এইচ এম আবু ছিদ্দিক

কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন) এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে লেখকের ব্যক্তিগত মতামত ও মূল্যায়ন প্রসঙ্গে আজকের প্রবন্ধটি লেখা। বিশ্বসেরা দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত এলাকাজুড়েই গড়ে উঠেছে ছোট্ট একটি পর্যটন শহর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত দেশী-বিদেশী পর্যটকসহ বিশ্বের নামজাদা মানুষের পদচারণায় মুখরিত কক্সবাজার। এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহরের যাতায়ত ব্যবস্থা, থাকা-খাওয়া ও দর্শনীয় স্থানসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে জানার আগ্রহ বিশ্বজুড়ে। কক্সবাজারের প্রথম অনলাইন পোর্টাল কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন) সেসব মানুষের চাহিদা পূরণে কিছুটা হলেও সফল বলে আমার বিশ্বাস। জনকল্যাণময় এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ ৯ বছর পথ যাত্রায় নিরন্তর দীপ জ্বালিয়ে পুরো জাতির কল্যাণে আলোকসজ্জার দায়িত্ব পালন করে আসছে বলে সচেতন মহলের অভিমত।

আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে যখন কক্সবাজার নিউজ ডটকম প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল। সে সময়ে অনেকের ধারণাই ছিলনা অনলাইন পোর্টাল দেশব্যাপী প্লাটফরম সৃষ্টি করে এভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। কক্সবাজার নিউজ ডটকমের প্রকাশক ও সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী একজন ইতিহাসের ছাত্র। তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে তাঁর আগাম চিন্তা-চেতনায় প্রমাণ করে তিনি শুধু ইতিহাস নয়, ভবিষ্যৎ তথ্যপ্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়েও ভাবেন। তাঁর এই ভাবনার প্রতিফলন আজকের বহুল আলোচিত কক্সবাজার নিউজ ডটকম। যতই দিন যাচ্ছে, ততই পত্রিকাটি বিশ্বব্যাপী পাঠকের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অনলাইন পোর্টাল জগতে আধিপত্য বিস্তার করছে। সংবাদপত্র জগতে কিছু কিছু নীতিমালা সম্পাদকের অবশ্যই অনুসরণ করতে হয়। সত্যবাদিতা বা বস্তুনিষ্ঠতা বা প্রকৃত সত্য ঘটনা পরিবেশন করা অত্যাবশ্যক। প্রকৃত সত্য সংবাদ পরিবেশন করতে গেলে নিশ্চই সত্যবাদির পক্ষে, এবং মিথ্যাবাদির বিপক্ষে যাবে এটাই স্বাভাবিক।

কক্সবাজার নিউজ ডটকম বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকবার কিছু অজ্ঞান ও মিথ্যাবাদী স্বার্থন্বেষী মহলের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রতিষ্ঠানটির উপর অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারসহ বিবস্ত্র হস্তক্ষেপ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। যা কোন সুস্থ বিবেকবান মানুষের কাম্য নয়। তবে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি অশুভশক্তিকে উপেক্ষা করে সত্য প্রকাশে অদম্য যোদ্ধার মতো দায়িত্ব পালনে অবিচল রয়েছে। আশা করি পাঠক প্রিয় সিবিএন আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত রাখবে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সুবিধা ক্রমবর্ধমান প্রসারিত হওয়ায় বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।

প্রতিনিয়ত অনলাইন পত্রিকার সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে কক্সবাজার জেলায় কয়েক’শ ছাড়িয়ে গেছে। সংখ্যা যাই হোক, পাঠকের প্রতিক্রিয়া ও মূল্যায়নের উপর নির্ভর করে একটি পত্রিকার ভিত্তি রচিত হয়। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ইং কক্সবাজার নিউজ ডটকমের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে, লেখকের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন: জেলার অন্যান্য অনলাইন পত্রিকাগুলোর চেয়ে কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন) সবচেয়ে নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি লোভ-লালসা ও অশুভশক্তির ঊর্ধ্বে উঠে সত্যের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত-নিপীড়িত মজলুম মানুষের তথ্য তুলে ধরেছে। অত্যাচার-ব্যভিচার, জুলুম-নির্যাতন, ঘুষ-দূর্নীতিসহ অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কথা বলেছে। কৃত্রিম ফাঁস পরীক্ষা দিয়ে বেফাঁস সার্টিফিকেট আহরণ পরিহারসহ প্রকৃত জ্ঞানগর্ভ ভিত্তিক ও মানসম্মত শিক্ষার কথা বলেছে। বিশেষ করে বিশ্বের আলোচিত পর্যটন শহর কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সমস্যা-সম্ভাবনা ও প্রতিমুহূর্তের ঘটনা-দুর্ঘটনাসহ গুরুত্বপূর্ণ খবরাখবর মুহূর্তের মধ্যে তুলে ধরেছে। তাছাড়া দেশ-বিদেশের বহু জানা-অজানা তথ্য ও অর্থবহ বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করেছে। অবশ্য প্রতিষ্ঠানটি এই কৃতিত্ব অর্জনের পেছনে যাদের অবদান অনস্বীকার্য।

সম্মানীত সম্পাদক, লেখক, কলামিস্ট ও সাংবাদিক ভাই-বোনেরা। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয়ে পত্রিকাটি আজ সম্মানীত পাঠকের কাছে গ্রহনযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাদের সবাইকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে একগুচ্ছ শব্দমালায় গাঁথা ফুলের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। পাশাপাশি আরেকটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয়ার প্রয়োজনীতা অনুভব করছি। আপনাদের নিরলস পরিশ্রমে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানটি বয়স বাড়ার সাথে সাথেই পাঠকের প্রত্যাশা যেমন বেড়ে যায়, তেমনি পত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের ওপর দায়িত্বের প্রতি গুরুত্বভার বা কাজের চাপও বেড়ে যায়। আমার অনুরোধ ও প্রত্যাশা থাকবে, অতীতের ন্যায় প্রতিটি বিষয়ে লেখার সময় সঠিক শব্দের যথাযত প্রয়োগ ও নির্ভুল বানানের দিকে আরও একটু মনোযোগ দেয়াসহ সাধ্যমত গোছালোভাবে লেখার চেষ্টা করবেন। সবশেষে তরুণ প্রজন্মর উদ্দেশ্যে বলব, প্রকৃত ভালোবাসা কোনদিন একদিনে শেষ হয়না। ভালোবাসা হবে প্রতিদিন প্রতিটা মুহূর্তের জন্য। আবেগ দিয়ে কখনো টেকসই ভালোবাসা হয়না। প্রকৃত ভালোবাসা পেতে হলে বিবেককে কাজে লাগাতে হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারীকে কেন্দ্র করে ভালোবাসা দিবসের অজুহাতে মূল্যবান সম্পদ (ছেলে কিংবা মেয়ে) নিজের চরিত্র সর্বনাশ থেকে বিরত থাকবেন।

লেখক: কলামিস্ট ও প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, দৈনিক কক্সবাজার বানী

মোবাইল- ০১৫৫৮৩৬৩৩৪৩।