সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও:
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ে প্রায় সকল ফসলী মাঠে বৈশাখ মাসের ঝড় ও বৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশংকা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। উঠতি ফসলে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে ভিজে আতঙ্কিত ও হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে কৃষকরা। কেউ ধান কাটছেন, কেউ কাঁদছেন কেউবা নিরব স্তব্ধতায় রয়েছেন। বৃষ্টির পানিতে ফসল ভিজে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা গতবারের তুলনায় বেশিই ছিল। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টির কারণে ফসলী জমির পাকা আধাপাকা ধান পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ঝড়ো বাতাসে বিভিন্ন এলাকায় ধান মাটির সাথে মিশে গেছে। মাঠের ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। ঝড় বৃষ্টিতে বোরো ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা আতঙ্কে জমির কাঁচা-পাকা ধান কর্তন শুরু করেছেন।
সোমবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের স্বপ্ন যেন গুড়েবালি হয়েছে হঠাৎ বৈশাখী ঝড় ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে। ধান পরিপুষ্ট হয়ে পাকার আগেই মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে অনেকের। কেউবা কাটছে, বাদছে, মাঠ থেকে বাড়ি নিচ্ছে এবং ঝাড়ছে এমতাবস্থায় হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় ভিজে গিয়ে কৃষকের মাথায় হাত উঠে গেছে। ব্যাপক আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কথা ব্যক্ত করেন উপজেলার জালালাবাদ-ইসলামাবাদ গ্রামের একাধিক কৃষকরা। আবহাওয়ার অবস্থা ভাল নয় দেখে আধা পাকা ধান বাধ্য হয়েই কাটতে হচ্ছে অনেক কৃষকদের। সময়ের আগে ধান কাটার ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। আবহাওয়ার এ অবস্থায় একই সঙ্গে মাঠে ফসল কাটা শ্রমিকেরও সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি দামে ৮/৯শ টাকা দরে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। তারই ভিতরে হঠাৎ ঝড় বৃষ্টিতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়েছে বলে জানান পোকখালী ইউনিয়নের নাইক্ষংদিয়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ মিয়া ও নেছার আলী।
সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ঘোনা পাড়ার কৃষক আমান আলী জানান, বেশির ভাগ জমিতে বোরো জাতের ধানের চাষ করা হয়েছে। সম্পুর্ন ধান কেটে বাড়ি উঠাতে এখনো সপ্তাহ বাকি ছিল। তবে আংশিক কিছু মাঠ থেকে বাড়ি যেতে শুরু করেছে এবং মাঠেই কাটা বাধার কাজ হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে এবং পানিতে ভিজে গেছে। এতে ফলন বিপর্যয়সহ প্রতি কানিতে প্রায় চার/পাঁচ আড়িঁ ধান কম হবে বলে আশংকা প্রকাশ করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, যদিও নির্ধারিত মাত্রা ছাড়িয়ে ছিল কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে কিছু পরিমাণ জমিতে বোরো ধান হেলে পড়েছে ও ভিজে গেছে। তবে হতাশার কিছু নেই। ফলন বিপর্যয়ের কথা এখনই নিশ্চিত বলা যাবে না। আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। যেসব জমির ফসল শতকরা ৮০/৯০ ভাগ পেকে গেছে, সেগুলো আবহাওয়া অনুকূলে আসা মাত্রই রোদের দেখা মিললেই দ্রুত কেটে নেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, এখনও বোরো ধান পাকা ও শক্ত অবস্থায় আছে। আশা করা যায় ফলনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।