ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক :

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লায়াং তার দেশের সেনাসদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন সামরিক আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলেন। তিনি বলেছেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। রয়টার্স।

এর আগে এই সেনাপ্রধানই বিতর্কিত হয়েছিলেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি মন্তব্যের জন্য। হ্লায়াং এর আগে দাবি করেছেন, রোহিঙ্গারা কোনোদিনই মিয়ানমারের নাগরিক ছিল না এবং ভবিষ্যতেও তাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

সেনাদের উদ্দেশে হ্লায়াং রোহিঙ্গাদের আবার ‘বাঙালি জঙ্গি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাখাইনে বাঙালি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান বৈধ প্রত্যাক্রমণ।’

রয়টার্স জানিয়েছে, ফেসবুকে এক পোস্টে হ্লায়াং আইন মেনে চলার কথা বলেছেন। রোহিঙ্গাদের হত্যার অভিযোগে সাত সেনাসদস্যকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি এ আহ্বান জানান। পোস্টে তিনি বলেন, সেনাসদস্যদের অবশ্যই সামরিক আচরণবিধি ও আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি মেনে চলতে হবে।

গত আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-ধর্ষণসহ সব ধরনের নির্যাতন শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সাত লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।

গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলীয় গ্রাম ইনদিনে সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা ১০ রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করে। তাদের রাখা হয় গণকবরে। ঘটনার সরেজমিন অনুসন্ধানে নেমেছিলেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। ডিসেম্বরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর অভিযোগ আনা হয় দাপ্তরিক গোপনীয়তা ভঙ্গের আইনে।

ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রয়টার্সকে জানায়, ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেই তদন্তের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত ৭ সেনাকে এপ্রিলে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদ- দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেই সাজার প্রসঙ্গ টেনে সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত পেয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।