মোঃ জয়না আবেদীন টুক্কু,নাইক্ষ্যংছড়ি:
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দূর্গম জনপদ বাইশারী ইউনিয়নের ঈদগড় হেডম্যান পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পরও ডেপুটেশনে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যাওয়ায় দূর্গম জনপদের শিক্ষার্থীরা প্রাইমারী গন্ডি পেরোনোর পূর্বেই ছিটকে পড়ছে। ইতিমধ্যে অনেক অভিভাবক তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়া-লেখা থেকে বঞ্চিত করে ইটভাটায় কাজ করাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
স্কুল সুত্রে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি জাতীয়করণ হয় ১৯৭৫ এ। প্রধান শিক্ষক সহ ৭ পদের দুইজন শিক্ষক ডিপুটেশনে একজন ডিপিএটে থাকায় বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন শিক্ষক। তৎমধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূণ্য রয়েছে। স্কুলে ১’শ ৪৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়ণরত আছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া মোঃ ওবাইদুল করিম।

আরো জানা যায়, ডেপুটেশনে চলে যাওয়া ৩ সহকারী শিক্ষকের মধ্যে শিমুল পাল ২০১১ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১২ সাল থেকেই ডেপুটেশনে নাইক্ষ্যংছড়ির তাংরা বিচামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, সহকারী শিক্ষক মোসাংউ মার্মা ২০১৬ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১৭ সাল থেকে বান্দরবান সদর নতুন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিপুটেশনে কর্মরত আছেন এবং সহকারী শিক্ষক আনোয়ারুল হাকিম বর্তমানে ডিপিএট, ক·বাজারে রয়েছেন। এছাড়া সহকারী শিক্ষক মিনতি তংচঙ্গ্যাও ইতিমধ্যে ডিপুটেশনে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকশানা আক্তার জানান, সামনে প্রাইমারী সমাপনী পরীক্ষা। শিক্ষক না থাকায় পর্যাপ্ত ক্লাস হচ্ছে না। যার কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষকরা নিজেদের সূবিধার কথা ভেবে অন্যত্র পাঠদান করাচ্ছে। তাহলে আমাদের মত দূর্গম জনপদের শিক্ষার্থীদের সুবিধা দেখবে কে?

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি সরওয়ার আলম জানান, দূর্গম জনপদের অবহেলিত শিক্ষার্থীরা মেধাবী হলেও শিক্ষকদের শরনাপন্ন হতে না পেরে মেধা লোপ পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ট ভাবে পড়া-লেখার সুযোগ পায়, তার জন্য ডেপুটেশনে যাওয়া শিক্ষকদের স্কুলে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবী জানান তিনি।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ওবাইদুল করিম জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত সমস্যা সহ টিউবওয়েল ও শৌচাগারের সমস্যা রয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু আহমেদ জানান, ডেপুটেশনের বিষয়টি সম্পূর্ণ জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্থ। তারপরও শিক্ষার্থীদের সুষ্ট পড়া-লেখার মান বজায় রাখতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশনে যাওয়া শিক্ষকদের তালিকা পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।