বার্তা পরিবেশক:
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে বেড়ে উঠা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের তুখোড় মেধাবী ছাত্রনেতা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ওসমান গণি মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপক গণ সংযোগ করেছেন। গত ২৭ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মহেশখালী-কুতুবদিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক গণসংযোগ, মতবিনিময় ও বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশহগ্রহণ করেন।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ২৭ এপ্রিল রোজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা চত্বরে পৌছালে পৌর এলাকার তৃণমূল কর্মীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। তৃণমূল কর্মীদের সাথে নিয়ে মহেশখালী উপজেলা চত্বর, আদালত পাড়া, থানা পাড়া প্রদক্ষিণ ও ব্যাপক গণসংযোগে অংশ নেন এবং আমজনতার ভাল- মন্দের খবর নেন।এর পর পৌর এলাকার দক্ষিণ পুটিবিলাস্থ দক্ষিণ পুটিবিলা জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। জুমা পরবর্তী স্থানীয় মুসল্লিদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন এবং মসজিদের পুন:নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে বের হয়ে পুটিবিলা দাসি-মাঝি পাড়ায় ব্যাপক গণসংযোগ শেষে মহেশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা সরওয়ার আজমের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও মতবিনিময় করেন, তৎপরবর্তী সাবেক মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা সরওয়ার আজমের ছোট ভাই মহেশখালী উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান অসুস্থ জহির উদ্দিনের শারীরিক অবস্থার খোজ খবর নেন এবং কিছু সময় তার পাশে কাটান। সেখান থেকে ফিরে বিকেল ৩টার দিকে পৌর এলাকার চর পাড়াস্থ লিডারশীপ কলেজ মিলনায়তনে এক সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

উক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে গোরকঘাটা, চর পাড়ার কিছু অংশে গণ সংযোগ শেষে তৃণমূল আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংসগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় ও সুখ-দূ:খ শেয়ার করেন। এ সময় দক্ষিণ হিন্দু পাড়ার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও উপস্থিত ছিলেন। মহেশখালীর উত্তরাঞ্চলের অবিসংবাদিত তৃণমূল বান্ধব নেতাকে কাছে পেয়ে পৌর এলাকার ত্যাগী কর্মীরা বেশ উচ্ছ্বসিত, সবার প্রত্যাশা আগামীতে তৃণমূল বান্ধব, সংখ্যালঘু বান্ধব এ নেতাকে নিয়েই পার হবে আগামী নির্বাচনী বৈতরণী। সেখান থেকে ফিরে কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে “ডিসি সাহেবের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বলী খেলা উপভোগ করেন।

গত ২৮ এপ্রিল রম্য ভূমি রামুর ঐতিহ্যবাহী খিজারী উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ, রামু খিজারী উৎসবের সভাপতি, রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বর্ণাঢ্য খিজারী উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত বর্ণাঢ্য খিজারী উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান জনাব এইচ,টি,ইমাম। উদ্ভোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, সাবেক মন্ত্রী জনাব ড:হাছান মাহমুদ এম,পি।

গত ২৯ এপ্রিল সকাল ১১টায় ফের ফিরে আসেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া সংসদীয় আসনের উপকূলীয় দ্বীপ কুতুবদিয়ায়। বড়ঘোপ স্টীমার ঘাট, কুতুবদিয়া বিদ্যুৎ মার্কেট, বড়ঘোপ বাজার এলাকায় গণসংযোগ শেষে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এ সময় বেশ সাড়া, উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয় তৃণমূল কর্মী ও আম-জনতার মাঝে। উপস্থিত অনেকেই ভৌগোলিক ভাবে শত বছর ধরে ধলঘাটা- মাতারবাড়ীর সাথে যোগাযোগ, আত্বীয়তার বন্ধন আর ও সু-দৃঢ, ইস্পাত কঠিন ঐক্য এ মাটি ও মানুষের নেতাকে কেন্দ্র করে সুসংগঠিত হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। গণসংযোগ শেষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ৩২ ধানমন্ডির প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুবদিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক কুতুবীর কৈয়ারবিলস্থ জিন্দাবাজারের বাড়ীতে ১৯৯১ সালের ২৯ শে এপ্রিল প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে শাহাদত বরণকারী তার পরিবারের সদস্য সহ সকল শহীদদের স্মরণে আয়োজিত মেজবান, দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণ শেষে কৈয়ারবিলের বিভিন্ন পয়েন্টে গণসংযোগ ও স্থানীয় তৃণমূল নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের খোজ-খবর নেন। সেখান থেকে বিকেলে নৌ-পথে চলে আসেন নিজের স্মৃতি বিজড়িত ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশী বিধ্বস্ত,স্বজন হারানো উপ-দ্বীপ মাতারবাড়ীতে। বিকেল ৪টার দিকে মাতারবাড়ীর প্রবেশদ্বার রাজঘাট এসে পৌছালে জনতার ঢলে পরিণত হয়। প্রতীক্ষার প্রহর গুনা প্রিয় নেতার আগমনের সাথে সাথে উচ্ছসিত জনতাকে নিয়ে একে একে প্রদক্ষিণ ও গণসংযোগ করেন সি,এন,জি স্টেশন, পুরান বাজার,বাংলাবাজার,সাইরার ডেইল। মাতারবাড়ীর আনন্দঘন পরিবেশে কর্মীদের বিদায় জানিয়ে প্রবেশ করেন জন্মভূমি ধলঘাটায়। বিকেলে স্থানীয় আম-জনতার সাথে কুশল বিনিময় শেষে জনতার বহর নিয়ে পৌছান পূর্ব নির্ধারিত উত্তর মুহুরীঘোনার প্রোগ্রামে। উত্তর মুহুরীঘোনা যুব উন্নয়ন সংঘের উদ্দ্যোগে আয়োজিত স্মরণ সভা, ইছালে সওয়াব ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করে যখন বক্তৃতা শুরু করেন তখন চারদিকে সুনশান নীরবতা, আবেগে আপ্লুত উপস্থিত শ্রোতারা পীনপতন নীরবতায় শুনতে থাকেন সেদিনের সেই ভয়াল রাতের কাহিনী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সে রাতের ভয়াল কাহিনীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নিজে ও কিছু সময়ের জন্য হয়ে যায় বাকরুদ্ধ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন”১৯৯১ সালের ২৯ শে এপ্রিল ছিল ধলঘাটা-মাতারবাড়ী তথা উপকূলীয় এলাকার জন্য এক বিভীষিকা। সে রাতের ধব্বংসযজ্ঞ কাটিয়ে উঠতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। সেই কালো রাত আমাদের কে করেছে স্বজনহারা,বাস্তুচ্যুত,শত শত লাশের মিছিলে সামিল হয়েছিল আমাদের স্বজনরা। একটি রাত কিছু বুঝে উঠার আগেই সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয়। সমৃদ্ধ ধলঘাটা ইউনিয়ন হয়ে যায় বিধ্বস্ত ইউনিয়ন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই উদ্বাস্তু হয়ে আজ জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে স্ব-পরিবারে অবস্থান করতে হচ্ছে।

তিনি ধলঘাটাবাসীকে সুখবর হিসেবে জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় সেই বিধ্বস্ত ধলঘাটাকে আলোকিত করার প্রয়াস হিসেবে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়ায় এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেন আপনারা আবার ফিরে পাবেন সেই সৈকত, ঝাউ বাগানের হাওয়া, সমৃদ্ধ উপ-শহর আপনাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে যাতে আমরা সকলে হব আলোর পথের সহযাত্রী। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহেলিত ধলঘাটা বাসীর পক্ষথেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

সেই ভয়াল রাতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেকটা আবেগময় হয়ে তিনি বলেন”সে ভয়াল রাত এখন ও যেন চোখের সামনে ভেসে উঠে। ২৯ শে এপ্রিল এ দিনটি আমার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে অনেক মর্মস্পর্শী, অনেক বেদনার। সে ভয়াল রাতে সন্ধ্যার পরে হঠাৎ সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়, রাত বাড়ার সাথে সাথে সব কিছু তলিয়ে যেতে শুরু করে পানিতে, সারা রাত পানির সাথে সংগ্রাম করে পানির মাঝেই রাত কাটিয়েছি। এক সাথে ছিল এ রকম অনেকে অল্প সময়ের ব্যবধানে উধাও, আল্লাহ পাকের কি খেলা, সারা রাত পানির নিচে এক সাথে ছিলাম সকাল বেলা নিজে কোন রকমে বেঁচে থাকলে ও সকালে দেখি অনেকে নেই, অনেকে লাশ হয়ে পড়ে আছে। সেই বীভৎস দৃশ্য এখন ও আমাকে কাঁদায়। তিনি সকল শাহাদত বরণকারীর জন্য মহান আল্লাহর দরবারে সবাইকে বিশেষ ভাবে প্রার্থনা করার আহবান জানান।

স্মৃতিচারণে তিনি ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকার পর ও দ্রুত উপকূল বাসীর কাতারে পরিদর্শনে এসে সমবেদনা জানায় উপকূলবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।