বিশেষ প্রতিবেদক:
দীর্ঘ ১৩ বছর পর বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে অনেকটা উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা। তৃণমুলে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে সকাল ১০টায় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন আরম্ভ হবে। দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষভোটে নির্বাচিত হবে নতুন নেতৃত্ব। এ জন্য ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আয়োজক কমিটি।
বহুল প্রতীক্ষিত জেলা যুবলীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে লড়ছেন সোহেল আহমদ বাহাদুর। তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বি এ পর্যন্ত মাঠে দেখা যায়নি। কাউন্সিলরদের মুখেও কিবল্প প্রার্থীর নাম শুনা যায়নি। সে হিসেবে সভাপতি পদটি অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন।তবে দলের একটা সুত্র মারফত জানা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল অাজিম কনকও সভাপতি পদে ভোট করবেন। তাকেও অবহেলা করা যাবেনা।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের ৪২ বছরের সভাপতি প্রয়াত একেএম মোজাম্মেল হকের সুযোগ্য ছেলে ও বর্তমান জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি শহিদুল হক সোহেল।
সাধারণ সম্পাদক পদে আরেক প্রার্থী হলেন বর্তমান শহর যুব লীগের আহবায়ক শোয়েব ইফতেকার চৌধুরী। তিনি জেলা যুবলীগের বর্তমান সভাপতি খোরশেদ আলমের ভাগ্নে।
দলের নেতাকর্মীরা যেটি বিবেচনায় আনছে সেটি হচ্ছে, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শহিদুল হক সোহেল জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও দীর্ঘ ৪২ বছরের অভিভাবক বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর একেএম মোজাম্মেল হকের যোগ্য উত্তরসুরী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে থাকা অবস্থায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠিসহ একেএম মোজাম্মেল হকের নিকট পাঠিয়েছিলেন। শেখ পরিবারের সাথে মোজাম্মেল পরিবারের চমৎকার বন্ধন রয়েছে।
সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত শহীদুল হক সোহেলের পুরো পরিবারই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ব্যক্তিগতভাবে তিনি মাঠ থেকে উঠে আসা কর্মীবান্ধব নেতা। তাছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারনী বৈঠকে শহীদুল হক সোহেলকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী করা হয়। সব দিক বিবেচনায় তার অবস্থান অনেকটা পোক্ত। অধিকাংশ কাউন্সিলররাও তাকে সাধারণ সম্পাদক দেখতে চায়।
দলের একটি সুত্র জানিয়েছে, সভাপতি পদের প্রার্থী সোহেল আহমদ বাহাদুর বর্তমান জেলা যুব লীগের সভাপতি খোরশেদ আলমের ভাগ্নে জামাই, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শোয়েব ইফতেকার চৌধুরী ভাগ্নে। সে হিসেবে একই পরিবারে দুই নেতৃত্ব তুলে দিতে চাননা কাউন্সিলররা। অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, ৩১০ জন কাউন্সিলরের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শহিদুল হক সোহেলের পক্ষে অধিকাংশ কাউন্সিলর।
সাধারণ সম্পাদক পদে আরো কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন পুতু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ, সাবেক ছাত্রনেতা ডালিম বড়ুয়া, জেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মাবুর ছোট ভাই মাসুকুর রহমান বাবু, টেকনাফ উপজেলা যুব লীগের সভাপতি নুরুল আলম, চকরিয়া উপজেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার উদ্দিন কছির। তারাও নিজের অবস্থানে কেন্দ্র, জেলা ও তৃণমূলে যোগাযোগ রেখেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহীদ দৌলত ময়দানে সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ ওমর ফারুক চৌধুরী।
প্রধান বক্তা থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনুর রশীদ।
যথাসময়ে কাউন্সিলারদের সভাস্থলে উপস্থিত আহবান জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শহিদুল হক সোহেল। তিনি বলেন-ভয়ভীতি দিয়ে কোন কাজ হবে না। সকল নেতাকর্মীরা শতভাগ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে মূল্যবান ভোট দিয়ে আগামী দিনের যুবলীগের নেতা নির্বাচন করবেন।
সম্মেলন ও কাউন্সিলের বিষয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী মাবু বলেন, কোন অপশক্তি বহুল কাংখিত জেলা যুবলীগের এই সম্মেলন বানচাল করতে পারবে না। নেতাকর্মীদের মাঝে সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে তা শেষ পর্যন্ত থাকবে। সেজন্য তিনি দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর সহযোগিতা চান তিনি।