ডেস্ক নিউজ:

ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানম টপির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তার কিডনি রেসপন্স কম করছে। ব্লাড প্রেসারও কমে গেছে। উন্নত যা চিকিৎসা দেশেই সম্ভব। বিদেশে নিয়ে যাবার মতো অবস্থাতেই নেই টপি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক বদরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

আফসানা খানমের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানাতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার সংবাদ সম্মেলনে বদরুল আলম বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ‘আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে পৃথক ৭ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছি। আজকের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘আফসানা টপি’র অবস্থার অবনতি হয়েছে। তার অবস্থা খারাপের দিকে। কিডনির কাজ করার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ব্লাড প্রেসারও কমে যাচ্ছে। এরপরও আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি লাইফ সাপোর্ট চালিয়ে যাবো।’

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ‘লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলার মতো অবস্থায় এখন নেই। আর বিদেশে নিয়ে যাওয়ার মতো কিছু নেই। বিদেশে যে জন্য তাকে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে সেসব ধরনের উন্নত চিকিৎসা আমাদের এখানেই আছে।’

তিনি বলেন, ‘তার শারীরিক লক্ষণ যা দেখলাম তাতে ক্লিনিক্যাল ডেডও বলা যাবে না। উনি ডায়াবেটিক ছিলেন, আর স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ দুটিই তার এই অবস্থার কারণ বলে মনে হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় পাইলট আবিদ সুলতানকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও একদিন পর ১৩ মার্চ তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

আফসানার এক আত্মীয় জানান, এভাবে স্বামীর মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না আফসানা খানম। স্বামীকে হারিয়ে কখনও বাকরুদ্ধ কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। স্বামী মারা যাননি, সবাই মিথ্যা কথা বলছে, আবিদ ফিরে আসবে, আবিদ তাকে সঙ্গে না নিয়ে মরতে পারে না- এমন প্রলাপ বকতে থাকেন।

এ অবস্থায় রোববার বাসায় ব্রেইন স্ট্রোক করেন তিনি। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় গত রোববার সকালে আফসানাকে বাসা থেকে উত্তরার একটি ক্লিনিকে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তাকে আগারগাঁওয়ের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় অস্ত্রোপচারের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। এর পরদিন রাতে তিনি ফের স্ট্রোক করেন। এরপর চিকিৎসকরা জানান, তিনি বেঁচে আছেন তবে তার শারীরিক অবস্থা ক্রিটিক্যাল।