এম.এ আজিজ রাসেল:
জেলায় ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যতা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র বুদ্ধ পূর্ণিমা।
২৯ এপ্রিল দিনব্যাপী নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পবিত্র এই দিন পালন করা। ভোরে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা, অষ্টপরিষ্কারদান সংঘদান ও ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদানের মাধ্যমে কর্মসূচীর সূচনা হয়। বেলা ৩টায় বৌদ্ধ মন্দির সড়কস্থ অগগমেধা বিহারের সামনে থেকে কক্সবাজার সম্মিলিত বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের ব্যানারে বের করা হয় মৈত্রী র‌্যালী। মৈত্রী র‌্যালির উদ্বোধন করেন জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা মোস্তাক।র‌্যালীটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে পশ্চিম পাহাড়তলী বড়ুয়া পাড়া উ-কোসল্লা বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে শেষ হয়।
এছাড়া একই সময়ে পূর্ব মাছবাজার থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের মানু রাখাইন, বুমা, মালাউ, মংক্যছিন, খিন খিন মং, মওহ্লাওয়ান, এক্য রাখাইনের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় মাহাসিংদোগ্রী মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মহাবোধিবৃক্ষে জলপ্রবহন, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডা. মায়েনু, কক্সবাজার কেজি স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা মাউটিন, বাওয়ান, বাংলাদেশ রাখাইন স্টুডেন্ট কাউন্সিলের উপদেষ্টা ক্যনাই, লন লন, জ জ, জ জ ইয়ুদি, মং মো, হাপু, চ লাইন, জনি, বাবুশে, জহিন, মংসি য়াইন, জওয়ান, আক্য, আবুরি, ওয়ান শে, ময়টিন, ববি, জওয়ান, মংহ্লাসিন, কিংজ ও ওয়াহ ওয়াহ, মিমি, শেরি, মুখিন শো, আরিয়েন সেন প্রমূখ। উ-কোসল্লা বৌদ্ধ বিহারে মহান বুদ্ধ পূর্ণিমা, ২৫৬২ বুদ্ধ বর্ষ বরণ উপলক্ষে অষ্ট উপকরণ, পঞ্চশীল, অষ্টশীল গ্রহণ, আলোচনা সভা ও ২০১৭ সালে এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও গুণীজন সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাহিদুর রহমান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মাহিদুর রহমান বলেছেন-সমাজ গঠনে সচেতনতার সঙ্গে আমাদের জীবনে বাস্তবতার সহিত বুদ্ধের নীতি আদর্শের প্রয়োগ ঘটাতে হবে। গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা এবং পঞ্চনীতি পালন করতে পারলে বিশ্বে আজ এত হত্যা, রক্তপাত এবং অন্যায় হতনা। তাই বর্তমান বিশ্বে মহামতি গৌতম বুদ্ধের বাণী অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে গৌতম বুদ্ধের বাণীকে ধারণ করে জাতি, ধর্ম, নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে কাজ করে যেতে হবে। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার। সম্মিলিত বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা এডভোকেট রাখাল চন্দ্র বড়ুয়ার উদ্বোধনী বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় আর্শিবাদক ছিলেন উ-কোসল্লা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় থের।
প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ প্রশিক্ষণ পরিবেনের পরিচালক শ্রীমৎ শীলমিত্র থের। ধর্মালোচক ছিলেন প্রজ্ঞালোক বৌদ্ধ বিহারের অগ্র মহাপন্ডিত শ্রীমৎ প্রজ্ঞাপাল ভিক্ষু ও ধর্মাংকুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ সুগত প্রিয় ভিক্ষু। বক্তব্যে রাখেন- সম্মিলিত বুদ্ধ পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান দীপক বড়ুয়া, উপদেষ্টা সুজিত বড়ুয়া, উপদেষ্টা তরুন বড়ুয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবুল বড়ুয়া, সহ-সভাপতি বংকিম বড়ুয়া, সহ-সভাপতি এডভোকেট অরূপ বড়ুয়া তপু, মুক্তিযোদ্ধা রমেশ বড়ুয়া, প্রধান সমন্বয়কারী ও জেলা বৌদ্ধ সমাজ সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ বড়ুয়া।
সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু, বাংলাদেশ পুলিশের (সিআইডি) ইন্সপেক্টর মিতুশ্রী বড়ুয়া, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ নোবেল কুমার বড়ুয়া ও বান্দরবান সরকারী কলেজের প্রভাষক জয় প্রকাশ বড়ুয়া। এতে পঞ্চশীল প্রার্থনা পরিচালনা করেন বিএডিসি’র অবসরপ্রাপ্ত মহা পরিচালক ইন্দ্রনাথ বড়ুয়া।