জাগোনিউজ : চট্টগ্রামের পতেঙ্গার কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে নগরীর সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া আমিনের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ ধারণা করছে প্রেমের হতাশা থেকে সে হয়তো আত্মহত্যা করেছে।

তাসফিয়ার ‘প্রেমিক’ আদনান মির্জাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ, ভিডিও ফুটেজ, সৈকতে স্থানীয়দের সঙ্গে কথোপকথন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন এবং সর্বোপরি আদনানের কল লোকেশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে এমন ধারণা করছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এরপরও পারিপার্শ্বিক আলামত, আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত এটি হত্যাকাণ্ড না আত্মহত্যা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না পুলিশ। তবে প্রেমঘটিত কারণেই তাসফিয়ার মৃত্যু সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (বন্দর) আরেফিন জুয়েল জাগোনিউজকে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে এটাকে হত্যা নয়, আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। হয়তো প্রেমের স্বপ্নভঙ্গের হতাশা থেকে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আবেগের বশে পতেঙ্গা সৈকতে গিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রেমিকের সঙ্গে প্রথম ডেটিংয়ে তার স্বপ্ন হয়তো পূরণ হয়নি। এ ছাড়া পরিবার থেকেও তাদের প্রেম নিয়ে বারণ ছিল। এরপরও প্রথম ডেটিংয়ে তারা বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে সিআরবি যায়। সেখান থেকে স্টেডিয়াম সংলগ্ন গ্রিডিগার্টস রেস্টুরেন্টে বসে সেখানেও কিছু খায়নি তারা। পরে দু’জন সিএনজি অটোরিকশা করে গোলপাহাড় মোড়ের চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে যায়। সেখান থেকে পরে দু’জন দুটি সিএনজিতে করে চলে যায়।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে গোলপাহাড়ের মোড়ে অবস্থিত রেস্টুরেন্ট চায়না গ্রিল থেকে সিসিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা হয়। ওই রেস্টুরেন্ট থেকে তাসফিয়া ও আদনানকে একসঙ্গে বের হতে দেখা যায়। এ সময় আদনানকে বিল দিতেও দেখা যায়।

চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে প্রবেশ করে তাসফিয়া ও আদনান। তারা ৬টা ৩৭ মিনিটে বের হয়ে যায়। ওই রেস্টুরেন্টের যে কর্মচারী তাদের আইসক্রিম সার্ভ করেছিলেন তার নাম উজ্জ্বল দাস।

তিনি জানান, তাসফিয়া ও আদনান ২০-২২ মিনিট দোকানে ছিল। তারা দুটি আইসক্রিম অর্ডার করেছিল। দুটি আইসক্রিমের দাম আসে ভ্যাটসহ ৩৭৫ টাকা।

তাসফিয়া-আদনান বিল দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পর উজ্জ্বল ওই টেবিলে গিয়ে দেখতে পান তারা আইসক্রিম খায়নি। কিন্তু বিল পরিশোধ করে চলে গেছে।

বুধবার সকালে স্থানীয়দের দেয়া খবরের ভিত্তিতে পতেঙ্গার ১৮ নম্বর ঘাটের পাশে কর্ণফুলী নদীর পাড় থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিকেলে পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে নিশ্চিত করে মরদেহটি তাদের মেয়ে তাসফিয়া আমিনের।

তাসফিয়া আমিনদের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফের ডেইলপাড়া এলাকায়। তার পরিবার নগরীর ওআর নিজাম আবাসিক এলাকার তিন নম্বর সড়কের কেআরএস ভবনে থাকে।