নিজস্ব প্রতিবেদক
সুশীল সমাজ, স্থানীয় গ্রিভেন্স ম্যানেজম্যান্ট কমিটি, যুব স্বেচ্ছাসেবক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, রিক্রুটিং এজেন্সি, সমাজকর্মী, ও অভিজ্ঞ প্রবাসীদের অংশগ্রহণে কক্সবাজারের বাস টার্মিনাল সংলগ্ন হর্টিকালচার সেন্টারে পরামর্শ সভার আয়োজন করে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইপসা।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত সভায় ইপসা ও প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম ও কর্মসূচী তুলে ধরেন ইপসা ফেয়ারার লেবার মাইগ্রেশন প্রকল্পের রিসার্স এন্ড লার্নিং অফিসার সৈয়দ আশরাফ উল্লাহ।
পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণকারীরা উম্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে শ্রম অভিবাসনের সাথে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের চিহ্নিত করে মোবিলাইজেশনের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। নিরাপদ অভিবাসনের সঠিক ধাপগুলো ‘বাহাদুর যাবে বহুদূর’ স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিওর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। বিদেশ ফেরত এবং ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা ও অভিবাসন বিষয়ক অভিযোগের নিষ্পত্তির বিভিন্ন কার্যক্রমের বিভিন্ন বাস্তব উদহারন সবার সামনে তুলে ধরেন উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতি ইপসা কক্সবাজারের টিমলিডার খালেদা আকতার।
সভার প্রধান অতিথি কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ নোমান হোসেন প্রিন্স বলেন, কক্সবাজারের স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। যেখানে নিরাপদ অভিবাসন, বাল্যবিবাহসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার তাৎক্ষনিক সমাধান করা হবে।
তিনি বলেন, কক্সবাজারকে মাদক বা ইয়াবার রাজধানী হিসেবে গন্য করা হচ্ছে। স্কুলগামী ছেলে মেয়েরাও তাতে জড়িয়ে পড়ছে। মাদক আজ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। অপরাধরোধে ‘লালসবুজ সংঘ’ কাজ করবে। সংগঠনটি হবে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক।
তিনি জানান, সংগঠনে কক্সবাজার সদর উপজেলার ৯ ইউনিয়নের প্রতি ওয়ার্ড থেকে ২ জন করে সদস্য নেয়া হবে। সর্বমোট সদস্য থাকবে ২০০ থেকে ২৪০ জন। তারা উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে এলাকাভিত্তিক সচেতনতামূলক সভা-সেমিনার করবে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কক্সবাজার সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হেলেনাজ তাহেরা, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা, কক্সবাজার পলিটেকনিকেল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী জ্যোতি কর খীশা, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুহাম্মদ আলী জিন্নাত ও জেলা তথ্য অফিসার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রোকৌশলী জ্যোতিকর খীসা বলেন পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
একজন বিদেশ প্রত্যাশী মানুষ যদি প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশ যায় তাহলে তিনি অন্তত ১০০ জন ব্যক্তি থেকে এগিয়ে থাকবেন।
হেলেনাজ তাহেরা বলেন, নিরাপদ অভিবাসনের সঠিক ধাপগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিকট পৌছায়তে হবে তবেই প্রকল্পের সুবিধা ও লক্ষ্য -উদ্দেশ্য অর্জিত হবে।
সাংবাদিক মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ বলেন, এনজিও হিসেবে ইপসার প্রকল্পের মেয়াদ শেষও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু আমাদের সামাজিক দায়িত্ব হলো নিরাপদ অভিবাসনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
অনুষ্ঠানের শেষপ্রান্তে সবাই নিজ নিজ উদ্যোগে নিরাপদ অভিবাসনের সঠিক ধাপগুলো সমাজের সর্বত্র পৌছে দেবার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
ইপসা ফেয়ারার লেবার মাইগ্রেশন প্রকল্পের লক্ষ্য হলো- শ্রম অভিবাসনের সাথে জড়িত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতা বৃদ্ধি করা।
উল্লেখ্য, ফেয়ারার লেবার মাইগ্রেশন প্রকল্পটির কারিগরী ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করছে প্রকাশ, ব্রিটিশ কাউন্সিল।