মো. নুরুল করিম আরমান, লামা:

বান্দরবানের লামা, আলীকদম ও থানচি উপজেলার সড়ক উন্নয়নের লক্ষে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সড়ক উপ-বিভাগ-১ এর অন্তর্ভুক্ত লামা উপজেলার লাইনঝিরি এলাকায় স্থাপিত স্ট্যাকইয়ার্ডের জায়গা বেদখলের অভিযোগ ওঠেছে। ইতিমধ্যে স্ট্যাকইয়ার্ডের ১০.৮০ একর জায়গার মধ্যে ২.৮০ একর জাযগা বেদখল হয়ে গেছে। জায়গা বেদখল হয়ে যাওয়ায় ও সীমানা জটিলতার কারণে বর্তমানে স্ট্যাকইয়ার্ডের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত ভূমি বিরোধ নিরসন করা গেলে স্ট্যাক ইয়ার্ডের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্নসহ উন্নয়নে আরো বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সওজ কর্তৃপক্ষ।

সওজ সূত্র জানায়, বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের লামা, আলীকদম ও থানচি উপজেলার প্রায় ২১০.৪৪ কিলোমিটার সড়ক মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য উপজেলার লাইনঝিরিস্থ স্ট্যাক ইয়ার্ডটি সংরক্ষিত রয়েছে। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইসিবি সড়ক প্রকল্পের ক্যাম্পের জন্য ১০.৮০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করে (জায়গার হুকুম দখল মামলা নং-৭-৩/৮৫)। পরবর্তীতে সড়কসহ স্ট্যাক ইয়ার্ডটি বান্দরবান সওজ বিভাগের সড়ক উপ-বিভাগ-১ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে এ স্ট্যাকইয়ার্ডে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলীসহ মাস্টাররোলে ৬ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। স্ট্যাকইয়ার্ডটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সীমানা প্রাচীর না থাকায় আশপাশের লোকজন আস্তে আস্তে জায়গা দখলে নেয়। বেদখল হয়ে যাওয়া ২.৮০ একর জায়গা পাশের জনৈক মো. হানিফ মাইজভান্ডারী, নাজিম মোল্লা, জাফর উল্লাহ, লাইনঝিরি মসজিদ, অলি উল্লাহ, সোহরাব হোসেন, মালু সওদাগর, সিরাজ মুন্সি, পেশকার মাঝি ও মো. ইউছুপ এর দখলে রয়েছে। সীমানা চিহ্নিত করণের জন্য স্মারক নং- ৪১৯/৩, তারিখ- ১৬ মে ২০১৭ইং মূলে তৎকালীন সওজ বিভাগের বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম খান লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একজন সার্ভেয়ার নিয়োগের জন্য আবেদনও করেন। এখনো সার্ভেয়ার নিয়োগ না হওয়ায় বিরোধ জটিলতায় বর্তমানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তরা বলেন, সওজ এর জায়গা আমাদের দখলে থাকলে ছেড়ে দেব।

সওজ লামা অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভূমি বিরোধটি দ্রুত সমাধান করা গেলে স্ট্যাক ইয়ার্ডের উন্নয়নে আরো বরাদ্দ পাওয়া যাবে। এতে করে বান্দরবান সড়ক বিভাগের প্রায় ২১০.৪৪ কিলোমিটার সড়ক মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কাজ করা সহজতর হবে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সজীব আহম্মেদ বলেন, স্ট্যাকইয়ার্ডটির রক্ষণাবেক্ষণে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের পাশাপাশি দ্বিতল বিশিষ্ট একটি অফিস কাম রেষ্ট হাউজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উন্নয়ন কাজের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বরাদ্দের টাকায় ইতিমধ্যে সীমানা প্রাচীরের ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী অংশে ভূমি বিরোধ থাকায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, লামা, আলীকদম ও থানচি উপজেলার সড়ক উন্নয়নে এই স্ট্যাকইয়ার্ডটি প্রয়োজন। তাই বিষয়টি সমাধানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহায়তা কামনা করছি।