বিবিসি বাংলা: বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির শীর্ষ নেতা এবং খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়ে’ অবস্থান করছেন।

বিএনপির তরফ থেকে প্রথমবারের মতো বিষয়টি স্বীকার করা হলো।

তারেক রহমানের পাসপোর্ট বিতর্ক সামনে আসার প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ২০১২ সালে তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন এবং এক বছরের মধ্যেই সেটি গৃহীত হয়েছে।

২০০৮ সালে তারেক রহমান দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হবার পর বিএনপির তরফ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছে, তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন।

সর্বশেষ সোমবার বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং তারেক রহমানের আইনজীবী কায়সার কামাল বিবিসি বাংলা বলেছেন, মি: রহমান ব্রিটেনে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছেন।

মি:আলমগীর বলেন, “আমরা সবাই জানি যে তারেক রহমান সাহেব বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন।তারপর এখানে দেশে বর্তমান সরকার তার বিরুদ্ধে যেভাবে মামলা-মোকদ্দমা এবং বিনা বিচারে সাজা দিচ্ছে সে কারণে তিনি অ্যাসাইলাম (রাজনৈতিক আশ্রয়) চেয়েছেন এবং তাকে সেটা দেয়া হয়েছে। অ্যাসাইলামের সময় নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট জমা দিতে হয়।”

তিনি অভিযোগ করেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তারেক রহমানের পাসপোর্ট বিতর্ক সামনে এনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন মি: আলমগীর।

“পাসপোর্ট এবং নাগরিকত্ব এক জিনিস না।শাহদীন মালিক সাহেব বলেছেন, বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১৬ কোটির পাসপোর্ট নেই। তাহলে তারা কি বাংলাদেশের নাগরিক না?”

মি: আলমগীর বলেন, যে কোন ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলে সাধারণত পাসপোর্টের মালিককে সেটি পরে ফেরত দেয়া হয়।

কিন্তু তারেক রহমানের পাসপোর্ট কিভাবে বাংলাদেশ হাই কমিশনে আসলো সেটা ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে মি: আলমগীর বলেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের যে চিঠি দেখিয়েছেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপি মহাসচিব। এ চিঠিকে ‘রহস্যময়’ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।

” এতো ভুলে ভরা একটা চিঠি ব্রিটিশ অফিস থেকে আসতে পারে, এটা স্বাভাবিক নয়,” এ কথা উল্লেখ করে মি: আলমগীর বলেন, সে চিঠিতে ব্রিটিশ অফিসের নাম শুদ্ধ করে লেখা হয়নি এবং চিঠিতে একটি স্বাক্ষর থাকলেও সেখানে কোন নাম নেই।

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দপ্তর এ ধরনের কোন চিঠি বাংলাদেশ হাই কমিশনকে দিয়েছে কিনা এবং পাসপোর্টগুলো বাংলাদেশ হাই কমিশনে গেল কিভাবে সে বিষয়টি আইনজীবীরা জানতে চেয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিএনপি মহাসচিব মনে করেন, খালেদা জিয়ার কারাগারে থাকা এবং তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি সামনে চলে আসার কারণে সরকার দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরানোর জন্য তারেক রহমানের পাসপোর্ট বিতর্ক সামনে এনেছে।

তারেক রহমানের পাসপোর্ট বিতর্ক নিয়ে বিএনপি কোন রাজনৈতিক চাপে পড়েনি বলে তিনি মন্তব্য করেন।