চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
অবশেষে সেই বিতর্কিত লোহাগাড়ার থানা ওসি মো.শাহ জাহানকে বদলি করা হয়েছে। থানা হেফাজতে থাকা ফৌজদারী মামলার এক আসামিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেয়ার ঘটনায় তুমুল সমালোচনার মাঝে পড়েন তিনি। এর আগে টাকার বিনিময়ে আসামী ছেড়ে দেওয়ারও অভিযোগ আছে এই পুলিশ কর্মকর্তাও বিরুদ্ধে। দির্ঘদিন থেকে তার বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও অদৃশ্য কারনে বার বার পার পেয়ে যান ওসি শাহ জাহান। সর্বশেষ বহুল আলোচিত সমালোচিত সেই বিতর্কিত ওসি মো. শাহ জাহানকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলার লোহাগাড়া থানা থেকে প্রত্যাহারের পর তাকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার জেলা পুলিশ সুপার নূরেআলম মিনা স্বাক্ষরিত এ আদেশ দেন। ওই অফিস আদেশে বলা হয়, হাইকোর্ট থেকে প্রাপ্ত রিট পিটিশন নম্বর-৩৯৮/২০১৮ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা-১, এর স্মারক এর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে লোহাগাড়া থানার ওসি মো. শাহ জাহানকে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হলো। অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর করা হবে।’

এর আগে ৬ ফেরুয়ারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনশাখা-১ এর সিনিয়র সহকারী সচিব আবু হাসনাত মো. মঈনউদ্দিন স্বাক্ষরিত আদেশে লোহাগাড়া থানার ওসি শাহ জাহানকে সাত দিনের মধ্যে বদলির আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ওসি শাহজাহানের মোবাইলে বার বার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১২ জুন লোহাগাড়া থানায় তিনি ওসি হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আসে। আটকের পর ডাকাত সাজিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায়, চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, শিবির বলে থানায় ধরে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়সহ নানা ধরনের অভিযোগে তিনি সমালোচিত ছিলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ লোহাগাড়ায় পুলিশ হেফাজতে থাকা ফৌজদারী মামলার এক আসামিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেয়ার ঘটনায় লোহাগাড়ার ওসি শাহ জানকে প্রত্যাহার করতে হাইকোর্ট এক নির্দেশনা প্রদান করেন।

পরে ১ ফেরুয়ারী সে আদেশ স্থগিত চেয়ে ওসি শাহজাহান সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে গেলে ৫ ফেরুয়ারী আবেদনটির ওপর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এরপর ১৫ ফেরুয়ারী আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে হাইকোর্ট এর আদেশ বহাল রাখেন এবং ওসি শাহজাহান এর আবেদন খারিজ করে দেন।

এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহবুব আলম, লোহাগাড়া থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) হেলাল খান ও ওয়াসিমকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল আদালত।