ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ কোন দুর্নীতিবাজের সঙ্গে নেই। আজ চট্টগ্রামের পটিয়ায় দলের জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তারা আইন মানবে না, কানুন মানবে না-এমনই তাদের চরিত্র। তারা জনগণের সম্পদ, এতিমের টাকা লুটে খাবে। আর এজন্য আদালত শাস্তি দিল কেন? এজন্য হুমকি, ধমকি আন্দোলন।’ প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেই বলেন, জনগণ কোন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবাজের সঙ্গে নেই। বাংলাদেশ হবে শান্তির দেশ।’ বাসস বাংলা।

পটিয়া সরকারি কলেজ এবং আদর্শ স্কুল মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করে। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি মুসলেম উদ্দিন আহমেদ। বক্তব রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অন্যান্যের মধ্যে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রামের মেয়র আজম নাসির উদ্দিন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান বক্তব্য রাখেন।

খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা এবং কারাবাস সম্পর্কেকথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এতিমখানার জন্য বিদেশ থেকে টাকা এসেছে। আপনারা চিন্তা করে দেখেন পবিত্র কোরাআন শরীফে লেখা আছে এতিমের হক কেড়ে নিওনা। আর তারা কোরআন শরীফের নির্দেশ অমান্য করেছে। এতিমের টাকার একটি টাকাও এতিমখানায় যায় নাই। সব নিজেরা আত্মস্যাৎ করেছে। এই মামলা আওয়ামী লীগ সরকার নয়, বরং খালেদা জিয়ার পছন্দের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দিন এবং সেনাপ্রধান মইনউদ্দিন দিয়েছে। সেই মামলা রুজু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন আর রায় দিয়েছে আদালত।’

বাবা, মা, ভাই ও স্বজনসহ সব হারানো শোকব্যথা বুকে নিয়েও তাঁর একটাই কাজ, উল্লেখ করেন জাতির পিতার কন্যা। তিনি বলেন, ’আমার একটাই চাওয়া-পাওয়া। আর তা হচ্ছে এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। প্রতিটি মানুষ অন্ন পাবে, রোগে শোকে চিকিৎসা পাবে, মাথা গোঁজার ঠাই পাবে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি মানুষ উন্নত জীবন পাবে এবং সুন্দরভাবে বাঁচবে।

তিনি সকলের দোয়া ও আশির্বাদ চেয়ে তাঁর রাজনীতি জনকল্যাণের জন্য উল্লেখ করে বলেন, আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনরা নৌকা মার্কায় ভোট দিন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন দিতে পারবো। আমরা যদি নৌকায় ভোট পেয়ে আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারি তাহলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকবে ‘

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধের সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং মাদক বিরোধী আন্দোলনে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের অন্তর্ভুক্তিও কামনা করেন। তিনি ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের ধর্মের মৌলিক শিক্ষা এবং মর্মবাণী মানুষের কাছে তুলে ধরার আহবান জানিয়ে বলেন, নিরীহ মানুষ খুন করলে কেউ বেহেশতে যেতে পারে না, তাকে দোজকে যেতে হবে, এটা সকলকে বোঝাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং মাদক থেকে আপনজনকে দূরে রাখতে আপনাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রামবাসীকে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ’প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে হলেও আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সুন্দর জীবন দিবো। সেই ওয়াদা করছি। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কারণ সব সময় আপনাদের সহযোগিতা পেয়েছি। আমি যখন দেশে এসেছি তখন আপনাদের মধ্যে খুঁজে পেয়েছি হারানো বাবা-মা ও ভাইয়ের স্নেহ। তাই আপনাদের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত।’