর আরমান, সদস্য মোহাম্মদ ইসমাঈল, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফিরোজসহ কয়েক’শ এলাকাবাসী। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের স্থানীয় মেম্বার আবুল হোসেন বলেন, ‘মসজিদটি সংস্থার মাধ্যমে নির্মাণের জন্য আমিই ঘোষনা দিয়েছি। আমি টাকাও দিয়েছি। এখন আমাকে ছাড়াই সংস্থার সাথে সমাজ ও মসজিদ কমিটির লোকজন যোগাযোগ রাখছে। অথচ সংস্থার বিদেশের প্রতিনিধি আমাকেই ফোন করে।’ মসজিদ কমিটির সভাপতি না করলে মসজিদ হতে না দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি মসজিদ হওয়ার পক্ষে। এটি নিয়ে এখন দ্বন্ধ শুরু হয়েছে। আমি এসব দ্বন্ধের মধ্যে নেই। এছাড়া আমার এসব কাজে সময়ও নেই।’