আমান উল্লাহ, টেকনাফ:
রোহিঙ্গাদের যত্রতত্র অবাধ বিচরণ থামাতে টেকনাফ-কক্সবাজারের প্রধান সড়কে কয়েকটি সেনাবাহিনীর অস্থায়ী চেকপোষ্ট রয়েছে। এরমধ্যে টেকনাফের দমদমিয়া ও উখিয়ার কলেজ সম্মুখস্থ অস্থায়ী চেকপোষ্ট দু’টি অন্যতম। তবুও বিভিন্ন পথ ধরে রোহিঙ্গারা দেশের আনাচে কানাচে পৌঁছে গেছে। গত ২৫ আগষ্টের পর থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে এদেশে আশ্রয় নেয়। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেওয়া হলে এখন সেই রোহিঙ্গারা বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফের জনসংখ্যার দ্বিগুন রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এসব রোহিঙ্গারা টেকনাফ ও উখিয়ার শ্রমবাজার প্রায় দখলে নিয়েছে। কিছুতের তাদের অবাধ বিরচণ থামানো যাচ্ছেনা। পাশাপাশি শ্রমিক হিসেবে স্বল্প মজুরিতে কাজ করায় বন্ধ করা যাচ্ছেনা রোহিঙ্গাদের দিয়ে শ্রমিক কাটানো থেকে। ফলে বেকায়দায় পড়েছে স্থানীয় শ্রমজীবী মানুষগুলো। এদিকে দমদমিয়া অস্থায়ী সেনাবাহিনীর চেকপোষ্ট থেকে টেকনাফমুখী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়া হলেও ভিন্ন পথে ঢুকে পড়ছে। রোহিঙ্গারা অবাধে চলার পাশাপাশি টেকনাফের প্রায় শ্রম বাজার দখলে নিয়েছে। রিক্সা, অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত টমটম, মাহিন্দ্র গাড়ীর চালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পেশায় রোহিঙ্গাদের বিচরণ লক্ষ্যনীয়। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ টেকনাফের স্থল বন্দরের অভ্যন্তরেও রোহিঙ্গারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছে। তারা স্বল্পমজুরীতে কাজ করার ফলে স্থানীয়রা দিন মজুর শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছে বিপাকে। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি দেখার কেউ নেই।

৪ মার্চ রবিবার সকাল ৭ টার দিকে দমদমিয়াস্থ প্রধান সড়কে দেখা যায়, দল বেধে রোহিঙ্গারা টেকনাফমূখী হয়ে হাঁটছে। তাদের কাছে জানতে চাইলে নুরুল আমিন নামে এক রোহিঙ্গা জানান, গাড়ীতে করে টেকনাফ স্থল বন্দরে যাওয়ার সময় আর্মির চেকপোষ্ট থেকে তাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান কিছুদুর যাওয়ার পর সেনাদের অদৃশ্য হয়ে ন্যাচার পার্ক সংলগ্ন পাহাড়ী পথ হয়ে ফের প্রধান সড়কে উঠে হেঁটে বন্দরে যাচ্ছেন। তারা প্রতেকে বন্দরের শ্রমিক হিসেবে নিয়মিত কাজ করছেন বলেও জানান এসব রোহিঙ্গারা। এসময় অনেকে ব্যাটারি চালিত টমটম ও মাহিন্দ্র গাড়ীতে উঠতে দেখা গেছে। সেনা ক্যাম্পের এক কিলোমিটারের মধ্যে দমদমিয়া বিজিবি চেকপোষ্ট থাকলেও সেখানে রোহিঙ্গাদের আটকানো বা ফিরিয়ে দিতে দেখা যায়নি। এবিষয়ে ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের নবাগত অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আসাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, সরকারের নির্দেশনা যেভাবে থাকবে সেভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এদিকে রোহিঙ্গাদের অবাধে বিচরণের ফলে যানবাহন সংকটে ভুগছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের বেশী ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে জনসংখ্যার অতিরিক্ত চাপ থাকায় দুঃচিন্তায় রয়েছে অভিভাবকরা।

শিগগিরই রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণসহ দিন মজুর হিসেবে রোহিঙ্গাদের নেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি না করলে অদূর ভবিষ্যতে স্থানীয়রা বিপাকের পাশাপাশি উখিয়া টেকনাফে দূর্ভিক্ষের আশংকা করছেন টেকনাফের সচেতনমহল।