ডেস্ক নিউজ:

বহুল প্রতীক্ষিত চতুর্থ প্রজন্মের নেটওয়ার্ক তথা ফোরজি আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) চালু হচ্ছে। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ফোর-জি চালুর অনুমোদন পাওয়া গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটকের শীর্ষ নির্বাহীদের হাতে লাইসেন্স তুলে দেওয়া হবে। লাইসেন্স পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফোরজি চালু হবে বলে জানা গেছে। লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদও এ সময় উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
লাইসেন্স পাওয়ার পরপরই মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো ফোরজি সেবা চালু করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি আগেই জানিয়েছেন, তারা এক হাতে লাইসেন্স নেবেন, অন্য হাতে ফোরজি চালু করবেন। রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, লাইসেন্স পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ফোরজি সেবা চালু করবে রবি। বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী এরিক অস গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, আগামীকাল (সোমবার) ফোরজি সেবা চালুর জন্য আমরা আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি।
জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে লাইসেন্স গ্রহণের পরপরই ফোরজি সেবা চালু করবে বাংলালিংক। যদিও ১৩ ফেব্রুয়ারি তরঙ্গ নিলামের পরপরই অপারেটরটি জানিয়েছিল ২১ ফেব্রুয়ারি তারা ফোরজি চালু করবে। সে সময় লাইসেন্স হস্তান্তরের কথা ছিল ২০ ফেব্রুয়ারি। বিটিআরসি লাইসেন্স প্রদানের তারিখ একদিন এগিয়ে আনলে অপারেটরটিও তাদের আগের ঘোষণা থেকে সরে এসে লাইসেন্স গ্রহণের পরপরই ফোরজি সেবা চালুর বিষয়ে ঘোষণা দেয়। অপারেটরটি ফোরজি সেবা চালুর প্রথম দিনেই ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেটের বিশেষ কিছু এলাকায় এ সেবা চালু করবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটরও যেকোনও সময় ফোরজি সেবা চালু করবে বলে জানা গেছে। তবে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানাচ্ছে, ফোরজি সেবা চালুর জন্য এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয় টেলিটক। অবকাঠামো তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি বলে জানা গেছে।

এদিকে ফোরজি চালুর আগেই গত কয়েকদিন ধরে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কে খুবই সমস্যা হচ্ছে। নেটওয়ার্ক না থাকা, ঘন ঘন কলড্রপ হওয়া, কথা শোনা না যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে বেশি। এসব ঘটনা প্রযুক্তির রূপান্তরের জন্য ঘটছে নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ফোরজির উপযোগিতা বোঝানোর জন্য করা হচ্ছে তার কোনও উত্তর মেলেনি। কেউই নিজেকে উদ্ধৃত করে কথা বলতেও রাজি হননি। তবে একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এক প্রযুক্তি থেকে অন্য প্রযুক্তিতে প্রবেশের সময় এ ধরনের ঝামেলা হতে পারে। তবে তা দ্রুত সমাধানও হয়ে যাবে।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ঘোষণা দেয়, নতুন বছরে দেশবাসীর জন্য উপহার হতে যাচ্ছে ফোরজি। এই সেবার সংশোধিত গাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার পরেই এ ঘোষণা আসে।
লং টার্ম ইভোল্যুশনকে (এলটিই) চতুর্থ প্রজন্মের নেটওয়ার্ক বা ফোরজি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই নেটওয়ার্কে সেকেন্ডে ২ মেগাবাইট থেকে ৪০ মেগাবাইট পর্যন্ত গতিতে তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে। ফোরজি হলো ইন্টারনেট গতির ক্ষেত্রে বড় একটি পর্যায়। তাত্ত্বিকভাবে এর ডাউনলোড গতি ১০০ এমবিপিএস থেকে ১ জিবিপিএস পর্যন্ত হতে পারে।
অন্যদিকে যে নেটওয়ার্ক সেকেন্ডে কমপক্ষে ২০০ কিলোবাইট তথ্য স্থানান্তর করতে পারে সেটাই থ্রিজি নেটওয়ার্ক। থ্রিজিতে অনলাইন টিভি, হাইডেফিনেশন ভিডিও, ভিডিও কলিং, ভিডিও গেমসগুলো ডেভেলপ হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, একজন থ্রিজি ব্যবহারকারী ইন্টারনেটে সেকেন্ডে ১৪ মেগাবাইট গতি পেলে তিনিই ফোরজিতে ১ জিবিপিএস পর্যন্ত গতি পাবেন।