এম.এ আজিজ রাসেল:
“সবকটা জানালা খুলে দাওনা, আমি গাইব গাইব বিজয়েরই গান, ওরা আসবে চুপি চুপি যারা এই দেশটাকে, ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ”। হঠাৎ চারপাশ অন্ধকারের ঘনঘটায় রূপ নেয়। কোথাও কোন আলো নেই। নিভেছে রাজপথ, শপিং মল থেকে শুরু করে ঘরের আলোও। সারা দেশের ন্যায় এক মিনিট আলো নিভিয়ে (ব্লাক আউট) বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতের শহীদদের স্মরণ করলো সর্বস্তরের মানুষ। এই সময় সবার হাতে হাতে জ্বলে উঠে মোমবাতি। শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয় কর্মসূচীস্থল। একইসঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ঘর বাড়িতেও আলো নিভিয়ে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ২৫ মার্চ ঠিক নয়টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ব্লাক আউট এই কর্মসূচী পালন করা হয়। ৯টা এক মিনিট পর ফের আলোকিত হয় সর্বত্র। পরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন। তিনি বলেন, এই রাতে হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরীহ বাঙালির ওপর। নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে নির্বিচারে। থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন। কিন্তু বাঙালি জেগে উঠেছিল। সেই হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘কালরাতকে স্মরণ করতে এই কর্মসুচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একমিনিট আলো বন্ধ রাখার মধ্য দিয়ে এই কালরাতকে স্মরণ করেছে মানুষ। যে রাতে অনেক মেধাবি মানুষ হারিয়ে গেছে বাঙালির জীবন থেকে।’ তিনি বলেন, ‘মানুষকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি, তারা নিজস্ব উদ্যোগে সব শহীদের স্মরণে আলো বন্ধ রেখেছে। তারা আরও বলেন, ‘অন্য যেকোনও দিনের চেয়ে এই দিন শুধু আমাদের কাছেই নয়, বিশ্বের গণহত্যার ইতিহাসে এক অনন্য উদাহরণ ও স্মরণযোগ্য দিন। এক দিনে এত মানুষ হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে চেয়ারম্যান কর্ণেল (অবঃ) ফোরকান আহমদ, সিভিল সার্জন ডাঃ আবদুস সালাম, এডিএম খালেদ মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের নেতা রেজাউল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. রনজিত দাশ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্সসহ সরকারি-বেসরকারি পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া কর্মসূচীতে অংশ নেয় জেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী রীগ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড, দমকল বাহিনী, সিভিল সার্জন অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, জেলা জাসদ, কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় পার্টি, জেলা ক্রীড়া সংস্থাসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তর, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠন।