রফিক মাহমুদ, উখিয়া:
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২ দিনে ৩ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খুনের সাথে জড়িত সন্দহে ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে উখিয়া থানা পুলিশ।
জানা যায়, টেকনাফ উপজেলার মুছনি ক্যাম্পের মৃত মনির আহম্মদের ছেলে হেফাজুর রহমান (১৬), গত ২৮ ফ্রেব্রুয়ারী সকালে উখিয়ার পালংখালী জামতলী বাঘঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত তার বড় ভাই আজিজুল ইসলামের বাড়ীতে বেড়াতে আসে।
গত ১ মার্চ রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ক্যাম্পে অবস্থানরত বন্ধুদের সাথে হেফাজুর রহমান ঘুরাতে বের হলে, ওই  রাতে পূর্ব-শত্রুতার জের ধরে সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মম ভাবে খুন করে পাশ্ববর্তী কবরস্থানের পাশে তার লাশটি ফেলে দিয়ে সন্ত্রাসীরা চলে যায়।
স্থানীয় রোহিঙ্গারা কবরস্থানের পাশে লাশ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশের এস আই মিল্টন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
অপর দিকে, বৃহস্পতিবার কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তির ই-৩ ব্লকের ৭ নং পাহাড়ের আবুল হাশেমের ছেলে মোঃ তাহের (২৮)কে রাত ২ টার দিকে তার পানের দোকান থেকে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১২ নং পাহাড়ে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে নির্মম ভাবে খুন করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। খুনের পর রাস্তার পাশে লাশ ফেলে খুনিরা পালিয় যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশের এস আই বিল্লাল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে বলে তিনি প্রতিবদককে  জানিয়েছন।
এদিকে, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গার শিবিরে মোঃ শফিক (৫৫) নামে এক রোহিঙ্গাকে জবাই করে খুন করেছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার ও সাবেক স্বামী লোকমান হাকিম। বুধবার রাত ২টার দিকে বালুখালি জোনের এ-৪৮ নং ব্লকে মোঃ শফিকেরর নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খুনের ঘটানয় জড়িত তাকায় ইয়াসমিন আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাতে মোঃ শফিক ঘরেই তাকে জবাই করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার লাশ পাশ্ববর্তীএকটি ছড়ার মধ্যে ফেলে দেয় খুনিরা। সকালে তার লাশ দেখে পুলিশকে জানায় স্থানীয় রোহিঙ্গারা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ শফিকের লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ নিহত শফিকের ঘর তল্লাশী করে রক্তাক্ত পোশাক উদ্ধার করে এবং খুনের অালামত দেখতে পাই।
৩ রোহিঙ্গা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দহে উখিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
আটককৃতরা হলো, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১ ও ৯ নং ব্লকের ৮ নং পাহাড়ের নুরুল হকের ছেলে উবায়েশ (১৬), জি ব্লকের আব্দুল মালেকের ছেলে মোঃ জমির (১৮), জি ৮২ নং ব্লকের মনির আহম্মদের ছেলে শফিকুল আলম (১৮), একই ব্লকের আব্দুস শুক্কুরের ছেলে হাফিজুর রহমান (১৮), কুতুপালং ডি-ব্লকের ১০ নং পাহাড়ের জমির আহম্মদের ছেলে শামশুল আলম (৪৩), কুতুপালং ই-৩ ব্লকের ১১ নং পাহাড়ের হামিদ হোছনের ছেলে জিয়াবুল হক (২৪), কুতুপালং ৩ ব্লকের ১৩ নং পাহাড়ের আব্দুস ছালামের ছেলে মোঃ ছলিম (২৪), কুতুপালং ক্যাম্প ১ এর জি ব্লকের ৩১ নং পাহাড়ের মোঃ তাহেরের ছেলে মোঃ ইউনুছ (১৮) ও জি ব্লকের ৩৭ নং পাহাড়ের ফরিদ আহম্মদের ছেলে আমির হোসেন (১৯)।
এব্যাপারে, উখিয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ মো: আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মোঃ শফিক, হেফাজুর রহমান ও তাহের নামে ৩ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ গুলো ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।