সংবাদদাতা:
আমার স্বামী মো. নুরুল ইসলাম একজন সরল-শান্তি মানুষ। কোন ঝামেলায় নেই। স্বামীর হালাল ব্যবসায় আমাদের ৪ সন্তানের পরিবার চলে। স্থানীয় কোন সাধারণ অভিযোগ পর্যন্ত কেউ আমার স্বামীর বিরুদ্ধে দেখাতে পারবেনা। ব্যবসায়িক হিসেব নিকেসের পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে হামলার পর উল্টো অস্ত্র মামলা (জিআর-৫৮/১৮) দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
শুধু তাতে শেষ নয়, তাকে আরো একটি সাজানো মামলার (জিআর-৬২/১৮) আসামী দেখানো হয়েছে। একে একে দুইটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আমার স্বামী আজ পলাতক। এসবের নাটের গুরু হলো ইসলামাবাদ এলাকার আবদুস সবুরের ছেলে ব্যবসায়িক পার্টনার নেজাম উদ্দিন। ছকিনা খাতুন আবেগতাড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার পরিবারের দুর্দিন যাচ্ছে। সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমি জুলম-নির্যাতন ও হয়রানীর বিচার চাই।
ঘটনার শিকার মো. নুরুল ইসলাম টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ এলাকার সিরাজ মিয়া ফকিরের ছেলে। তার স্ত্রী ছকিনা খাতুন শনিবার (২১ এপ্রিল) বিকালে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেন। এ সময় মো. নুরুল ইসলামের ৩ ছেলে, ১ মেয়ে ও বৃদ্ধ মা আয়েশা খাতুন উপস্থিত ছিলেন। শহরের অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ছকিনা খাতুন আরো বলেন, নেজাম উদ্দিনের সাথে আমার স্বামীর পার্টনারশীপ ব্যবসা ছিল। ২০১৫ সালে নেজাম উদ্দিন তার ভাবির খুনের মামলার আসামী হয়ে দীর্ঘ ৬ মাস পলাতক হয়ে যায়। এ সময় ব্যবসার সমস্ত খরচ-দায়ভার আমার স্বামী মো. নুরুল ইসলাম বহন করে।
তিনি বলেন, নেজাম উদ্দিন পলাতক অবস্থায় মামলার খরচ প্রয়োজন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অংকে মোট সাড়ে ৬ লাখ টাকা নেয়। উচ্চআদালতের জামিনে নেজাম ফিরে এসে দুই পক্ষ হিসেবে বসে। তাতে পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। হিসেব অস্বীকার করে নেজাম। শেষ পর্যন্ত ঘটনা স্থানীয় চেয়ারম্যান শাহজাহান পর্যন্ত গড়ায়। এই ফাঁকে গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাত ১০টার দিকে বাড়ী ফেরার পথে নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে আমার স্বামীর উপর হামলা করা হয়। রাতের আধারে আমার বসতবাড়ীতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। আমার স্বামীকে অস্ত্র হাতে দিয়ে ফঁসাতে চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি পালিয়ে রক্ষা পায়। এঘটনায় স্থানীয় জসিম উদ্দিন, জমির উদ্দিন, জামাল উদ্দিন, মিজানুর রহমানসহ আরো কয়েকজন লোক জড়িত। তিনি ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ছকিনা খাতুন বলেন, নেজাম উদ্দিন একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয় দিয়ে সবখানে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেক অপরাধ করেও ধরাকে সরা ভাবে। অথচ যত অপরাধ হয় সবটিতে তার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ হাত রয়েছে। তাকে আইনের আওতায় আনা দরকার।
তার অভিযোগ, নেজামের লালিত চিহ্নিত কিছু অপরাধীর হাতে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। অসম ক্ষমতা, অবৈধ ব্যবসার টাকার বাহাদুরীর কারণে স্থানীয়রা পিষ্ট হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে নেমে আসে অত্যাচার। প্রতিবাদকারীদের বানানো হয় সাজানো মামলার আসামী। এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে হয়রানীর শিকার মানুষগুলো।