সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
গত বছরের ২৫ আগষ্ট হতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে মায়ানমারের এই পর্যন্ত দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। রোহিঙ্গা আসার ফলে স্থানীয় জনগণ নানাবিধ সমাস্যা মোকাবেলা করছে প্রতিনিয়ত। রেহিঙ্গা জনগোষ্টিকে সর্বপ্রথম খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় জনগোষ্টি। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা,দাতা গোষ্ঠি প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। রেহিঙ্গা আসার ফলে স্থানীয় জনগনের জীবনমানের উপর কি বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে তার উপর এনজিও সংস্থা কোস্ট ট্রাস্ট একটি খসড়া গবেষণা তৈরী করেছেন।
এই খসড়া গবেষনা তৈরীর আগে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্টি, স্থানীয় ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী, সুশীল সমাজ, শিক্ষক এবং ছাত্র/ছাত্রী এবং সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিকট হতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট ফরমেটের মাধ্যমে। পরবর্তীতে সংগৃহীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে সংস্থার গবেষক দল একটি খসড়া গবেষনা তৈরী করেছেন।
খসড়া গবেষনাটিকে সংযোজন এবং বিয়োজন করার জন্য উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন্ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান, শিক্ষক,সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের সাথে কক্সবাজার কলাতলী এক আবাসিক হোটেলের হলরুমে সকাল ১০টায় একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছিল।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসও-এনজিও ফোরামের কো-চেয়ার আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিএসও-এনজিও ফোরামের কো-চেয়ার এবং কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।
সভায় খসড়া গবেষনা প্রতিবেদন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন সংস্থার সহকারী পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ।
তিনি খসড়া গবেষনা প্রতিবেদনে বলেন, ইতিমধ্যে পানির প্রথম স্তর নিচে নেমে গেছে। ১০০ হেক্টর ফসলী জমি নষ্ট হয়ে গেছে। ৩৫ হেক্টর জমি দূষিত হয়ে গেছে। উখিয়া এবং টেকনাফে চালের দাম ১২-১৫% কমে গেছে রোহিঙ্গারা খোলা বাজারে চাল বিক্রির ফলে স্থানীয়রা গরু-ছাগল পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। দিনদিন স্থানীয় শ্রমিকদের শ্রম মূল্য অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। পরিবহন খরচ এবং বাসা ভাড়ার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে উপস্থিতির হার কমে গেছে।
উল্লেখ্য যে, কোস্ট গবেষনা টিমের সদস্য বরকত উল্লাহ মারুফ স্থানীয়দের ক্ষতি এবং জরুরি করণীয় প্রতিটি বিষয়ের উপর সংখ্যা তাত্ত্বিক ফলাফল দেখিয়েছেন তার উপস্থাপনায়। তার উপস্থাপনা পরবর্তী উপস্থিত সকলে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এবং নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন।
আলোচনার শুরুতে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর আহামদ বলেন, সামনে বর্ষা মৌসুম আসছে তাই পাহাড় ধ্বস হতে পারে তাই পাহাড়ের নিচে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্টিকে অন্যত্রে সরিয়ে নিতে হবে এবং পানির ছড়া এবং খাল গুলোকে বর্ষা মৌসুমের আগে খনন করতে হবে।
পালংখালী ইউপি সদস্য নুরুল আমিন বলেন, রোহিঙ্গাদের কারনে সামাজিক বনায়ন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে,পরিবেশ দূষিত হচ্ছে পরিবেশ রক্ষা করার জন্য বৃক্ষরোপন করা জরুরি। উখিয়ার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিটির সহ-সাধারন সম্পাদক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, স্থানীয় স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র/ছাত্রীদেরকে কোন ভাবে চাকরি দেওয়া যাবেনা কারন তারা তাদের নিয়মিত পড়াশোনা থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছেন এবং অর্থের লোভে নানান ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন।
আলোচনা সভায় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
খসড়া গবেষনাটিকে সমৃদ্ধ করার জন্য উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি করেন কোস্ট নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।