মোহাম্মদ হোসেন,চট্টগ্রাম :

চট্টগ্রাম শহরের অনেক বাসা-বাড়ির ছাদই এখন ফুল, ফল আর সবজিতে ভরা। সেখানে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘ছাদ-বাগান’। আর এই বাগান করার জন্য ভবন-মালিকদের নিয়মিতভাবে উৎসাহ আর পরামর্শ দিয়ে আসছে। নগরীর বিভিন্ন ছাদের ভবনে এখন গড়ে উঠেছে ফুলের গাছ ও অন্যান্য গাছগাছালি বাগান। পুরো নগরীর অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ভবনে এখন দেখা মেলে বাগানের। প্রতিদিন নতুন নতুন ভবন মালিক উদ্যোক্তা হিসেবে যুক্ত হচ্ছেন। ছাদ-বাগানে সব ধরনের সবজি থেকে ফলদ গাছ জন্মানো হয়। এ যেন অট্টালিকার উপরে আরেক ভুবন। উদ্যোক্তারা বলছেন, শুরুতে শখের বসে বাগান করা। কিন্তু এখন এ বাগানগুলো বেশ অর্থের সংস্থান করছে। মানে, মাসের চাহিদার সবজির একটি অংশ মিলছে ছাদ-বাগান থেকে, যেখানে নেই কিটনাশক আতঙ্ক। একেবারে ফ্রেশ সবজি কিংবা ফল খেতে পারছেন পরিবারের সদস্যরা।

সরেজমিন দেখা যায়,নগরীর সারি সারি অট্টালিকার ছাদে, বারান্দা- ব্যালকনিতে গড়ে তুলতে হয়েছে সবুজ বাগান। বিভিন্ন ভবনের মারিক ও ভাড়াটিয়া ছাদে সবজি,ফুল ও ফলের চাষ করেছেন। ছাদে আর বেলকুনিতে যতটুকু জায়গা ব্যবহার করার মতো আছে সেখানে বাগান করেছে। ফুলের টব, অকেজো বালতি, অকেজো ড্রামে মধ্যে মৌসুমি শাক-সবজি চাষ করছে। টাটকা সবজি খেতে পারে বারো মাস জুড়ে। শহরের বাসাবাড়িতে ফুলের গাছ ও অন্যান্য গাছগাছালি লাগানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নগর জুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ছাদের বাগান। এখন নগরীর বেশি ভাগ বাসাবাড়ির ছাদ, বারান্দা ও ব্যালকনিতে দেখা যায় সবুজ গাছ আর রঙিন ফুল, ফল ও সবজির নান্দনিক শোভা। শহরের মানুষের এই প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়ার চেষ্টাকে উপজীব্য করে গড়ে উঠেছে অনেক অনেক নার্সারি। রাসায়নিক ব্যবহার না করেই বেগুন, টমেটো, বরবটি, ক্যাপসিকাম, ঝিঙা, ধুন্দল. ঢেঁড়স, পুঁইশাক, পাটশাক, চিচিঙ্গা, ধনেপাতা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, শিম, লেটুসপাতা, পুদিনাপাতা, কলমিশাক, লাউ, করলা, মরিচ, মিষ্টিকুমড়াসহ নানা জাতের সবজি চাষ হচ্ছে ছাদে। ফলের মধ্যে- পেয়ারা, আম, কলা, লেবু, বাতাবি লেবু, জলপাই, বরই, আতাফল, কামরাঙ্গা, স্ট্রবেরি, লটকন, জাম, পেঁপে, লিচু, শরিফা, সফেদা, কদবেল, ডালিম, কমলা, মালটা, আমড়াসহ দেশীয় জাতের প্রায় সব ফলেরই ছাদে চাষাবাদ হচ্ছে। বাহারি দেশি-বিদেশি ফুলের চাষ আরও অনেক বছর আগে থেকেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকে ছাদে ফুল, ফল ও সবজির মিশ্র চাষ করেও সফল হয়েছেন। অনেকেই ছাদে খরগোশ, কবুতর কিংবা কোয়েল পালনও করা যায়।

এ দিকে ২৪ মে, ২০১৭ ইং চট্টগ্রাম নগর পিতা মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নগরীর প্রতিটি ছাদে,বাড়ীর আঙ্গিনায় এবং খালি জায়গায় বাগান গড়ে তুলে তিলোত্তমা চট্টগ্রামকে সবুজে সাজিয়ে গ্রিন সিটিতে উন্নয়ন করার কর্মসূচী নগরবাসীকে বাস্তবায়ন করতে হবে। কারন সবুজ এর মাঝেই মানুষের জীবন। উন্নত পরিবেশ, পরিচ্ছন্ন নগরী, বিশ্ব মানের বাসোপযুগি মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের। তিনি আশা করেন সুন্দর মনের মানুষদের সার্বিক সহযোগিতায় সবুজ নগরী গড়ে উঠবে।