স্বল্পোন্নত দেশসমূহের স্বার্থ রক্ষার আহ্বান

প্রকাশ: ৩ মার্চ, ২০১৮ ০৯:২৬

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ইকোসকের ‘অপারেশনাল অ্যাক্টিভিটিস্ সেগমেন্টে’র সাধারণ বিতর্কে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো: নজিবুর রহমান।

হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক:
স্বল্পোন্নত দেশসমূহের স্বার্থ রক্ষার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো: নজিবুর রহমান।

গত ১ মার্চ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ইকোসকের ‘অপারেশনাল অ্যাক্টিভিটিস্ সেগমেন্টে’র সাধারণ বিতর্কে অংশ নিয়ে এলডিসি গ্রুপের পক্ষে প্রদত্ত বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ উন্নয়ন ব্যবস্থা বা ইউএনডিএস (United Nations Development System) -এর ভূমিকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইউএনডিএস এর উন্নয়ন-অর্থায়ন রূপকল্পে এসডিজির তিনটি মাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রকেই সুষম গুরুত্বে বিবেচনার পাশাপাশি ইউএনডিএস এর দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে অধিকতর নমনীয় তহবিল বিশেষ করে নি:শর্ত অর্থ সহায়তা আরও বৃদ্ধি করতে হবে”।

মুখ্য সচিব বলেন, “স্বল্পোন্নত দেশ, ভূ-বেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ-রাষ্ট্রসমূহের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে টেকসই উন্নয়নের অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ় করতে ইউএনডিস এর অধিকতর সংশ্লিষ্টতা প্রয়োজন, বিশেষ করে উৎপাদনশীলতার সক্ষমতা বিনির্মাণ ও কাঠামোগত রূপান্তরের ক্ষেত্রে এ সহায়তা আরও বেশি দরকার”। উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে এলডিসি গ্রুপ স্ব স্ব দেশে জাতিসংঘের নতুন প্রজন্মের কান্ট্রি টিমের উপস্থিতিকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে মর্মেও মুখ্য সচিব উল্লেখ করেন।

জাতীয় পর্যায়ে ইউএনডিএস-এর শক্তিশালী ও সামর্থ্যপূর্ণ কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রতি বাংলাদেশ পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে উল্লেখ করে মুখ্য সচিব বলেন, “যেহেতু জাতিসংঘ উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামো বা উনডাফ (টঘউঅঋ) জাতিসংঘের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সদস্য দেশসমূহ ও জাতিসংঘের মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ একক হিসেবে কাজ করে, তাই এর পরিকল্পনা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে প্রণয়ন করতে হবে। এই পরিকল্পনায় যাতে জাতীয় প্রাধিকার ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্ব স্ব চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিফলিত হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে”। এলডিসি সংক্রান্ত ‘ইস্তাম্বুল ঘোষণা’ এক্ষেত্রে পথ দেখাতে পারে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো: নজিবুর রহমান।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখা এবং উনডাফ-এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থাটি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। তবে আবাসিক সমন্বয়কারীদের অবশ্যই জাতিসংঘের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বাগত দেশগুলোর নেতৃত্ব ও জাতীয় সত্ত্বাকে মেনে চলতে হবে এবং আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতার ক্ষেত্রে নিজেকে বিরত রাখতে হবে”। স্বল্পোন্নত দেশসমূহ যে সকল ব্যতিক্রমী উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীগণ সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকবেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দেশটির উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়নে গতিশীলতা বৃদ্ধি করবেন বলে মুখ্য সচিব তাঁর প্রত্যাশার কথা জানান।

নতুনভাবে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে অংশীদারিত্ব বিনির্মাণে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানান মুখ্য সচিব। জাতিসংঘ উন্নয়ন ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিবের চলমান উদ্যোগে বাংলাদেশ ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে যাবে মর্মে মুখ্য সচিব তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া জাতিসংঘ উন্নয়ন ব্যবস্থার সংস্কার সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের এই সভা আজ শেষ হল।

সম্পাদনা: ইমাম খাইর/সিবিএন