বার্তা পরিবেশক:
আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সাবেক ছাত্র নেতা ওসমান গণি মহেশখালী-কুতুবদিয়ার পাড়া-মহল্লায় অব্যাহত রাখছেন গণসংযোগ, তৃণমূল কর্মীদের সাথে ভাববিনিময়। একই সাথে তিনি আম-জনতার সুখ-দু:খ নিচ্ছেন ভাগাভাগি করে। ঠিক সেই মুহুর্তে একটি প্রভাবশালী অপশক্তি মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে তাকে সরিয়ে দিতে। এমন অভিযোগ করেছেন ওসমান গণি।

ওসমান গণি অভিযোগ করেছেন, বিগত ২ বছরের অধিক সময় ধরে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার দলের তৃণমূল কর্মী ও আমজনতাকে সাথে নিয়ে পদাচারণা করছেন তিনি। তৃণমূলের ভালবাসায় সিক্ত এ নেতাকে অপদস্ত করার প্রথম পদক্ষেপ শুরু হয় একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ইন্ধনে ২০১৭ সালে মাতারবাড়ীতে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতু পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জনসভায় সাবেক ছাত্রনেতা ওসমান গণির মিছিল পুলিশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া, কর্মী সমর্থকদের মিছিলে বাধা প্রদান ও ব্যানার কেড়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। এ অপশক্তির লক্ষ্য ছিল উত্তর মহেশখালী তথা হোয়ানক, কালারমারছড়া, শাপলাপুর, ধলঘাটা, মাতারবাড়ী এ বৃহত্তর অবহেলিত এলাকার ভোট ব্যাংক বরাবরই ওসমান গণির সমর্থক।

তাই সেই ভীতিতে অস্থির হয়ে চেষ্টা করেছিল ওসমান গণির সমর্থকদের দমানোর জন্য যাতে জনসভায় যোগ দিতে না পারে। কিন্তু দমাতে পারেনি হাজার হাজার জনতার দাবানল। সেদিন মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গগণ বিদারী চিৎকারে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে জনসভার মাঠ কানায় কানায় ভরে ওঠে ওসমান গণির সমর্থক দের মিছিলে। ২০হাজার এর অধিক জনতাকে সাথে নিয়ে ওসমান গণি প্রবেশ করেছিল মাতারবাড়ী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জনসভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ হয়ে যান বিস্মিত। যা গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করেছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সড়ক ও সেতু পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

সেদিন থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হালখাতায় রদবদল হতে শুরু করে উক্ত সংসদীয় আসনের হিসেব-নিকেশ। সেদিনের সেই জনতার উচ্ছাস, ভালবাসাকে কাঁধে ভর করে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যেতে থাকেন তৃণমূল বান্ধব সাবেক ছাত্র নেতা ওসমান গণি। কিছুদিন যেতে না যেতেই আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু পরিবহনমন্ত্রী জননেতা ওবায়দুল কাদের ফের জনসভার স্থান নির্ধারন করেন চকরিয়া বাস টার্মিনাল মাঠে। সেখানে পার্শ্ববর্তী সংসদীয় আসনের কর্মী সমর্থক দের নিয়ে জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত করে যখন ওসমান গণি ২০হাজার এর অধিক সমর্থকদের নিয়ে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক সে সময় ফের মাথা ব্যথা হয়ে যায় উক্ত প্রভাবশালী রাজনীতিকের।

ওসমান গণির সমর্থকদের ভাড়া করা ২ শতাধিক গাড়ী রিকুইজিশন করে এবং ড্রাইভারদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে হুমকি প্রদর্শন করেছিল পুলিশ। সে সময় এক ড্রাইভারকে উক্ত বিতর্কিত এসআই রাজু আহমেদ গাজীর মোবাইল ফোনে হুমকি দানের অডিও সে সময় ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরও দমেনি ওসমান গণির সমর্থকেরা। তারা যে যেভাবে পারে বদরখালী পৌঁছালে সেখান থেকে হাজার হাজার জনতাকে সাথে নিয়ে ওসমান গণি যোগদান করেন চকরিয়ায় দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রধান অতিথির ভাষণ রাখা জনসভায়।

এদিকে এহেন নেতিবাচক কর্মকান্ডে ফুসে উঠছে মহেশখালী – কুতুবদিয়ার তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারন ভোটাররা। প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি দলীয় এক নীতিনির্ধারণী সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও সাংসদদের আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচার ও গণসংযোগকে ইতিবাচক আখ্যা দিয়ে সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাধা প্রদান না করার সুনির্দিষ্ট জোর নির্দেশনা থাকলেও মহেশখালী-কুতুবদিয়া সংসদীয় আসনে বারবার ষড়যন্ত্রের জালে আটকা পড়ছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়ার মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা তৃণমূল বান্ধব নেতা হিসেবে পরিচিত সাবেক ছাত্রনেতা ওসমান গণি।

এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ওসমান গণির বলেন, ‘মহেশখালী-কুতুবদিয়ার একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধি আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি কাজ করে যাচ্ছি এ কাজে বাধা দান তার রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ”।

স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে ”বড় দলে প্রতিযোগিতা থাকবেই তার মানে এত হীনমানসিকতার পরিচয় কোন রাজনৈতিক নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মনোনয়ন প্রত্যাশা করা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী সকল নেতা-কর্মীর রয়েছে। তা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা না করে নেতিবাচকভাবে মোকাবেলা করাটা প্রমাণ করে রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব। তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ইন্ধনে এভাবে দলের পরিচ্ছন্ন তৃণমূল বান্ধব নেতা ওসমান গণিকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা হিতে বিপরীত হতে পারে। সম্প্রতি সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী ওসমান গণিকে নিয়ে সূদুর প্রসারী এক ষড়যন্ত্রে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার আমজনতা। এবারের দৃশ্যপট সম্পূর্ণ ভিন্ন।

অদম্য এ তরুণ জনপ্রিয় রাজনীতিককে দমাতে শুরু হয় দফায় দফায় ষড়যন্ত্র। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ বৃহত্তর কালারমারছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শরীফের সুযোগ্য পুত্র মহেশখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ -সভাপতি কালারমারছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উত্তর মহেশখালী আন্দোলনের অগ্রদূত জননেতা ওসমান গণি চেয়ারম্যানকে মধ্যযুগীয় কায়দায় সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করলে সে পরিস্থিতিতে উত্তেজিত জনতা হত্যাকারীদের বসতঘরে হামলা চালায়। উক্ত ঘটনায় হত্যাকারীদের পরিবার রাত ১ টায় ঘটনা দেখিয়ে পিআর-৭/১২ ইং মামলা দায়ের করেন। উক্ত পি,আর ৭/১২ ইং মামলাটি বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত মহেশখালী সি,আই,ডি কে তদন্তভার অর্পন করেন। সিআইডি উক্ত ঘটনার বিষয়ে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করিলে বিজ্ঞ আদালত তাহা আমলে নেয় এবং মামলাটি সিআর ৪৬/১৩ নং হিসেবে বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন আছে।

উক্ত সি,আর ৪৬/১৩নং মামলাটি বিচারাধীন থাকাবস্থায় দীর্ঘ ৬ বছর পর একই ঘটনা দেখিয়ে সি,আর,৪৬/১৩ মামলাটির বিষয় গোপন রেখে বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, মহেশখালীতে পুনরায় ঘটনার তারিখ ও সময় সি,আর,৪৬/১৩ ইং মামলার অনুরুপ উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বাদী হইয়া পিআর ৫৫/১৭ ও শফিউল আলম প্রকাশ বাহাদুর বাদী হয়ে পি,আর,৫৬/১৭ আলাদা আলাদা দুটি ফৌজদারী দরখাস্ত মূলে মামলা দায়ের করিলে বিজ্ঞ আদালত মহেশখালী থানার ওসিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। উক্ত ঘটনাকে মোক্ষম সুযোগ মনে করে লুফে নেন উক্ত শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা।

অভিযোগ মতে, উক্ত শীর্ষ নেতার হস্তক্ষেপে মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বিতর্কিত এসআই রাজু আহমেদ গাজীকে ম্যানেজ করে যৌথ মহড়ায় অভিনব নাটক সৃষ্টি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল কালে এজাহার বহির্ভূত ব্যক্তি তথা আবেদনকারীদের আবেদনে নাম না থাকার পরও ওসমান গণির রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাধাগ্রস্ত করা, তার তৃণমূল জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ওসমান গণির বিরুদ্ধে অভিযুক্ত হিসেবে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মূল আবেদনে অভিযুক্ত না হওয়ার পর ও থানা পুলিশ কতৃর্ক প্রতিবেদনে সাবেক ছাত্র নেতা ওসমান গণির নাম দেখে তালিকা থেকে উক্ত নাম অব্যাহতি দেন।

এ ঘটনা জানাজানি হলে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার রাজনৈতিক বোদ্ধা, সচেতন মহল, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আমজনতার মাঝে ক্ষোভের অনল ছড়িয়ে পড়ে। চায়ের কাপে আলোচনার ঝড়ে পরিণত হয়েছে একজন সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ক্লিন ইমেজের নেতাকে কিভাবে নিজ দলের প্রভাবশালী কতৃর্ক গাছ চুরি, গরু চুরির মত মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র দেখে। বাকরুদ্ধ, হতাশ হয়ে পড়েছে সুস্থ ধারার রাজনীতির কর্মীরা।

সর্বত্র আলোচনা আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের একজন অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জনপ্রিয়, কর্মী বান্ধব সর্বোপরি ক্লিন ইমেজের নেতাকে কিভাবে এত অপদস্ত করা হচ্ছে। চারদিকে রব উঠেছে উক্ত প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা এ সমস্ত কর্মকান্ডে কি জানান, দিচ্ছেন তার রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব? এ প্রশ্ন এখন মহেশখালী-কুতুবদিয়ার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মনে।

মহেশখালী পৌরসভার এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতার বিশ্লেষণ মতে একজন সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন বার্তা তৃণমূলে পৌছে দেওয়া একজন সম্ভাবনাময় নেতাকে রাজনীতির মাঠ থেকে বিতাড়িত করার এত হীন কর্মকান্ড সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কোনদিন মেনে নেবে না।

এ সময় তিনি আর ও বলেন, সাবেক ছাত্রনেতা ওসমান গণির সাথে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রয়েছে আত্মার বন্ধন এ বন্ধন শত ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে অব্যাহত থাকবে। উক্ত হীনমন্যতা নিয়ে যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী দের মাঝে ও বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।