শেফাইল উদ্দিন, কক্সবাজার সদর :

কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে ভূমিগ্রাসী চক্রের নেতৃত্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতভিটা দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এতে ভূক্তভোগীরা চরম আতঙ্কে রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে উক্ত চক্রের ষড়যন্ত্র ও অপ পায়তারা থেকে বাঁচতে রামু থানায় সাধারণ ডায়েরী ও আদালতে মামলা দায়ের করেছে সংখ্যালঘুরা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের হিন্দু পাড়া এলাকায় প্রায় ১২/১৫টি পরিবারের ২ শতাধিক লোকজন দীর্ঘ ৮০/৯০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। এ গ্রামে তাদের একটি মন্দির ও আছে। এদের জায়গা-জমি নিয়ে কোন বিরোধ না থাকলেও সম্প্রতি একটি ভূমিগ্রাসী চক্রের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তাদের বসতভিটার উপর। উক্ত সংখ্যালঘুদের জায়গা দখলে নেওয়ার জন্য শুরু করে বিভিন্ন অপ পায়তারা। এরই ধারাবাহিকতায় পাশর্^বর্তী গর্জনিয়া এলাকার ধন রঞ্জন ধরকে বাদী করে কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। যার নং ১৭১/১৭। পরিষদে উক্ত অভিযোগের বিচার চলাকালে একটি রেজিষ্ট্রি দলিল সৃষ্টি করে এ চক্র। উক্ত দলিলের জমি বিক্রেতা ধন রঞ্জন ধর এবং ক্রেতা হচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যানের ভাই নুরুল আবছার, পরিষদের বর্তমান ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজিজুল হক, একই এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের মৃত কবির আহমদের পুত্র ছলিম উল্লাহ, মধ্যম পাড়া মনিরঝিল এলাকার মৃত হাজী বেলাল আহমদের পুত্র মীর আহমদ। দলিল নং ২৬৬। এরপর উক্ত জায়গা থেকে সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদ করতে আরো একটি নতুন ফন্দি সৃষ্টি করে ভূয়া ওয়ারিশ সনদ দেওয়া হয়েছে। যার স্মারক নং ৬৮(ক) ২০১৭ ক্রমিক নং ৭৪২। ভূক্তভোগীরা এ ওয়ারিশদের কোন অস্থিত্ব নেই বলে দাবী করে অত্র এলাকায়। সম্প্রতি সংখ্যালঘুরা উক্ত ভূমিগ্রাসী চক্রের হাত থেকে রেহাই পেতে রামু থানায় সাধারণ ডায়েরী ও আদালতে মামলা দায়ের করেছে। ডায়েরী নং ৩৮৯। মামলা নং অপর ১১১/১৮। সংখ্যালঘুরা প্রভাবশালী এ চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে ননী গোপাল ধরের পুুত্র বিজন ধর, মৃত নরেন্দ্র লাল ধরের পুত্র স্বপন ধর জানান, উক্ত প্রভাবশালী চক্রটি আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতভিটা ও মন্দির জবরদখল করে আমাদেরকে উচ্ছেদ করতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমরা এদের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছি এবং প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিবাদীপক্ষ আমার পরিষদ থেকে সময় নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে এবং জবর দখল চেষ্টার বিষয়টি মিথ্যা বলে জানান। অন্যদিকে অভিযোগ উঠা চেয়ারম্যানের ছোট ভাই নুরুল আবছারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি জমি ক্রয় করেছি। কাগজপত্রে আমার স্বত্ত্ব ঠিক থাকলে আমি জমি দাবী করব, অন্যথায় আমার কোন দাবী নেই।