নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইউএসডিএ এর অর্থায়নে এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী সহায়তায় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘রুম টু রিড’-এর উদ্যোগে ১০ মার্চ ২০১৮ সকাল ১০ টায় কক্সবাজারের সীগাল হোটেলে- School Feeding Programme in Poverty Prone Areas with Complementary Literacy and Nutrition Activities”- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো: আবু হেনা মোস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর ইমারজেন্সি কো-অর্ডিনেটর পিটার গেস্ট। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‘রুম টু রিড বাংলাদেশ’- এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রাখী সরকার। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্কুল ফীডিং প্রোগ্রাম এর প্রকল্প পরিচালক- অতিরিক্ত সচিব রাম চন্দ্র দাস। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্কুল ব্যবস্থ্াপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষানুরাগী, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার উন্নয়ন কর্মীসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি ড. মো: আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বলেন, ‘আমরা এমন একটি বিদ্যালয় গড়ে তুলতে চাই যেখানে প্রতিটি শিশু সকাল বেলা আনন্দ নিয়ে এবং মানুষের মত মানুষ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বিদ্যালয়ে আসবে। আমরা চাই প্রতিটি শিশু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, দেশপ্রেমিক ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।’ তিনি জানান যে সরকার রুম টু রিড এর সাক্ষরতা কার্যক্রমের সকল কর্মসূচির গ্রহণ করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘পিইডিপি-৪ এ রুম টু রিড লাইব্রেরি এর আদলে সকল বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বুক কর্ণার থাকবে।’ বক্তব্যের পর তিনি “স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় দারিদ্র প্রবণ অঞ্চলে খাদ্য পুষ্টি ও শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম”- এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

পরে তিনি রুম টু রিডের স্বাক্ষরতা কার্যক্রম বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করেন। শিশুর মান সম্মত শিক্ষা উন্নয়নে সংস্থাটির পাঠ দক্ষতা ও পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি তাকে উদ্বুদ্ধ করে। মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং শ্রেণিকক্ষ পাঠাগার তাকে উৎসাহিত করে।

স্বাগত বক্তব্যে রাখী সরকার বলেন, ‘রুম টু রিড বিশ্বাস করে শিক্ষিত শিশুই বিশ্ব পরিবর্তনের সূচনা। একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের গুরুত্বপূর্ন দুটি স্তর- প্রাথমিক স্তরের সকল শিশু ও মাধ্যমিক স্তরের মেয়ে শিশুর শিক্ষার মান উন্নয়নে রুম টু রিড কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সকলেই জানি একজন শিশুর মৌলিক ভিত্তি ’সাক্ষরতা দক্ষতা’ যদি অর্জিত না হয় তবে তার জীবনে দারিদ্রতা নেমে আসে এবং জীবনের স্বপ্ন পূরন বাধাগ্রস্ত হয়। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত মানসম্মত শিক্ষাপকরণের স্বল্পতা, পাঠাগারে শিক্ষার্থীর উপযোগী বই পড়ার সুযোগের অভাব এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাবই শিক্ষার্থীর সাক্ষরতা দক্ষতা বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম বাধা।’

কক্সবাজার জেলায় পরিচালিত কর্মসূচিটির পরিচিতি তুলে ধরে রুম টু রিড-এর লিটারেসি ডিরেক্টর মো: জিল্লুর রহমান সিদ্দিকি তার উপস্থাপনায় বলেন যে, রুম টু রিড পরিচালিত কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হল, প্রাথমিক স্তরের শিশুদের পড়ার দক্ষতা ও অভ্যাস বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বাধীন পাঠক হিসেবে গড়ে তোলা। এ লক্ষ্যে রুম টু রিড বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলার নির্বাচিত ১৩৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১১ টি মাদ্রাসায় বাংলা ভাষা শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও ৮৭৭ টি শ্রেণিকক্ষ পাঠাগার স্থাপন করবে।

বিশেষ অতিথি বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী এই নতুন প্রকল্পটি মাধ্যমে রুম টু রিড, ইপ্সা, মুসলিম এইড ‘সাক্ষরতা দক্ষতা উন্নয়ন, পুষ্টি ও স্কুল ফিডিং’ এর জন্য কাজ করবে। আমাদের অনেক কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হই, কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতাই আমাদের নতুন উদ্যমে কাজ করতে উৎসাহিত করে।’

রাম চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে চাই। এটি বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে কে কী করতে পারি তা বিবেচনা করে নিজেদের সাধ্যমত কাজ করবো এবং সেই সাথে আগামী প্রজন্মকে একটি উন্নত বিশ্ব উপহার দেওয়ার জন্য একযোগে কাজ করতে আহ্বান জানান।’