লাভ জিহাদ

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০৬:৪৯

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


ইসলামের মৌল বিষয়াদি নিয়ে হাসি-তামাশা করা, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা, হেয় করা, উপহাসের উপজীব্য করা হালে একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। শায়েরে ইসলাম বা ইসলামের প্রতিক-চিহ্ন যথা চাঁদ-তারা (ক্রিসেন্ট)-গম্বুজ-ক্যালিগ্রাফি, ইসলামি লেবাস তথা পাজামা-পাঞ্জাবি-টুপি-শেরওয়ানি-বোরকা-নেকাব-হিজাব-চুল-দাড়ি, ইসলামি রসম-রেওয়াজ তথা সালাম-ফাতেহা-মাহফিল-মিলাদ, ইসলামি মনুমেন্ট-স্তম্ভ-মিনার, ইসলামি স্থাপনা যথা মসজিদ-মাদরাসা-খানকাহ্ ইত্যাদিকে প্যারোডি (চধৎড়ফু) করে বিকৃত করা, ব্যাঙ্গাতœক কার্টুন-পোস্টার-চলচ্চিত্র প্রকাশ ও প্রদর্শন করা ইত্যাদি তো হরদম চলছেই। পাশাপাশি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াত, ইসলামি পরিভাষা যথা যাকাত, শহীদ, গাজী, জিহাদ ইত্যাদিকে ভিন্নার্থক, ঋণাতœক ও বিকৃত অর্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসকল অপকর্মের মূল হোতা ইহুদিরা হলেও ত্রিত্ববাদী, পৌত্তলিক, অহিংসার ধ্বজাধারী, নাস্তিক্যবাদী সবাই এতে শামিল আছে। মজার ব্যাপার হলো- কথিত মুসলিম নামধারী শাসক-রাজা-বাদশা-আমীর-খলিফা এরাও এক্ষেত্রে কম যায় না। ক্ষেত্র বিশেষে এরা ‘মোর দ্যান পোপ’ রূপে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। এই তথাকথিত শাসকচক্র নিজেদেরকে শুধু মুসলিম নন সাচ্ছা মুসলিম পরিচয় দেন। (উদ্ধৃতি : এতো ইসলাম, ইসলাম করেন কেন ? আমার নামই তো নুরুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম। উল্লেখ্য, নামগুলো কাল্পনিক) কিন্তু ইসলামের গোড়া কাটার বেলায় এরা শুধু শিখন্ডি নয় বরং যুদ্ধে অগ্রবর্তী সেনার মতো কর্মতৎপর থাকেন। কায়েমী স্বার্থ, ক্ষমতার লোভ ও দম্ভ এবং ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে এরা বিবেকহীন, বল্গাহীন ও কান্ডজ্ঞানহীন আচরণ করতে থাকেন। স্বীয় শেকড়কে অস্বীকার করে এরা আগাছা, পরগাছায় পরিণত হয়েছেন। প্রসঙ্গতঃ আপনার জানা গল্পাংশটি আবার শুনুন। দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া চলছে আর মা তাদের ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ঝগড়ায় ব্যবহৃত গালির মধ্যে বেশি বেশি করে উচ্চারিত হচ্ছে ‘শালা তোর মায়েরে …’ এই কথাটি। তাঁরই ঔরশজাত সন্তানেরা তাঁর সম্মুখেই তাঁকে এহেন অকথ্য ভাষায় গালি দিচ্ছে শুনে মা যারপরনাই ব্যথিত হয়ে পড়েন। তখন তিনি বলেন, আচ্ছা তোদের বড় ভাই আসুক। তাকে দিয়ে তোদের এই অপরাধের জন্য শায়েস্তা করানো হবে। আরো পরে বড় ভাই এলেন। ঘটনার আদ্যপান্ত শুনে তিনি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ছোট ভাইদের শাসন করতে যেয়ে শুরুতেই বললেন, ‘শালা তোর মায়েরে …’। বেদনাহত মা বড় ছেলের বিচার প্রক্রিয়ার শুরু দেখে বললেন, ‘হয়েছে। আর লাগবে না। তোমার আর বিচার করতে হবে না।’ এই যে উল্লিখিত শব্দ কয়টি তাদের মায়ের কাছে বেদনার, কষ্টের, তার কোন বুঝজ্ঞান, কান্ডজ্ঞান, বিবেকবোধই সন্তানদের নেই। এহেন অকথ্য গালিটি বার বার বহুবার উচ্চারণ করতে করতে তা তাদের মজ্জার সাথে মিশে গিয়েছে। জন্মদাত্রীর প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ/বিবেচনা বোধ একেবারেই লোপ পেয়ে গেছে। তারা বুঝতেই পারছে না যে, তাদের কথায় মা কষ্ট পাচ্ছেন, ব্যথিত হচ্ছেন, তাঁর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

হিন্দু পৌত্তলিক অধ্যুষিত দেশ ভারতে বিভিন্ন ছল-ছুতায় মুসলমানদেরকে নির্যাতনের অসহায় শিকারে পরিণত করা বহু পুরনো কাহিনী। মুসলমানকে (যবন) নির্যাতন, অবমাননা, খুন করার জন্য হেন কোন পন্থা নেই যা তারা অবলম্বন করেনি। গো মাংস ভক্ষণ, বাবরি মসজিদ, রাম জন্মভূমি, মূর্তি অবমাননা, মোহামেডান টীমের খেলা প্রভৃতি হরেক রকম ইস্যু তৈরি করা হয় আর তার উপর ভিত্তি করে মুসলমান মারা হয়। আবার খুনের দোষ চাপানো হয় তাও মুসলমানদের উপর। উত্তেজনা ছড়িয়ে দাঙ্গা বাঁধিয়ে দেওয়া হয় আর পুলিশসহ দল বেঁধে মুসলমান হত্যা করে। আগুনে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেওয়া হয় তাদের বাড়ি-ঘর, সহায়-সম্পদ। এসব বিষয়ে আমি বহুবার লিখেছি। ভবিষ্যতে হয়তো আরো লিখতে হতে পারে।

জিহাদ একটি মুসলিম পরিভাষা। শুধু পরিভাষা নয় এটি একটি অপরিহার্য ইবাদাতও বটে। অনেকে বলে থাকেন, এটি ইসলামের ষষ্ঠ স্তম্ভ (ংরীঃয ঢ়রষষধৎ ড়ভ ওংষধস)। জিহাদ শব্দের অর্থ হলো চেষ্টা করা, সর্বাতœক প্রচেষ্টা। কোন একটি লক্ষ্য হাসিলে গৃহীত সর্ববিধ প্রয়াসের নামই জিহাদ। কোন কাজে একনিষ্ঠতা ও একাগ্রতা না থাকলে তাতে সফলতা আসে না। মনও তৃপ্ত হয় না। যিনি জিহাদে একনিষ্ঠ তাঁকে বলা হয় মুজাহিদ। বহুবচনে মুজাহিদীন। ইংরেজিতে এই শব্দটিকে ‘হলি ওয়ার’ বা পবিত্র যুদ্ধ নাম দিয়ে এর পুরো স্পিরিটকে বিকৃত করা হয়েছে। অবশ্য ওরা এই নাম দিয়েছে তাদের হীন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। যেমন, তারা তাদের ধর্মযুদ্ধের নাম দিয়েছে ক্রুসেড (ঈৎঁংধফব)। এদেশসহ আরো বহু মুসলিম-অমুসলিম দেশে জিহাদ’কে ভয়ংকর একটা কিছুরূপে উপস্থাপনের অন্যায় চেষ্টা চলছে। কলেজ-ভার্সিটি পড়–য়া ছাত্রী-ছাত্রীদের ঘরে বা মেসে কোরআন-হাদীসের বই (যেখানে স্বভাবতঃই জিহাদ বিষয়ক কথা থাকা প্রাসঙ্গিক।) পাওয়া গেলেই তাদের গণগ্রেফতার করা হচ্ছে আর বলে বেড়ানো হচ্ছে, ‘… জিহাদী বইসহ গ্রেফতার।’ তার মানে জিহাদ বিষয়ক বা জিহাদ সংশ্লিষ্ট বই পড়া বা সাথে রাখা অপরাধ ! কিন্তু পবিত্র কোরআন ও হাদীস থেকে জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ্কে পৃথক করা কি সম্ভব ? পবিত্র কোরআনে জিহাদ সম্পর্কিত আয়াত আছে ১৬৪টি এবং সহীহ্ বুখারী শরীফে ১৯৯ বার এ সম্পর্কিত বক্তব্য আছে। জিহাদ সম্পর্কিত বই পড়া যদি অপরাধ হয় তবে তা পবিত্র কোরআন ও হাদীস নিষিদ্ধ করার পর্যায়ে পড়া নয়কি ? অথচ বাংলাদেশে এসব নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমন কোন তথ্য অন্ততঃ আমার জানা নাই। আবার যদি কেউ বলেন, ‘আমরা কোরআন মানি তবে জিহাদ মানি না।’ তাদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআনের হুশিয়ারি, ‘তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস রাখ আর কিছু অংশকে অস্বীকার কর ? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্জনা ছাড়া তাদের কী প্রতিদান হতে পারে ? আর কিয়ামতের দিনে তাদেরকে কঠিনতম আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ্ সে সম্পর্কে বেখবর নন।’ ‘জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ্’ বা আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ- কথাটির সাথেই মূলতঃ ইসলামের সংশ্লিষ্টতা। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচার-প্রপাগান্ডা থেকে শুরু করে চুড়ান্ত পর্যায়ে আক্রমণকারীকে বাধা দেওয়া পর্যন্ত পুরো বিষয়টিই জিহাদ। এবং ‘দ্বীনে হক’ তথা ইসলাম’কে দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা করার এই সর্বাতœক প্রক্রিয়ায় সকল মুসলমানকে স্বীয় জান-মালসহ সম্পৃক্ত হতে হয়।

যুবক-যুবতী পরস্পরের প্রতি আকর্ষিত হয় জৈবিক প্রক্রিয়ায়। এখানে ধর্ম কোন ফ্যাক্টর নয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী যুবতী ইসলাম ধর্মাবলম্বী যুবকের প্রেমে পড়ছে, পরিণতিতে তারা উভয়ই বিয়েও করছে। এটা স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তবে কোন মুসলমান অন্য ধর্মাবলম্বীর পাণি গ্রহণ করতে পারে না ধর্মীয় বিধি নিষেধের কারণে। আর সে কারণে অন্য ধর্মাবলম্বী পাত্র বা পাত্রীকে ইসলামে দীক্ষিত হতে হয়। অর্থাৎ পাত্র-পাত্রী উভয়ই মুসলিম হলে পরে ইসলামের দৃষ্টিতে সে বিবাহ বৈধ বিবেচিত হয়। দেশে দেশে এই পদ্ধতিতে মুসলমান যুবক-যুবতী অমুসলিম যুবক-যুবতীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আসছে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে অবশ্য আহলে কিতাব বা আসমানী কিতাবধারী ব্যক্তিগন পারস্পরিক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সে প্রথা বাতিল হয়ে গেছে নানা কারণে।

হিন্দু ভারতীয়দের ‘শায়েরে ইসলাম’ বিকৃতির আর এক সংযোজন ‘লাভ জিহাদ’। ২৪ জানুয়ারী, ২০১৮, বুধবার তারিখ পত্রিকান্তরে প্রকাশিত সংবাদ : ‘২০১৬ র ডিসেম্বরে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন কেরলের বাসিন্দা অখিলা অশোকন। নিজের নাম বদলে রাখেন হাদিয়া। তার পর দক্ষিণ কেরলের কোল্লামের বাসিন্দা শাফিন জাহানকে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু, সেই বিয়েকে অস্বীকার করেন হাদিয়ার বাবা অশোকন। মামলা দায়ের করেন কেরল হাইকোর্টে। আদালতে অশোকনের অভিযোগ ছিল, মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তরকরণ করা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট -এ যোগ দিতে তাকে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় পাঠানো হতে পারে। তার মেয়ের বিয়ে বাতিলের নির্দেশ দেয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন অশোকন, আদালতে।

গত বছরের মে মাসে সেই বিয়ে বাতিল ঘোষণা করে কেরল হাইকোর্ট। তার পর সুপ্রিম কোর্টে যান হাদিয়ার স্বামী। কেরল হাইকোর্টের রায়ের পর হাদিয়ার বিয়ের ঘটনা আসলে ‘লাভ জিহাদ’ কিনা, গত অগাস্টে তা নিয়ে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। লাভ জিহাদ বিতর্কে কেরলসহ গোটা ভারতেই আলোড়ন তুলে সেই হাদিয়া মামলা। শীর্ষ আদালতে হাদিয়ার বয়ান-সহ একটি রিপোর্ট গতবছরের শেষে জমা দেয় এনআইএ। সেখানে হাদিয়া বলেন, নিজের ইচ্ছাতেই তিনি মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। মুসলিম হতে কেউ তাকে বাধ্য করেনি। তাঁর উপর কোনো জোরজবরদস্তি হয়নি। পরে সরাসরি হাদিয়ার মুখ থেকে তার বক্তব্য জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টে তার জীবনের স্বপ্ন, উচ্চাশা ও ভবিষ্যতের ভাবনার কথা জানান ২৫ বছরের হাদিয়া। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, তিনি জেনে বুঝে এই বিয়ে করেছেন, ধর্ম ত্যাগ করেছেন। তিনি জানান, মুসলিম ধর্ম পালন করে চলার পাশাপাশি স্বামীর সঙ্গে থাকার ব্যাপারেও পূর্ণ স্বাধীনতা চান। আদালত তার মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছে লাভ জিহাদ মামলায় কেরলের মেয়ে হাদিয়ার বিয়ের বিষয়ে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ- এর হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নেই। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি বেঞ্চে হাদিয়া মামলার শুনানী চলছে। এদিন শুনানীর সময় এনআইএ-কে ওই বেঞ্চ বলে, আপনারা তদন্ত করতেই পারেন তবে তাদের বিয়ে নিয়ে নয়। লাভ জিহাদ নিয়ে তদন্ত চলুক বা অন্য যেকোনো বিষয়ে তদন্ত হোক। কিন্তু তাদের বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। বিয়েকে ফৌজদারি অপরাধ, চক্রান্ত থেকে আলাদা করে দেখতে হবে। না হলে সেটা খারাপ নজির হবে। এদিন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এও বলেছে, বিয়ের পাত্র হিসেবে কে ভালো আর কে খারাপ, সেটা ঠিক করতে পারেন শুধু হাদিয়াই।

‘লাভ জিহাদ’ (খড়াব ঔরযধফ), যাকে আবার ‘রোমিও জিহাদ’ও (জড়সবড় ঔরযধফ) বলা হচ্ছে- ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মৌলিক স্তম্ভকে বিতর্কিত, হালকা, গৌণ, হাসি-ঠাট্টার বিষয়ে পরিণত করার সুপরিকল্পিত হীন চক্রান্ত। প্রখ্যাত ইংরেজ কবি ও নাট্যকার উইলিয়াম সেক্সপিয়ার রচিত ‘রোমিও জুলিয়েট’ নামীয় রোমন্টিক নাটকের পুরুষ চরিত্র রোমিও- র নামে নামকরণ করা হয়েছে রোমিও জিহাদ। আচ্ছা, সেক্সপিয়ার থেকে নিলেই যদি তাহলে জুলিয়েটকে বাদ দিয়ে কেন ? হিন্দুত্ববাদীরা এর মাধ্যমে কি একথা জানান দিতে চায় যে, মুসলিম পুরুষরা রোমিও হয়ে হিন্দু নারীদের ফুঁসলিয়ে-ভুলিয়ে-ভালিয়ে মুসলিম বানাচ্ছে। জুলিয়েটের নাম গোপন করার মানে কি এই যে, এই লাভ জিহাদে হিন্দু নারীদের কোন পার্ট-ই নেই ? তারা শুধুই মুসলিম প্রেমিক যুবকদের এক তরফা প্রেমের অসহায় শিকার ? আমরা অবশ্য হিন্দুদের অসহায়ত্বের দিকটি উপলব্ধি করতে পারি। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, মুসলমানদের কথিত ‘লাভ জিহাদ’ এর কারণে বিপুল সংখ্যক হিন্দু যুবতী মুসলিম হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা এই অসহায়ত্ব ঘোচানোর জন্য নিজেদের ঘর সামলানোর কথা না ভেবে মুসলমানদের দিকে তীর ছোড়ার কোশেশ করেন কেন ? অথচ হাদিয়া মামলায় হিন্দু নারী অখিলা অশোকন তো স্পষ্ট করেই বলেছেন, নিজের ইচ্ছাতেই তিনি মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। মুসলিম হতে কেউ তাকে বাধ্য করেনি। তাঁর উপর কোনো জোর-জবরদস্তি হয়নি। আর ভারতের সর্বোচ্চ আদালতও তার স্বীকৃতি দিয়েছে। অন্য কথায়, ভারতের মুসলিম রোমিওরা হিন্দু জুলিয়েটদের মুসলিম হতে বাধ্য করছে না। তারা বরং স্বতঃস্ফূর্তভাবেই শাশ্বত ইসলামে আকৃষ্ট হচ্ছেন হিন্দু ধর্মের অন্তঃসারশূর্ণ্যতা উপলব্ধি করতে পেরেই।

সেল : ০১৮৬৯ ৮৬৬৯০০: