সিবিএন ডেস্ক:
২০০১ সালের ভোটে আওয়ামী লীগ ভারতের সহযোগিতা পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “২০০১-এর ভোটে আমরা ভারতের সহযোগিতা পাইনি। তারা যাদের সহযোগিতা করেছিল, তারা কিছুই দেয়নি।”

ভারতের ভূমিকা নিয়ে ওই একবারই আক্ষেপ করার কারণ ঘটেছিল বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের এক দল সাংবাদিককে নিজ বাড়িতে আপ্যায়নের সময়ে তিনি এ কথা বলেন।

ডিসেম্বরের বিজয় বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েরই: কাদের
‘সামনেই সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশে। তাতে কি বিরোধী দল বিএনপি যোগ দেবে’ ভারতীয় সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে শেখ হাসিনার জবাব, “দেশে দলের অভাব নেই। তারা না এলেও ভোট ঠিকই হবে।”

বৃহস্পতিবার ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা এ খবর প্রকাশ করে।

তিস্তার পানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যখন প্রশ্ন তুললাম, তিস্তার পানির কী হলো, (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বললেন, বিদ্যুৎ নিন। বললাম আচ্ছা তা-ই দিন। যা পাওয়া যায় আর কী!”

বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকা আত্রেয়ী ও চূর্ণীর জল নিয়ে ওঠা অভিযোগ নস্যাৎ করে হাসিনা বলেন, “এ সবই তিস্তার পানি না দেয়ার অজুহাত!”

তবে প্রধানমন্ত্রী তিস্তা নিয়ে আশা ছাড়ছেন না বলে উল্লেখ করা প্রতিবেদনে। শেখ হাসিনার কথায়, “আবার এটাও ঠিক, উনি (মমতা) বলেননি, দেবেন না। আমরা আশা করছি দেবেন।”

আর সেই আশাতেই তিস্তার শাখা নদীগুলোতে ড্রেজিং করছে ঢাকা। যাতে জল এলে দেরি না করে তা ব্যবহার করা যায়।

আননন্দবাজার বলছে, যদিও ভারতীয় হাইকমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, তিস্তা চুক্তিই দুদেশের সম্পর্কের শেষ কথা নয়। তিস্তা নিয়ে জটিলতা একটা বাস্তবতা। কিন্তু অন্য দিকগুলোতে সহযোগিতা সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার কথায়, “পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সরকার দিল্লির সঙ্গে যে সহযোগিতা করেছে, কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেষ করা যাবে না।”

শেখ হাসিনা নিজেও বলেন, “ঢাকা-কলকাতা বাস, মৈত্রী আর বন্ধন ট্রেন হয়েছে। ট্রানজিট দিয়েছি। চট্টগ্রাম আর মংলা বন্দর ব্যবহার করতে দিয়েছি। কোনও বিষয়ে আমরা কার্পণ্য করিনি।”

তাঁর আশ্বাস, “বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। বাংলাদেশের কাছ ভারত ভারতের জায়গাতেই থাকবে, চীন চিনের জায়গায়। ভারতের বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। চীন তো নতুন বন্ধু।”

বাংলাদেশের একটি ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’-এর আমন্ত্রণে ঢাকায় আসা ভারতীয় সাংবাদিকদের হাসিনা বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনাদের ডাকিনি। প্রধানমন্ত্রী আজ আছি, কাল নাও থাকতে পারি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে ভারতের মানুষকে আমি প্রাণের বন্ধু বলে মনে করি।” মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সাংবাদিকদের অবদানও স্মরণ করেন তিনি।

শেখ হাসিনার হাসিখুশি মেজাজের কারণ কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভয়ে মুখ শুকিয়ে থাকি না আমি। ১৯ বার আক্রান্ত হয়েছি। সময় যখন আসবে মরতে হবেই।”

তার পরে হেসে আবৃত্তি করেন, “জাহান্নমের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!”

সিবিএন/খাইর