মানবজমিন : মিয়ানমারের উত্তরে কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে সেনাবাহিনীর। এতে কাচিন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ পালাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয়কের অফিস প্রধান মার্ক কাটস বলেছেন, গত তিন সপ্তাহে চীনের সীমান্তবর্তী কাচিন রাজ্য থেকে কমপক্ষে ৪ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ বছরের শুরু থেকে এর আগে পালিয়েছে আরো ১৫ হাজার মানুষ। কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি ও সরকারের মধ্যে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর কাচিন ও শান রাজ্যের আশ্রয়শিবিরে (আইডিপি- ইন্টারনালি ডিসপ্লেসড পারসনস) আশ্রয় নিয়েছে ৯০ হাজার মানুষ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। মার্ক কাটস বলেছেন, এসব বিষয়ে আমরা স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে রিপোর্ট পাচ্ছি। তাতে বলা হচ্ছে, লড়াই কবলিত এলাকাগুলোতে এখনও বহু মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে আছে। আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তা নিয়ে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা, ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, বিকলাঙ্গরা। আমাদেরকে নিশ্চিত হতে হবে যে, এসব মানুষকে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। তবে এ লড়াইয়ে বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার বিষয়টি যাচাই করতে পারে নি জাতিসংঘ। এর বাইরে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সঙ্কট একটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর চালানো নৃশংসতায় কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা আগস্টের শেষ থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে বৃটিশ ঔপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে মিয়ানমার। তারপর থেকে দেশটির সীমান্ত অস্থিতিশীল রয়েছে। সেখানে সক্রিয় রয়েছে উগ্রপন্থিরা, স্থানীয় মিলিশিয়ারা, মাদক পাচারকারীরা। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি ২০১৬ সালে ক্ষমতা নেয়ার সময় বলেছিলেন, তার অগ্রাধিকার হবে শাস্তি প্রতিষ্ঠা। কিন্তু এক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে খুবই ধীর গতিতে। জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলো অধিকতার শায়ত্তশাসন দাবি করছে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রোহিঙ্গা সঙ্কট। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নৃশংস নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। সেই নির্যাতনকে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো, যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশ।