ইমরান হোসাইন, পেকুয়া:
পেকুয়ায় প্রথমবারের মত আয়োজনের শুরুতেই জমে উঠেছে পেকুয়ার বস্ত্র, হস্ত, কুটিরশিল্প প্রদর্শনী ও বিক্রয় মেলা। পেকুয়া সদরের মৌলভী পাড়া এলাকায় মেলা আরম্ভের তিনদিনেই বেচাকেনার ধুম পড়ে গেছে। পেকুয়া ও আশপাশের উপজেলার লোকজন মেলায় আসছেন কেনাকাটা করতে। বিক্রি বাড়ায় খুশি বিক্রেতারা। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলায় স্রোতের মতো মানুষ প্রবেশ করেছে।

সরেজমিন মেলা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে থাকেন। বিকালের পর স্রোতের মতো মানুষ মেলায় প্রবেশ করেন। সন্ধ্যার পর মেলার মাঠে হাঁটাচলা দায় হয়ে পড়ে। মেলায় আগতরা সাধ্যমতো উৎসবমুখর পরিবেশে কেনাকাটা করেন।

এদিকে আগত ক্রেতাদের টানতে সব স্টল প্যাভিলিয়নে ছিল লোভনীয় অফার। এ সুযোগে দু’হাত ভরে সাংসারিক পণ্য কিনেছেন সবাই। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আকর্ষণ ছিল কসমেটিক্স সামগ্রী ও দেশীয় ইলেকট্রুনিক্সের স্টলগুলো। একবারের জন্য হলেও ঢুঁ মেরে দেখে নিয়েছেন নতুন কোনো মডেলের পণ্য এসেছে কিনা, দাম কত? মেলার বেশ কয়েকটি স্টলে বিক্রি হচ্ছে কসমেটিক্স আইটেম। সাবান, শ্যাম্পু-তেল, টুথপেস্ট, সুগন্ধি, উইন্টার কেয়ার, স্কিন কেয়ার, ম্যানস কেয়ার ও কালার কসমেটিক্স বিক্রি হচ্ছে। এসব আইটেমের সঙ্গে বিশেষ ছাড় দেয়া হচ্ছে। এতে বিক্রিও বেড়েছে। এছাড়া কসমেটিক্স স্টলগুলোতে নারীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

এছাড়া মেলায় গৃহস্থলি বিভিন্ন পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ দেখা গেছে। প্লাস্টিক পণ্যের পাশাপাশি আগ্রহ রয়েছে প্রেসার কুকার, জুস মেকার, জুস ব্লেন্ডার, ওভেন, রাইস কুকার, ইস্ত্রি, ইন্ডাকশন চুলা, ফ্যানসহ নানা ধরণের ইলেক্ট্রনিক ও ইলেক্ট্রিক গৃহস্থলি পণ্যে।

মেলায় আগত গিয়াস উদ্দিন বলেন, পেকুয়ায় এধরনের মেলা আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। এতে আমরা কম মূল্যে ভাল পণ্য কিনতে পারছি। তাছাড়া বিনোদনের জন্য বিভিন্ন আইটেম গুলোও চমকপ্রদ। নিরাপত্তাও রয়েছে জোরদার।

অপর দর্শনার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, মেলা একটি বাঙ্গালী ঐতিহ্যের নিদর্শন। যা আমাদের কাছ থেকে হারাতে বসেছিল। পেকুয়ায় এমন একটি মেলা আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এর আগে আমাদের দূরদূরান্তে মেলা দেখতে যেতে হতো।

উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল থেকে মাসব্যাপী প্রথমবারের মত পেকুয়ায় বস্ত্র, হস্ত ও কুটিরশিল্প মেলার উদ্বোধন করা হয়। আপন কমিউনিকেশন কক্সবাজার আয়োজিত এবারের মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঐতিহ্যগত জিনিশপত্র নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন ক্রেতারা। এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। এ বছর মেলায় ৩৫টি ক্যাটাগরিতে মোট ৬০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৮টি। এছাড়া ফুড স্টল ৫টি, রেস্টুরেন্ট ১টি।

মেলা পরিচালনা কমিটির ম্যানেজার মোঃ রিয়াজ হোসাইন বলেন, দর্শনার্থীদের জন্য এখানে নির্মল বিনোদন ও কেনাকাটা সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা।

মেলার আয়োজক সাহেদ আলী সাহেদ বলেন, মেলার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাতে রাখা হয়েছে। এছাড়া পেকুয়া থানার পুলিশের একটি টিম সার্বক্ষণিক মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। সুষ্ঠ স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষ মেলা উপভোগ সহ কেনাকাটা করছেন।