আবদুর রাজ্জাক:
অভিভাবকের হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনার দুই মাস পার হতেই কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা খরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে এবার সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র বলৎকারের শিকার হয়েছে।
বুধবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভিকটিম (নাম প্রকাশ করা হলোনা) বর্তমান হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)তে চিকিৎসাধীন। ঘৃণিত ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় হাসপাতালে দেখতে যান কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নোমান হোসেন প্রিন্স। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এরপরই কক্সবাজার সদর মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযানে গিয়ে অভিযুক্ত দুই ছাত্রকে স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে রাত ১০ টার দিকে আটক করে। তারা হলো- উখিয়া মরিচ্যা এলাকার সুপাল শর্মার ছেলে হৃদয় শর্মা (১৪) এবং সদরের ঝিলংজা বাংলাবাজার ডিককুলের আলতাজ আহমদের ছেলে অহিদুল ইসলাম শাহীন (১৫)। তারা উভয়েই দশম শ্রেনীর ছাত্র। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নোমান হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে অভিযানকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সোলতান, ইউপি সদস্য শরীফ উদ্দিনসহ মান্যগন্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ভিকটিমের অভিযোগ (ভয়েস রেকর্ড সংরক্ষিত), সে হোস্টেলের ছাত্র। হৃদয় শর্মা ও অহিদুল ইসলাম শাহীন বেশ কিছু দিন ধরে তাকে বলৎকার করে আসছিল। তারা ঘটনাটি প্রকাশ না করতে ভিকটিমকে চাপ দেয়। ভয়ে ঘটনার কথা কাউকে বলেনি।
স্কুলের শিক্ষকরাও তাকে ঘটনাটি প্রকাশ না করতে ভয় দেখায়। অবশেষে কুসুমে ব্যথা অনুভব হওয়ায় বুধবার (৪ এপ্রিল) সকালে প্রকাশ করে।
বলৎকারের শিকার ছাত্রের মা (নাম প্রকাশ করা হলোনা) দুঃখ ও আবেগভরা ভাষায় বলেন, আমার ছেলেকে ভাল রেজাল্ট করার জন্য হোস্টেলে দিয়েছিলাম। হোস্টেলে ভর্তি করার পর প্রায় সময় তাকে নির্যাতন করা হতো বলে জানাতো। আমি বিশ্বাস করতাম না।
মনে করতাম, লেখাপড়ার ভয়ে এসব বলছে। এরপরও আমার বাচ্চাকে চাপ সৃষ্টি করে হোস্টেলে পাঠাই। পরবর্তীতে এ সমস্যার কথা শুনতে পাই।
আজ (৪ এপ্রিল) আমার ছোট বোন হোস্টেলে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করে, আব্বু তুমি কেমন আছ? এরপর সমস্যা সে তার খোলে বলে।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নোমান হোসেন প্রিন্স বলেন, খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিম ও তার মায়ের বক্তব্য শুনি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের অভিযান চালিয়ে দুই ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।