শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:

কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালীতে দিনদুপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণের ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জনমনে দেখা দিয়েছে চরম আতংক। ঘটনার দু’দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি ঘটনার সময় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র।

স্থানীয় সূত্র জানায় পোকখালী ইউনিয়নের শীর্ষ সন্ত্রাসী তৈয়বের নেতৃত্বে একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী ১মার্চ বৃহস্পতিবার পশ্চিম পোকখালীর দিঘীর পাড় এলাকায় প্রকাশ্যে দিনদুপুরে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এসময় সন্ত্রাসীরা ওই এলাকার হাজী মোহাম্মদ হোসাইনের শিশুপুত্র, কোরআনে হাফেজ মোহাম্মদ মুছা (১৩) ও মোহাম্মদ ইসা (১১) কে এলোপাতাড়ি বেপরোয়া ও ছুরিঘাত করে। এসময় স্থানীয় লোকজন মারাত্মক আহত শিশু দু’টিকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসী তৈয়ব দুই হাতে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। পরবর্তীতে আহতদের পিতা মোহাম্মদ হোছাইন শিশুদেও চিকিৎসা দিতে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা তাদের বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সার গতি আটকে আবারো হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে।

এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় ও গুলিবিদ্ধ হয়ে মোহাম্মদ হোছাইন মারাত্মক আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্বজনেরা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারি উপ পরিদর্শক (এএসআই) লিটনুর রহমান জয়ের নেতৃত্বে পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে পাশের নাইক্ষ্যংদিয়া গ্রামে অবস্থান নেয়। এছাড়া ঘটনার পরপরই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ, ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান ও লুৎফুর রহমান লুতু ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘসময় অবস্থান করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার এবং উপস্থিত শতশত বিক্ষুব্দ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা চালান।

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই জয় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। চেয়ারম্যান রফিক আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দমনে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পোকখালী ইউনিয়নের মধ্যম পোকখালী গ্রামের মৃত নজুর পুত্র, এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারী মো. তৈয়ব এবং একই গ্রামের মৃত হানিফার পুত্র আরেক সন্ত্রাসী আক্তারের নেতৃত্বে ৭/৮ জনের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, ধর্ষন, জমি জবরদখলসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত এই সন্ত্রাসী দল। ঘটনার দিন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এবং ইতোপূর্বে দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় মোহাম্মদ হোছাইনের ওই শিশু পুত্রদের উপর নারকীয় হামলা চালায়।

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভূঁইয়া জানান, জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।