মোঃ নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে:

সাতকানিয়া উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের আলমগীর চৌধুরী পাড়া এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে শঙ্খ নদীর মাটি কেটে পাচার করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। নদীর এসব মাটি ভিটে-বাড়ি ভরাটে স্থানীয়দের বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। এতে নদী ভাঙন রোধে চলমান সিসি ব্লক ধসে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। গত শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আলমগীর চৌধুরী পাড়া এলাকায় ৮ জনের মতো শ্রমিক এক সাথে শঙ্খের মাটি কেটে ডাম্পারে তুলছে। এসময় সাংবাদিক দেখে অপেক্ষামান থাকা একটি ডাম্পার পালিয়ে যায়। এসময় শ্রমিকদের কাছে মাটি কোথায় যাচ্ছে জানতে চাইলে তারা জানান, এলাকায় জায়গা ভরাটে যাচ্ছে। সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে উপস্থিত হন নদীর মাটি পাচারে জড়িত মিনহাজুল ইসলাম রনি। মাটি কাটার বিষয়ে রনি বলেন, নদীর চরের কিছু খাস জায়গা থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি পাচারে তার সাথে কে কে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানার দরকার কি? পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, নদীর মাটি কেটে বিক্রি করছেন কালিয়াইশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার মহিউদ্দিন, সাবেক মেম্বার সোলাইমান, নাছিম চৌধুরী, ইকবাল হোসেন,

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষাকালে ওই এলাকাগুলোতে নদী ভাঙন তীব্র হয়। পাড় থেকে পানির ঢল নামলে উপজেলার ধর্মপুর, কালিয়াইশ, পুরানগড়, বাজালিয়া, খাগরিয়া, আমিলাইষ ও চরতিতে শত শত বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। বসত বাড়ি হারা এসব মানুষ অন্য জায়গায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে প্রাথমিক থাকার স্থান পায়। পরে অন্যত্রে ঝুঁপড়ি বেধে আশ্রয় নেয়। মাটি কাটার পশ্চিমে নদী ভাঙন রোধে সিসি ব্লকের কাজ চলছে। নাম প্রকাশ না করে স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ নেতারা সিন্ডিকেট করে যেভাবে নদীর মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে, এতে এই এলাকায় বর্ষাকালে নদী ভাঙন বেড়ে যাবে। মাটি কাটা বন্ধ না করলে আগামী বর্ষায় এই অঞ্চলের আশেপাশের বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। নদীর মাটি পাচারের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে কালিয়াইশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার মহিউদ্দিন বলেন, এলাকার কিছু ছেলে মাটি কেটছে। আমার নাম না বললে তাদের একটু সমস্যা হবে। আমি তাদের বলে দেব আপনার (সাংকবাদিক) সাথে যোগাযোগ করার জন্য। ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, স্থানীয় সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নাম ভাঙ্গীয়ে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা চলমান ভাঙন প্রতিরোধে বসানো সিসি ব্লকের কাছাকাছি থেকে নদীর মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। মাটি কাটা বন্ধ না করলে আগামী বর্ষায় সিসি ব্লকটি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সাতকানিয়া উপজেরা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন বলেন, আজ শনিবার সকালে কিছু লোক নদীর মাটি কেটে পাচার করার খবর পেয়ে ধর্মপুর আলমগীর চৌধুরী পাড়া এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা সাহেবকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত মাটি কাটা বন্ধ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।