স্কুল ছাত্র হত্যা চেষ্টায় আদালতে মামলা

ফারুক আহমদ,উখিয়া :

উখিয়ার সমুদ্র উপকূল ছোয়াংখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহিবুল্লাহ লাগামহীম র্দূনীর্তি, ব্যাপক অনিয়ম, শিক্ষকদের মারধর, ক্ষমতার অপব্যবহার, নৈরাজ্য ও ত্রাস কায়েমের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে পিএসসি পরীক্ষার খাতা কেলেংকারির ঘটনায় জড়িত থাকার সত্যতা প্রমাণ পাওয়ায় উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযুক্ত শিক্ষক মহিবুল্লাহের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হয়। সর্বশেষ স্কুল ছাত্র মোশারফ উল ইসলাম নামক এক কিশোরকে প্রকাশ্যে হত্যার চেষ্টা ও মারাত্মক জখম করায় এলাকার মানুষ ফুঁেস উঠেছে।উক্ত ঘটনায় বিভিন্ন অপরাধের খল নায়ক মহিবুল্লার বিরুদ্ধে কক্সবাজার জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং সিআর ৩৫১৮ তারিখ-০৫-০১-২০১৮ইং। ধারা নং ৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩২৫ ও ৩৪ দঃ বিঃ।

জানা যায়, জালিয়া পালং ইউনিয়নের ছোয়াংখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ক্ষমতার অপব্যবহার করে একের পর এক অনিয়ম ও দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে পাহাড় সমান অভিযোগ।

অভিযোগে প্রকাশ, মাস্টার মহিবুল্লাহ পিএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র বাহিরে নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে মূল্যায়ন করছিল। এমন খবর উপজেলা প্রশাসন অবগত হয়ে গত ৫ ডিসেম্বর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উখিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) একরামুল সিদ্দিক তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে ১৭৫টি বিজ্ঞান বিষয়ের খাতা জব্দ করে। এ ব্যাপারে

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নিকারুজ্জামান চৌধুরী অভিযুক্ত শিক্ষক মহিবুল্লাহর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থতা গ্রহনের সুপারিশ করে। যার স্বারক নং ২০১৭-৮৯৩ তারিখ: ০৫-১২-২০১৭ ইং। শুধু তাই নয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার পাল এক তদন্ত প্রতিবেদনে পিএসসি পরীক্ষার খাতা কেলেংকারির ঘটনায় জড়িত থাকার সত্যতা প্রমান পাওয়ায় উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনুরুপ বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহ কতৃপক্ষের বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরণ করে। যার স্বারক নং উশিঅ/উখিয়া ৩৯৫(০২)২০১৭। অভিযোগ উঠেছে তৎসময়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শহিদুল আজম মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে রহস্য জনক ভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে পূনঃ তদন্তের দায়িত্ব দেন। এব্যয়পারে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার পাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন , শিক্ষক মহিবুল্লার বিরুদ্ধে পিএসসি পরীক্ষার খাতা কেলেংকারিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অসংখ্য ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে গত ৩ ফেব্রুয়ারী মাদার বুনিয়া উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র মোশারফ উল ইসলাম(১৫)কে মটর সাইকেল চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।ওই দিন বিকেলে মাস্টার মহিবুল্লাহ মটরসাইকেল যোগে এসে ছেপটখালীস্থ মসজিদের রাস্তার পার্শ্বে পরিকল্পিত ভাবে উক্ত কিশোর ছাত্রকে লোহার রড় ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারাত্মক জখম করে হত্যার চেষ্টা চালায়। এলাকা বাসি রক্তাত্ত অবস্থায় মুমুর্ষ অবস্থায় স্কুল ছাত্র মোশারফকে উদ্বার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এব্যাপারে পিতা: মুফিজুর রহমান বাদী হয়ে আদালতে অভিযুক্ত মাস্টার মহিবুল্লাহ সহ নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া ও ২০০৩ সালে আপন চাচা মোজাহের আলমকে মারধর, ২০১১ সালে ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির তৎকালিন সভাপতি আবুল কাশেমকে হামলা, ২০১৩ সালে ছেপটখালী সিকদার মার্কেটে বিচার চলাকালে ছৈয়দ উল্লাহকে মারধর ২০১৭ সালে একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জমির উদ্দিনকেও মারধর করার অভিযোগ রয়েছে মাস্টার মহিবুল্লাহর বিরুদ্ধে। এমনকি জনশ্রুতি রয়েছে এলাকার প্রবীন শিক্ষক শরিফ আহমদ ও নাজেহাল হয়েছে তার হাতে।