আব্দুর রশিদ, বাইশারী:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মুইঅং পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পশ্চিম পাশের বিলের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মোঃ আব্দুর রশিদ (৩২) নামে এক ডাকাতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারী সকাল ৮টর সময় এ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ডাকাত রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের করলিয়ামুরা গ্রামের বাসিন্দা মৃত কালামিয়ার পুত্র বলে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করেছে পুলিশ।
স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে লাশটি দেখতে পেয়ে তারা ঘটনাটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে জানান।
বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আবু মুসা জানান, সকালে তিনি খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে লাশটি পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা মৃত কালামিয়ার পুত্র বলে সনাক্ত করা হয়। প্রাথমিকভাবে সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তার শরীরের মধ্যে পিঠে ও মাথায় গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরো জানান, নিহত আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় বেশ কয়েকটি ডাকাতি ও অপহরণ মামলা রয়েছে। তিনি ধারণা করেছেন হয়ত টাকার ভাগ-বাটোয়ারা ও ঝগড়া বিবাদ নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে। এছাড়া সে অপহরণ চক্রের মূল হোতা আনোয়ার ডাকাত প্রকাশ আনাইয়া গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলে জানান। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি দা এবং একটি টর্চ লাইটের ব্যাটারী ও মাপলার আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম জানান, এলাকার লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাটি সাথে সাথে পুলিশকে অবহিত করেছেন।
স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা ক্যচিং মার্মা সহ অনেকে জানান, ২২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার রাতে তারা উক্ত এলাকায় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছে। যার ফলে পুরো উপজাতীয় গ্রামবাসী আতংকে ছিল বলে জানান।
নিহতের স্ত্রী রিনা আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার রাতে খাবার খেয়ে তার স্বামী বাড়ী হতে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। এখন সে গুলিরবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। তার দুই ছেলে এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। সে আরো জানান, তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা থাকায় ভয়ে বাড়ীতে রাত যাপন করে না।
স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোকজন জানান, গুলিবিদ্ধ আব্দুর রশিদ বাইশারী- ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কে ডাকাতি, খুন-খারাবি ও বিভিন্ন রাবার বাগান তামাক ক্ষেত থেকে লোকজনদের অপহরণ ও মুক্তিপন বানিজ্য করে আসছিল। তার অত্যাচারে নিজ এলাকার লোক ছাড়াও দূর গ্রামের লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। তার মৃত্যুতে এলাকার সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলে জানান।
নাইক্ষ্যংছড়ির ৩১ বিজিবির একটি টহল দল সুবেদার খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে ঘটনাস্থল পুরিদর্শন ও আশ পাশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছেন বলে জানান।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর শেখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং লাশটি উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।