তথ্য-প্রযুক্তি ডেস্ক:

ফেসবুকে যা করছি তা আমি ছাড়া কেউ জানে না, এমনটি মনে করেন অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী। এই ভেবে নিজের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যও বিভিন্নভাবে ফেসবুকে শেয়ার করেন তারা। যা নিজের অজান্তেই এক সময় বিপদ ডেকে আনে।

সম্প্রতি পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য অপব্যবহার হওয়ায় সচেতন ব্যবহারকারীরা নড়েচড়ে বসেছেন। তারা প্রশ্ন তুলছেন, ব্যবহারকারীর শেয়ার করা তথ্য সংরক্ষণ করার এখতিয়ার কি ফেসবুকের আছে?

এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিবিসির প্রযুক্তি সাংবাদিক ররি সেলান জোনস বিভিন্ন বিষয় তুলে এনেছেন। তিনি তার লেখায় তুলে ধরেছেন, কীভাবে গ্রাহকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ করে ফেসবুক।

আপনার সম্পর্কে ফেসবুক কী তথ্য সংরক্ষণ করে রেখেছে তার প্রাথমিক একটি ধারণা পেতে পারেন সেটিংসে গিয়ে। ফেসবুকে লগইন করে সেটিংসে যান। সেখানে ‘জেনারেল অ্যাকাউন্ট সেটিংস’ অপশনের নিচে ‘ডাউনলোড আ কপি অব ইওর ফেসবুক ডাটা’ অপশনটি সিলেক্ট করে ‘স্টার্ট মাই আর্কাইভ’ ক্লিক করুন।

এভাবে নিজের আর্কাইভ ডাউনলোড করার পর সিকিউরিটি চেক পার হতে হবে। তারপর আর্কাইভে প্রবেশ করে হয়তো অবাক হয়ে যাবেন। কারণ, ফেসবুক আপনার সম্পর্কে এমন সব তথ্য সংরক্ষণ করে রেখেছে যেগুলোর কোনোটি হয়ত নিজেও ভুলে গেছেন।

শুরুর দিকে মনে হতে পারে, এটা কোনও ব্যাপার নয়। এগুলো সাধারণ তথ্য। অনেকে ভাবতে পারেন, যেসব পোস্ট, ছবি বা ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে, সেগুলোই হয়তো সংরক্ষণ করেছে ফেসবুক।

কিন্তু একটু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বিষয়টি আপনার মধ্যে ভীতি জন্মাতে পারে। কারণ, তারা আপনার ফোন নম্বরের সাহায্যে আপনার কন্টাক্ট লিস্টে থাকা সবার ফোন নম্বর সংক্ষরণ করে। বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রেই এমনটি হয়ে থাকে।

এ সম্পর্কে বিবিসির সাংবাদিক ররি সেলান জোনস লিখেছেন, ‘আমি সাধারণ কিছু ছবি ও ভিডিও প্রত্যাশা করছিলাম। কিন্তু তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখি, গত এক দশকে আমার জীবনে যা যা ঘটেছে তার সবই সংরক্ষণ করেছে তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৭ সালে ফেসবুক আইডি চালুর পর কী হয়েছিল আমার মনে নেই। কিন্তু ফেসবুক এসব তথ্য ঠিকই সংরক্ষণ করে রেখেছে। শুধু তা-ই নয়, গত কয়েক সপ্তাহে আমি যেসব ফোন নম্বর মোবাইলে সেভ করেছি, তার প্রতিটি ফেসবুকে সংরক্ষিত আছে। তার মানে, ফোনের ডাটাবেসে আমি যে তথ্যই দিচ্ছি তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুকে সেভ হয়ে যাচ্ছে।’

ফেসবুক শুধু এভাবেই তথ্য সংরক্ষণ করে না। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলছেন, অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে করা সব টেক্সট মেসেজও ফেসবুক সংরক্ষণ করে থাকে। এছাড়া, ফেসবুকে অনেক মজার অ্যাপসহ অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। যা ফেসবুক সংরক্ষণ করে এবং এগুলো অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকে যায়।

সূত্র: বিবিসি