বলরাম দাশ অনুপম

দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ঐতিহাসিক শিব চতুর্দশী পূজা ও আদিনাথ মেলা। আর মৈনাক পাহাড়ের পাদদেশে বসবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মিলন মেলা। হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও এ মিলনমেলায় সামিল হবেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নর-নারী। ইতোমধ্যে সপ্তাহব্যাপী চলা এ মেলায় যোগ দিতে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন স্থান থেকে পূজারী ও পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। পূজারী আর পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠবে আদিনাথের মৈনাক পাহাড়ের চূড়া। আর বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেষে গড়ে উঠা এ পাহাড়ের চূড়ায় বসবে লাখো নর-নারীদের মিলন মেলা। হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও এ মিলনমেলায় সামিল হবেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নর-নারী।

মঙ্গলবার রাত ১১টার পর থেকে শুরু হবে আদিনাথ দর্শন। যা চলবে বুধবার পর্যন্ত। এই ২ দিন হিন্দু সম্প্রদারের সকল বয়সের নর-নারীরা ডাব, দুধ দিয়ে একে একে দেবাদিদেব মহাদেব শিবকে স্নান করানোর মধ্যে দিয়ে নিজেদের পূণ্য অর্জনের চেষ্টা করবেন। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, দেবাদিদেব মহাদেব শিবকে দর্শন ও স্নান করানোর জন্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নর-নারীদেরও ঢল নামে আদিনাথ মন্দিরে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে। তবে যারা কাজের ব্যস্ততা কিংবা টাকা-পয়সা সংকুলানের কারনে মহেশখালীর আদিনাথে গিয়ে শিব লিঙ্গকে দর্শন করতে পারেন না তারা শহরের ঘোনারপাড়াস্থ শ্রীশ্রী কৃষ্ণানন্দধাম, সাবজর্নীন স্বরসতী বাড়িতে দুধ ও ডাব দিয়ে শিবকে স্নান করাতে পারবেন।
আদিনাথ দর্শনে আসা হাজার হাজার নর-নারীদের নিরাপত্তা ও মেলাকে সুষ্ঠু এবং  সুন্দরভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে প্রশাসনের সাথে মেলা কমিটির দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। মেলায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে সাগর পথে মহেশখালী যেতে যাতে কোর পূজারী কিংবা পর্যটকদের অসুবিধা কিংবা দুর্ভোগের কবলে পড়তে না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

আদিনাথ মন্দির সংস্কার কমিটির সভাপতি শান্তি লাল নন্দী জানান, গত বছরের চাইতে এই বছর মেলায় লোক সমাগম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, এই আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি ৩শ জন নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবে বলেও জানান তিনি। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা মহেশখালীর আদিনাথ মেলায় আগত পূজারী ও পর্যটকদের যাতে কোন ধরনের অসুবিধার সৃষ্টি না হয়, বিশেষ করে যাতায়াতের বিষয় এবং নিরাপত্তার দিকে নজর দেয়ার দাবি জানান প্রশাসনের প্রতি।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মেলা কমিটির সভাপতি মো. আবুল কালাম বলেন, মেলাকে ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এই বছর স্থানীয় প্রশাসন মেলার সাতদিন অনুমতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।