মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া:

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এ রায়কে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায়। আগামীকাল যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উপজেলা দুটিতে পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) চার শতাধিক সদস্যকে মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের বাড়ি চকরিয়া-পেকুয়া সংসদীয় আসনে হওয়ায় কক্সবাজারের মধ্যে এই দুটি উপজেলাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহিৃত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।

প্রশাসনের পাশাপাশি সম্ভাব্য নাশকতা ঠেকাতে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সারা দিন প্রশসনকে সহায়তা করতে মাঠে অবস্থান করবে বলে জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলম।

৮ ফেব্রেুয়ারী ঘিরে বিএনপির অনেকেই সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে নানা মন্তব্য লেখায় তাদের টার্গেট করেও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। আজ বুধবার দুপুরে আটক করা হয়েছে চকরিয়া উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক কায়সার হামিদকে। এছাড়া আটক করা হয় কৈয়ারবিল ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মহিম উদ্দিন ও হারবাং ইউনিয়নের জামায়াত নেতা আনোয়ার আলীকে। এর আগে বিএনপি ও শিবিরের আরো পাঁচ নেতা-কর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী মো.মতিউল ইসলাম বলেন, ৮ ফেব্রেুয়ারী ঘিরে নাশকতা ঠেকাতে বুধবার থেকেই চকরিয়া-পেকুয়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো উপায়ে নাশকতা ঠেকাতে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও ব্যাটলিয়ন আনসার বাহিনীর সদস্যরা দুই উপজেলার স্টেশনসহ মহাসড়ক, আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কে অবস্থান করছে। এছাড়া নাশকতা করতে পারে এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আটক করতে অভিযান চলছে।

এএসপি মতিউল আরো বলেন, বৃহস্পতিবার চকরিয়া-পেকুয়ায় নিরাপত্তা নির্বিঘœ রাখতে বুধবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুলের নেতৃত্বে চকরিয়ায় পুলিশের ৫০ সদস্য ও পেকুয়ায় পুলিশের ৩০ সদস্য গিয়েছে।

এছাড়া র‍্যাবের কক্সবাজার ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে চকরিয়ায় ৪০ জন ও পেকুয়ায় ২০ জন র‌্যাব সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া চকরিয়ায় ২৫ ও পেকুয়ায় ২০ বিজিবি সদস্যসহ চকরিয়ায় আনসার বাহিনীর ২০ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে।

র‌্যাব ও বিজিবি পৌর শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ও প্রশাসনিক এলাকায় অবস্থানের পাশাপাশি মোবাইল ডিউটিতে থাকবে। সদর উপজেলা থেকে আসা পুলিশসহ দুই থানার দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য টহলের পাশাপাশি চকরিয়া পৌরশহর, জিদ্দাবাজার, বানিয়ারছড়া, বরইতলী নতুন রাস্তার মাথা, হারবাং, ফাঁসিয়াখালী, মালুমঘাট, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, পেকুয়ার চৌমুহনী, পেকুয়া বাজার, মগনামা ঘাট ও উপজেলার আঞ্চলিক সড়কের স্টেশনগুলোতে অবস্থান নেবে। এ সময় কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে থাকবেন।

এএসপি আরো বলেন, এই দুই উপজেলায় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী জিরো টলারেন্স নীতি অনুযায়ী চলবে। কোনোভাবেই নাশকতা করতে দেয়া হবেনা। যারাই নাশকাতর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।