সম্পাদক পদ থেকে সরে দাড়ানোর ২৪ ঘন্টা পর আবারো প্রার্থী ঘোষণা

মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু নাইক্ষ্যংছড়িঃ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল দীর্ঘ ৮ বছর পর আগামী ২ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে দলটির দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন করেছে। গেল বুধবার হঠাৎ করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের কোম্পানি। একই দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডাঃ সিরাজুল হক।

তাই প্রভাবশালী দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারের ঘোষণায় সম্পাদক পদে আর কোন প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় মোঃ ইমরান মেম্বার নির্বাচিত হতে যাচ্ছিল। সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ২৪ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার (১৯এপ্রিল) ডাঃ সিরাজুল হক নিজেকে আবারো সম্পাদক প্রার্থী ঘোষণা করায় সম্মেলন ও কাউন্সিল নিয়ে শুরু হয় ধুম্রজাল।

সিরাজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের ২৪ ঘন্টার মাথায় পুনরায় নিজে ফের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী দাবী করায় কাউন্সিল বানচালের করতে নতুন করে গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন অনেক নেতা কর্মীরা। এ বিষয়ে সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন সুন্দর ভাবে কাউন্সিল সফল করতে বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) দলীয় কার্যালয়ে এক প্রস্তুতি সভা আয়োজন করা হয়েছে সেখানে সিরাজ সাহেব আসেন নি। তাই নেতা কর্মীরা সম্মেলন বানচাল করতে ধুম্রজাল ও ষড়যন্ত্র সৃষ্টির পায়ঁতারা করছে বলে মনে করছেন নেতা নেতা কর্মীরা।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ সংবাদিকদের জানান বৃহস্পতিবার প্রস্তুতি সভা চলা কালে ডাঃ সিরাজুল হক মোবাইল ফোনে মনোনয়ন প্রত্যাহার ও সরে দাঁড়ানোর কথা অস্বীকার করে বলেন তিনি সম্পাদক পদে নির্বাচন করবেন।

জানা যায় বুধবার (১৮ এপ্রিল) সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বরাবরে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে সভাপতি পদ থেকে আবু তাহের কোম্পানী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ডাঃ সিরাজুল হকও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে সরে দাঁড়ান।

২ মে সম্মেলন ও কাউন্সিলে সভাপতি পদে নির্বাচন করতে শক্তিশালী তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। গত ১৮ মে ছিল প্রত্যাহারের শেষ দিন। ঐ দিন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সভাপতি পদপ্রার্থী আবু তাহের কোম্পানী (বাই সাইকেল) প্রতিক প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়। তাই অধ্যাপক শফি উল্লাহ (ছাতা) এর সাথে প্রতিদ্বন্ধীতা হবে আর এক প্রার্থী তারেক রহমানের (চেয়ার) প্রতিকের সাথে।

সাধারণ কাউন্সিলরা মনে করেন, সভাপতি পদে অনেকটা নিশ্চিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির আস্থার প্রতীক অধ্যাপক শফিউল্লাহ।

নাইক্ষ্যংছড়িতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির হাতকে আরো শক্তিশালী করতে যেমন শফিউল্লাহর বিকল্প নেই। ঠিক তেমনি ভাবে ইমরান মেম্বারেরও প্রয়োজন বলে মনে করেন নেতা কর্মীরা।

বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আলম কোম্পানি জানান, অধ্যাপক শফিউল্লাহ ও ইমরান মেম্বার তৃনমূলের খবর রাখেন।সভা সমাবেশে ঠিক সময় পাওয়া যায়। দলের সুখে দুঃখে ছুটে যান। তাদের কাউকে নির্বাচিত করা দরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, সোনাইছড়ি, ঘুমধুম, দৌছড়ি ও বাইশারীসহ ৫ ইউনিয়নের কমিটির সভাপতি সম্পাদক এই ১০ কাউন্সিলদের মধ্যে ৭ জনই অধ্যাপক শফিউল্লাহ ও ইমরান মেম্বারের পক্ষে। যে ৩ জন এখনো অনিশ্চিত তারাও যে কোন সময় পক্ষে চলে আসবেন।

জানা যায় উপজেলায় মোট ১৮১ কাউন্সিলর এর মধ্যে ১৩০ জন সভাপতি প্রার্থী শফিউল্লাহ ও ইমরানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা প্রচারণা চালাচ্ছে। দলের প্রতি আন্তরিকতার কারণে সাধারণ নেতাকর্মীদের অধিকাংশ জননেতা শফিউল্লাহকে সমর্থন করার পাশা পাশি ইমরান কেও সমর্থন করেন। সব মিলিয়ে সভাপতি ত্যাগী নেতা অধ্যাপক শফিউল্লাহ ও ইমরান নির্বাচিত হবেন-অনেকটা ধরে নেয়া যায়।

যে যাই বলুক, সবার প্রত্যাশা যোগ্য নেতৃত্ব দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা কাউন্সিলের মাধ্যমে উঠে আসুক ত্যাগী নেতা। যেন শক্তিশালী হয় পাহাড়ি বাসিন্দাদের অভিভাবক বীর বাহাদুর।