যুক্তরাজ্যের মাতৃ মানসিক স্বাস্থ্য সপ্তাহ শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। ইয়াং মামস সাপোর্ট নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা ফিওনা স্মল নতুন মায়েদের কাজে ফেরায় সহায়ক দশটি পরামর্শ দিয়েছেন।

১. বুঝুন আপনি কোথায়?

নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমি কি একজন বেকার লোক?’

না, আপনি তা নন। একজন মা হিসাবে, আপনি ইতোমধ্যে একটি কাজ করছেন।

আপনি পেশাগতভাবে ‘কিছুই’ করছেন বলে মনে করা সহজ। বা আপনি কোন অর্থ পাচ্ছেন না কিন্তু মাতৃত্ব পূর্ণসময়ের কাজ এবং এটিতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তাই নিজেকে নিজেকে ছোট করবেন না।

যদি আমরা আমাদের বাচ্চাদের জন্য কি করা উচিত, সেটি না করি তাহলে বিশ্বেরই আসলে কোনো ভবিষ্যত নেই। কারণ আপনি চুপ করে বসে নেই।

আপনি যা করছেন সেটি সমাজের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

২. মাতৃত্ব থেকে আপনি কী দক্ষতা অর্জন করেছেন?

মাতৃত্ব অর্জনের পুরো পথপরিক্রমা আপনাকে একটি নতুন দক্ষতা দিয়েছে।

নিয়মিত চেকআপ করানো, সন্তানের খেলাধুলা দিনক্ষন ঠিক রাখা, অন্য মায়েদের সাথে সংযোগ রাখা।

ভাবুন আপনাকে একজন ভালো মা হওয়ার জন্য এগুলো অনেক কিছু শিখতে হয়েছে।

মা হিসেবেও আপনি আপনার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারেন।

৩. বিচ্ছিন্নতা কমান

সন্তানরা স্কুলে গেলে আপনার হাতে তখন অনেক সময়। তাদের একেকটি সুযোগের জানালা হিসেবে ভাবুন।

সরাসরি কোনো চাকরিতে যোগ না দিয়ে আপনি ঐচ্ছিক কোন কাজে যোগ দিতে পারেন বা কাজ করছে এমন লোকদের গ্রুপে যোগ দিতে পারেন।

৪. ক্যারিয়ার পরিবর্তনের বিষয়টি সহজে নিন

মা হওয়ার আগে যে কাজ আপনি করতেন সেটি হয়তো পরে আর পাচ্ছেন না- তা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

বরং এটিকে নতুন সুযোগ হিসেবে নিন ভাবুন আপনার সম্ভাবনার আরেকটি দিক উন্মোচিত হচ্ছে।

৫. নিজের প্রতি সদয় হোন

নিজের ওপর অত্যাচার করবেন না। মনে রাখবেন এটি জীবনের একটি পর্যায় এবং এটি চিরস্থায়ী কিছু নয়।

মাতৃত্বের মধ্য দিয়ে আপনার জীবন শেষ হয়ে যায়নি।

বরং আপনি জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছেন এবং স্বাভাবিকভাবেই আপনার পেশাগত জীবনে পুরোপুরি ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগবে।

৬. পরামর্শকদের কাছে সৎ থাকুন

যখন কোন চাকরির জন্য যাবেন সেখানে নিজের সমস্যাগুলো জানান।

সেখানে আপনাকে সাহায্য করার লোক আছে তাই সত্যি বলুন যে আপনার কি ধরণের সহায়তা প্রয়োজন।

দৃঢ় থাকুন।

আসা যাওয়ার খরচ, সন্তানের জন্য অতিরিক্ত খরচ হবে কি-না এসব বিষয়ে জেনে নিন।

যত ধরনের জটিল প্রশ্ন আপনার মনে আছে সেগুলো জানতে চান।

জিজ্ঞেস করা উচিত এমন কোন কিছু জিজ্ঞেস করতে ভয় পাবেন না।

৭. যথাযথ প্রস্তুতি নিন

ইন্টারভিউতে যাওয়ার আগে প্রস্তুতি নিন কারন এ নিয়ে নার্ভাস হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই সাহস রাখুন।

যদিও অল্প নার্ভাস হওয়াটা কাউকে সতর্ক হতে সাহায্য করে।

কোম্পানি সম্পর্কে আগেই ভালোভাবে জেনে নিন।

আর যদি সেটি পারেন তাহলে সততার সাথে সেটিই তাদের বলুন যে পরিস্থিতির কারণে আপনি সব কিছু জানতে পারেননি।

৮. আপনি একজন মা- এটি বলতে লজ্জা পাবেন না

এটিই আগে জানান।

আপনার সম্ভাব্য চাকরিদাতা যদি এটি মাঝপথে জানতে পারেন তিনি হয়তো অবাক হবেন যে কেন আপনি এটি আগেই বলেননি তাদের।

মাতৃত্ব অসাধারণ জিনিস, এ নিয়ে গর্বিত থাকুন।

পাশাপাশি আপনার সময়সীমা, সন্তানের স্কুল যাওয়ার বয়স এসব বিষয়েও জানিয়ে রাখতে পারেন।

আপনার এমন কাজ দরকার যেটি আপনি করতে পারবেন, সুতরাং সেটির জন্যই আপনি শুরুতে কথা বলুন।

৯. ভিন্নভাবে ভাবুন

একটি চাকরি পাওয়া মানে নয়টা পাঁচটা চাকরি নয়।

আপনি যখন কর্মজীবী মা তখন ভিন্ন সুযোগ গুলো সম্পর্কেও ভাবুন।

অন্য কোন শখ বা দক্ষতা থাকলে সেটিও আয়ের উৎস হতে পারে।

মা-কেন্দ্রিক সুযোগ গুলো দেখুন।

মা হওয়া মানেই এই নয় যে আপনি আর বড় কিছু ভাবতে পারবেননা।

১০. নিজের প্রতি যত্ন নিন

নিজের যোগ্যতার প্রতি আস্থাশীল হোন।

আশপাশে ইতিবাচক মানুষ রাখুন যারা প্রয়োজনে আপনাকে সমর্থন যোগাবে।

অন্য মায়েদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন।

মনে রাখবেন নিজের যত্ন নেয়া ও আপনার ভালো দেখবে এমন মানুষদের সাহচর্যে থাকা আসলেই দারুণ বিষয়।