সংবাদদাতা:
কক্সবাজার শহরের বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনসারীর বিরুদ্ধে কুচক্রিমহলের ইন্দনে মিথ্যাচার করা হয়েছে দাবী করেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
সোমবার (২৬ মার্চ) বিকালে সংবাদ সম্মেলনে গৌরাঙ্গ মল্লিকের ছেলে নারায়ন মল্লিক বলেন, ঝিলংজা মৌজার আর.এস খতিয়ান ১৬০ আমার পিতামহ সারদাচরণ কৃঞ্চমালির পিতা বিসম্বর এর স্তিত আছে। উক্ত আর.এস খতিয়ানের বিপরীতে ১৮০৫ বি.এস খতিয়ান স্তিত আছে। যাতে সানন্দ মোহন সারদা চরণ কৃঞ্চমালি লিপি আছে। উক্ত জমির ৯টি দাগেই দীর্ঘ দিন ধরে আমরা ভোগ দখলে আছি।
সারদা প্রকাশ কৃঞ্চমালি ওয়ারিশ হিসেবে কেবল ১৮ শতক জমিতে দখল রয়েছে। বাকী জমি সুনিল মল্লিক, সুলাল মল্লিক, কল্পনা মল্লিক গং সানন্দ মোহন মালীর অংশ বিক্রি করে নিঃস্বত্ত্ববান হয়ে যায়। আমরা সারদা প্রকাশ কৃঞ্চমালিকের ওয়ারিশদের সম্পত্তি অবিক্রিত রয়েছে। বিএস ১৮০৫ খতিয়ানের ১৮ শতক জমিতে ভোগ দখলে আছি। বিএস ১৮০৫ খতিয়ান থেকে ১৪৪৯৮ খতিয়ান সৃজন করে উক্ত জমিতে ভোগ দখলে আছি। সেখান থেকে .০৮ শতক জমি শফিউল্লাহ আনসারীকে ২৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্য ধার্য্য করে নগদ ১০ লাখ টাকা নিয়ে বিক্রি করি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর কবলা গ্রহণে অনুমতি প্রদান করেন। বায়না রেজিস্ট্রি দেয়ার পর যথারীতি তাকে দখল অর্পন করি। শফি উল্লাহ আনসারী ক্রয়সুত্রে জমির বৈধ মালিক। তিনি কোন অবৈধ দখলদার নন। নিজ জমিতে তিনি স্থাপনা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, শফি উল্লাহ আনসারীকে একটি চক্র সন্ত্রাসী, দখলবাজ আখ্যা দিয়ে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা মোটেও সত্য নয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার মান ক্ষুণœ করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে নারায়ন মল্লিক বলেন, ৬৪/২০১৮ নং মামলার প্রেক্ষিতে উক্ত জমিতে কেন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করা হবেনা মর্মে শোকজ জারী করেন কক্সবাজার সদরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক। কিন্তু সুনিল মল্লিক গং আদালতের সেই মামলা গোপন করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের ১৪৪ চেয়ে এম.আর মামলা ২৪৮/২০১৮ দায়ের করে। আদালত মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্তিতি অবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেয়। সেই সঙ্গে ২৫ মার্চ স্থিতি অবস্থার অনুবলে পুলিশের বেআইনী হস্তক্ষেপ বন্ধ করে হিন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয় আদালত।
প্রতিপক্ষের মিথ্যা তথ্য, অপপ্রচার খন্ডন করে নারায়ন মল্লিক আরো বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান কৃঞ্চমালির নামে প্রথমে মৃত্যু সনদ প্রদান করেন। পরে কৃঞ্চমালি নামের কোন ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই মর্মে সুনীল মল্লিককে ওয়ারিশ সনদ/প্রত্যয়ন প্রদান করেন।
এ বিষয়ে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের জমিতে অনৈতিকভাবে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেন বিসম্বরের নাতি নারায়ন মল্লিক। এ সময় তাদের অন্যান্য ওয়ারিশরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিউল্লাহ আনসারী বলেন, আমি একটি সাধারণ পরিবারের সন্তান। আমার নামে কোথাও চাঁদাবাজি তো দূরের কথা, সাধারণ অভিযোগও কেউ দেখাতে পারবেনা। যা করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ সাজানো, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একটি মহল তাতে সরাসরি ইন্দন দিচ্ছে। প্রকাশিত সংবাদে বৈশাখী মিস্টিভান্ডারে যে ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা ডাহা মিথ্যা। এ রকম কোন ঘটনাই ঘটেনি। আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম, কেউ ঘটনার প্রমাণ দেখাতে পারবেনা।
তিনি বলেন, আমি বৈধভাবে জমি কিনেছি। সে হিসেবে আমি তৃতীয় পক্ষ। ঝামেলা থাকলে প্রথম পক্ষ-দ্বিতীয় পক্ষ বসেই সমাধান করবে। তাতে আমাকে জড়ানোর উদ্দেশ্য কি? তদন্ত করলে আপনারা স্পষ্ট হবেন। থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।তিনি আরো বলেন, কথিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজকরা ব্যানারে আমার ছবি ব্যবহার চরম সম্মান ক্ষুন্ন করেছে। যা আইনগত দ-নীয় অপরাধ। আমি এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
অপপ্রচারকারীদের উদ্দেশ্যে শফিউল্লাহ আনসারী বলেন, আমি শান্তি প্রিয় মানুষ। জীবনে কারো ক্ষতি করিনি। ঝামেলায় যেতে পছন্দ করিনা। আমার ৩টি সন্তানের মাথা গুজার ঠাঁই নিশ্চিত করতে নগদ টাকায় রেজিস্ট্রার্ড জায়গা কিনেছি, অপরাধ করিনি। আমাকে ‘ভূমিদস্যু’ বানানোর অপচেষ্টা করবেন না। ৩ সন্তানের পরিবার নিয়ে আমি শান্তিতে থাকতে চাই। আমাকে শান্তিতে থাকতে দিন। অনর্থক আমার সম্মান হানি করার চেষ্টা করবেন না। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা সংখ্যালঘুকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। হয়রানী থেকে বাঁচতে আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের আশ্রয় নিয়েছি। তাদের সহযোগিতা চেয়েছি।
শ্রমিক লীগ নেতা শফিউল্লাহ আনসারী দুঃখ করে প্রশ্ন তুলেন, আমার মতো মানুষের এ অবস্থা হলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা হবে?
এ সময় তিনি স্বপক্ষে প্রমাণপত্র সাংবাদিকদের উপস্থাপন করেন। সেই সাথে গণমাধ্যমকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।