জসিম মাহমুদ, টেকনাফ:

প্রথমবারের মতো কোনো সাঁতারু বাংলা চ্যানেলে ডাবল পাড়ি দিয়ে রেকর্ড করলেন ১৭ বছর বয়সী ভারতের পুনে কিশোর সাপান্না রমেশ সেলার। তিনি ডাবল সাঁতারে সময় নিয়েছেন ৯ ঘন্টা ১০ মিনিট। এ স্রোত ধারাটির নাম বাংলা চ্যানেল।
এটি টেকনাফ উপজেলার নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের সংযুক্ত টেকনাফ-সেন্ট মাটিন নৌপথে ‘শাহপরীর দ্বীপ জেটি থেকে সেন্ট মাটিন জেটি পযর্ন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দৈঘ্য। এভারেস্ট একাডেমীর উদ্যোগে এ প্রথম ডাবল “বাংলা চ্যানেল” সাঁতার পাড়ি দেন।
২০০৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলা চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়। এ চ্যানেলটি ‘বাংলা চ্যানেলে’র আবিষ্কারক প্রয়াত আলোকচিত্রী কাজী হামিদুল হকের তত্ত্বাবধানেই প্রথম বারের ফজলুল কবির সিনা, লিপটন সরকার এবং সালমান সাঈদ এ চ্যানেলটি পাড়ি দেন।
গত শুক্রবার সকাল ৫টা ৪০ মিনিটে সেন্ট মার্টিনের জেটি থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি পর্যন্ত আসতে প্রথমে সা¤পান্নার সময় লেগেছিল ৫ ঘণ্টা। সেখানে পৌঁছানোর পর তিনি ১০ মিনিট বিশ্রাম নেন। পরে পুনরায় শাহপরীর দ্বীপ জেটি থেকে সেন্ট মার্টিন অভিমুখে ফিরতি সাঁতার শুরু করেন। দ্বিতীয় বারে তার সময় লাগে ৪ ঘণ্টা। তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় সাঁতারু। এ সময় তাকে “প্রথম ডাবল সাঁতারে ‘বাংলা চ্যানেল’ পাড়ি দেওয়াই মেডেল পড়িয়ে দেন এভারেস্ট জয়ী প্রথম বাংলাদেশি ও এভারেস্ট একাডেমীর চেয়ারম্যান মুসা ইব্রাহীম। সঙ্গে ছিলেন কোচ জিতেন্দ্র খাসনিস, ফিজিওথেরাপি সেবা প্রদানকারী সংস্থা হেলদি হোমের সিনিয়র ফিজিও নূর আহমদ এবং কক্সবাজারের সিআইপিআরবি-সি সেইফ লাইফ গার্ডের উদ্ধারকর্মী কামাল হোসেন। এসময় সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জনসাধারণের পক্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় ডাবল বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়া ভারতীয় সাঁতারু সাপান্নাকে।

সেন্ট মার্টিন ইউপির ২ নং ওযার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, দেশী-বিদের্শী সাঁতারুদের অংশ গ্রহণে বাংলা চ্যানেলের পরিচিত বাড়ছে। এটি পযর্টনের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানও রাখছেন। সরকার এ চ্যানেলটি প্রতি একটু বিশেষ নজর দিলে বিশেষ নামী-দামী সাঁতারুরা এখানে এসে পাড়ি দিবেন।
এর আগে ২০১৬ সালে প্রথম এ চ্যানেলটি পাড়ি দিয়েছিলেন আরেক ভারতীয় সাঁতারু রিতু কেডিয়া। তিনি অবশ্যই একবার সাঁতারে সময় নিয়ে ছিলেন ৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট। তিনি ছিলেন এ চ্যানেলের প্রথম নারী সাঁতারু।

এভারেস্ট একাডেমীর চেয়ারম্যান মুসা ইব্রাহীম বলেন, এ চ্যানেলটি আবিষ্কারের পর থেকে কোনো সাঁতারু ডাবল সাঁতার দেননি। এবারই প্রথম ভারতীয় সাঁতারু সাপান্না রমেশ সেলার ৯ ঘন্টা ১০ মিনিটে ৩২ দশমিক ২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নতুন রেকর্ড করেছেন।
সাপান্না রমেশ সেলার বলেন, এই বাংলা চ্যানেল সাঁতারে নতুন লক্ষ্য নিয়ে ফিরতে চান তিনি। আগামী ২০১৯ সালে এই বাংলা চ্যানেল টানা চারবার সাঁতারে পার হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।