নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখল করে কক্সবাজার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পল্লাইন্না কাটা থেকে সমিতি বাজার পর্যন্ত আর.সি.সি দ্বারা রাস্তা ও ড্রেইন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তায় নয়, উন্নয়নের কাজের নামে সড়কের পাশ থেকে ২০ টির মতো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন জমির মালিকরা। এতে জমির মালিকদের প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করা হচ্ছে।

কক্সবাজার পৌরসভা জানিয়েছে, ইউজিপ-৩ এর অধীনে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পল্লাইন্না কাটা থেকে সমিতি বাজার পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে আর.সি.সি দ্বারা রাস্তা ও ড্রেইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। সেখানে ২টি ব্রিজও করা হবে। ড্রেনসহ দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা পৌরসভার।

তবে, প্রকল্পভুক্ত বেশ কিছু জায়গা স্থানীয় বাসিন্দাদের বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌরসভার অধিকারভুক্ত নয় এমন জায়গাতে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা মো. মুহিববুল্লাহ। তিনি পৌরসভার চৌধুরী পাড়া এলাকার মরহুম আলহাজ্ব মৌলানা বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে। তার অভিযোগ, অপরের খতিয়ানভুক্ত জমিতে কোন ধরণের নোটিস বা অবগতি ছাড়া কাজ করছে পৌরসভা। কক্সবাজার পৌরসভা মৌজার আর.এস দাগ ৯৬২, ৯৬৪, ১১১৭, ১১১৮ এবং বি.এস দাগের ১২৯৪ খতিয়ানের মোট জমি ২ একর ৪৯ শতক জমি তাদের পিতার নামে আপটুডেট আছে। ওই জমির নামে ১৪২৪ বাংলা অবধি সরকারী খাজনাও পরিশোধিত। কিন্তু সম্প্রতি পৌরসভার উন্নয়নের নামে তাদের জমিতে রাস্তা ও ড্রেইনের কাজ করা হচ্ছে। জমির ওয়ারিশগণের বাঁধা অমান্য করে কাজ অব্যাহত রাখলে ১১ ফ্রেরুয়ারী পৌর মেয়রকে লিগ্যাল নোটিস দেয় জমির মালিক দাবীদাররা।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এডভোকেট নুরুল হকের স্বাক্ষরে প্রেরিত ওই নোটিসে তিন দিনে মধ্যে সামাধানের জন্য বলা হয়। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়।

মরহুম আলহাজ্ব মৌলানা বদরুদ্দোজা চৌধুরীর পুত্র মৌলানা মুহিববুল্লাহ জানান, রাস্তার কাজ চলাকালে পুরনো ২০ টির মত মেহগনি, আম, কাঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তাদের প্রায় ২০ শতক জায়গায় ড্রেন ও রাস্তার কাজ করা হয়েছে। এতে তাদের ক্ষতির পরিমান প্রায় ৫কোটি টাকার উপরে।

বদরুদ্দোজা চৌধুরী জামাতা শোয়েব জানান, তাদের মালিকানাধীন জমির পার্শ্ববর্তী আরো জমি আছে। সেখান থেকে কোন জমি নেয়া হয়নি। পরিকল্পিতভাবে তাদের জমির উপর দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এতে পৌর কাউন্সিলর ওমর ছিদ্দিক লালুর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে জানান।

মরহুম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর আরেক ওয়ারিশ ক্বারী সাইফুল্লাহ জানান, এলাকার উন্নয়নে নতুন রাস্তা ও নতুন ড্রেন করা হচ্ছে, তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু তাদের পৈত্রিক জমির উপর দিয়ে রাস্তা ও ড্রেন তারা মেনে নেবেনা। সরকারের জমি দরকার হলে নিয়ম অনুসরণ করে অধিগ্রহণ করবে। জমির মালিককে ক্ষতি করে কোন উন্নয়ন নয়। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমানের অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। জানতে চাওয়া হয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ছিদ্দিক লালুর কাছে। তিনি জানান, দুই পাশ থেকে মাটি নিয়ে দীর্ঘ দিনের চলাচলের রাস্তার উন্নয়ন করা হচ্ছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন কারো জমিতে কাজ করা হচ্ছেনা। এরপরও কোন অভিযোগ পেলে তা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে বলে জানান কাউন্সিলর ওমর ছিদ্দিক লালু।