ইমাম খাইর, সিবিএন:
কক্সবাজার সদর উপজেলার ১৯টি হাটবাজারের ইজারা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ১৫ মার্চ সদর উপজেলা প্রাঙ্গনে উন্মুক্ত ডাক হয়। এতে ইজারাদাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ৩ গুণের চেয়ে বেশী বাজার রাজস্ব আদায় হয়েছে সরকারের। বিশেষ করে গরুর জন্য প্রসিদ্ধ খরুলিয়া বাজার অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভঙ্গ করে ডাক হয়। এ বাজার বিগত সময়ে ৭৫ লাখের বেশী ডাক হয়নি। সেখানে এ বছর ১ কোটি ৬০ লাখ ডাক হয়েছে। যা ভ্যাট আয়করসহ মোট ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
কক্সবাজার সদর উপজেলা সুত্রে জানা গেছে, সদরের বৃহৎ বাজার খরুলিয়া অতীতে একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এবার কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শক্তহাতে নিয়ন্ত্রণের কারণে কোন সিন্ডিকেট সুবিধা করতে পারেনি। এতে করে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে। এই একটি বাজার থেকে সরকার প্রায় তিনগুন রাজস্ব পেয়েছে।
সুত্র জানিয়েছে, শুধু খরুলিয়া বাজারের ৪৯ টি সিডিউল বিক্রি হয়। জমা পড়ে ১৬টি। প্রতি সিডিউল মূল্য ১৬,২০০ টাকা হিসাবে এই খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ টাকা। যা খরুলিয়া বাজারে ইতিহাসে রেকর্ড।
গত বছর খরুলিয়া বাজার ডাক হয় (২০ শতাংশ ভ্যাট আয়কর বাদে) ৭৫ লাখ টাকা। এর আগের বছর ডাক হয় ৬৭ লাখ টাকা। এবছর খরুলিয়া বাজারের উন্মুক্ত ডাকে প্রথম হয়েছে হাসান মুরাদ। তিনি সরকারী মূল্য ৭৭ লাখ ৪ হাজার ৪৩৪ টাকার বিপরীতে ডেকেছেন ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যা ভ্যাট-আয়করসহ দাঁড়াবে ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন শাহজাহান আনসারী। তিনি ডেকেছেন ১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা বাজার দর দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছেন কেএম আবদুর রহিম। এভাবে আবদুল মান্নান ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, রহিম উদ্দিন ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, মুহাম্মদ আলম ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা, শরিফ উদ্দিন ১ কোটি ৩০ লাখ টাকাসহ ১৬ জন ইজারাদার খরুলিয়া বাজার ডাকে অংশ নেয়।
একইভাবে সদর উপজেলা পরিষদ কাঁচা বাজার ৩২ লাখ টাকা, ঈদগাঁও কালিরছরা বাজার ৩২ লাখ টাকা, লিংকরোড় বাজার ২৫ লাখ টাকা, বাংলাবাজার ১৫ লাখ টাকা, পিএমখালী জুমছড়ি চেরাংঘর বাজার ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা, ইসলামাবাদ ফকিরাবাজার ৫ লাখ ১০ হাজার ডাক হয়। এভাবে সদরের মোট ১৯টি বাজার উন্মুক্ত ডাক হয়। প্রত্যেক বাজারের দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়েছে। যা সরকারী রাজস্ব খাতকে শক্তিশালী করেছে।
প্রথম পর্যায়ে ১৪ মার্চ, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২১ মার্চ এবং সর্বশেষ ২৮ মার্চ সিডিউল বিক্রি করা হয়। প্রতিটি সিডিউল মূল্য নেয়া হয় ১৬ হাজার ২০০ টাকা। সিডিউল বিক্রি করে খরুলিয়া বাজার ডাকে সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা আদায় হয়েছে।
এদিকে খরুলিয়া বাজার অতীতের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ ডাক নেয়ায় সাধারণ মানুষের উপর টুলের বোঝা বাড়িয়ে দেয়ার আশংকা করছে স্থানীয়রা। যাতে টুল আদায় নিয়ম মাফিক হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নোমান হোসেন বলেন, খরুলিয়া বাজারকেন্দ্রিক দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে সরকার রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আয় করেছে। অন্যান্য বাজারের বেলায় কোন ধরণের অনিয়মের সুযোগ দেয়া হয়নি। স্বচ্ছতার সাথে ইজারা সম্পন্ন হয়েছে। তাই এবছর সরকার প্রতি বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব আয় করেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সবার সহযোগিতা দরকার। এক্ষেত্রে নিয়মের অতিরিক্ত টুল/হাসিল আদায়ের অভিযোগ পেলে ইজারা বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।